২০২৬ সালের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ায় গ্যাসের দাম ৭৫% বাড়বে, এই দাবি নিয়ে নিউজমের অফিসের তীব্র প্রতিবাদ
বালাকোট অভিযান আবারো মুখ খুললেন কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী
নির্বাচনের আগে বালাকোট অভিযান চালিয়ে তা ভোটের মাঠে জয়ী হওয়ার কাজে লাগাতে চেয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি। কিন্তু প্রতিনিয়ত যেভাবে প্রশ্ন ধেয়ে আসছে বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে, তাতে যেন বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে গেছে।
ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় চালানো আত্মঘাতী হামলার জেরে পাকিস্তানের বালাকোটে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছিল ভারত। দিল্লির পক্ষ থেকে সেটাই বলা হচ্ছিল। এ-ও বলা হচ্ছিল, এতে বালাকোটের বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মারা গেছে অন্তত ৩০০-৩৫০ মানুষ।
কিন্তু দাবিগুলো নিয়ে খোদ ভারতেই বিতর্ক ওঠে। এক পর্যায়ে সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা পর্যন্ত বলতে বাধ্য হন, আমরা তো হতাহতের কথা বলিনি। কিন্তু ঘাঁটির ক্ষতি করা হয়েছে নিশ্চিতভাবে। কিন্তু পাকিস্তানের দাবির পাশাপাশি স্যাটেলাইটের ছবিতেও দেখা গেছে, ভারতের দাবিগুলো সত্য নয়।
ভারতের সরকার বিরোধী দলগুলো বলছিল, আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে বালাকোট অভিযানের নাটক করছে বিজেপি সরকার। এ বিষয়ে আবারো মুখ খুলেছেন জম্মু কাশ্মিরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ। ওই অভিযানের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি দাবি করছেন, সামনেই ভারতজুড়ে লোকসভা নির্বাচন। অথচ ফিকে হয়ে গেছে মোদি হাওয়া। আর তাই দৃষ্টি তার দিকে ফেরাতেই বালাকোট অভিযান চালানো হয়েছে।
ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, লোকসভা ভোটের মুখে দিকে তাকিয়ে এ অভিযান চালানো হয়েছে। তার ধারণামতে, ২০১৪ সালে দেশে যেমন মোদি হাওয়া বইছিল, যদি এবারো তা থাকত তাহলে বালাকোটে যুদ্ধবিমান পাঠাতে হত না। ওই অভিযান চালিয়ে মোদি সরকার এমন ভাব দেখিয়েছিল যে, পাকিস্তানকে চাইলেই হাঁটু গেঁড়ে বসতে বাধ্য করতে পারে ভারত। কিন্তু আসলে তা হয়নি। ওই অভিযানে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ফারুক আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, বিষয়টি এখন এমনই হয়ে গেছে যে, কেউ এই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে প্রশ্ন তুললে তাকে দেশবিরোধী ও পাকিস্তানপ্রেমী বলে দাবি করা হচ্ছে।
পুলওয়ামা কাণ্ডের আগে ভারতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল রামমন্দির ইস্যু। কিন্তু বালাকোটের ওই অভিযানের নিচে চাপা পড়ে যায় সে ইস্যু৷ সেই কথা মনে করিয়ে ফারুক বলেন, আজ কেউ রামমন্দির নিয়ে কথা বলছে না। অথচ বালাকোট অভিযানের আগে সবাই মন্দির মন্দির করে চিৎকার করছিল। আজ কেউ সেটি নিয়ে কথা বলছে না৷’
বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে এর আগেও বহু প্রশ্ন তুলেছেন ফারুক৷ বলেছিলেন, বালাকোটে বিমানবাহিনীর হামলা আসলে একটি রাজনৈতিক গিমিক৷ লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এ অভিযান চালানো হয়েছে। একটি বিশেষ দলের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল যাতে ভোটে সুবিধা পায় সেই জন্য এ হামলা চালানো হয়েছে।
কাশ্মিরের সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রী এর আগে বালাকোটে বিমানবাহিনীর হামলা ও তার প্রেক্ষিতে সৃষ্ট দাবির ব্যাপারে সরকারের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, অমিত শাহের কাছে কী প্রমাণ আছে যে ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এই নিয়ে প্রশ্ন তুললে দেশদ্র্রোহী বলা হচ্ছে৷ সময় এসেছে প্রশ্ন তোলার৷ তবে শুধু ফারুক আবদুল্লাহই নয়, বরং কাশ্মিরের আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি সরকারের কাছে এ অভিযান ও হতাহতের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন৷
এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি
শেয়ার করুন