আপডেট :

        মেক্সিকোতে সুপারমার্কেটে বিস্ফোরণে নিহত ২৩

        নিউহলে হ্যালোইন পার্টিতে গুলিবর্ষণ, নিহত ১

        যুক্তরাষ্ট্রে আরও এক রোগীর শরীরে মাংকিপক্স শনাক্ত, নাইজেরিয়া থেকে ফিরেছিলেন আক্রান্ত ব্যক্তি

        নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান হত্যার অভিযোগে সামরিক পদক্ষেপের হুমকি ট্রাম্পের

        লস এঞ্জেলেসে ডজার্সের বিজয় উৎসব: সোমবার অনুষ্ঠিত হবে ওয়ার্ল্ড সিরিজ প্যারেড

        লস এঞ্জেলেসে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ১, আহত ১

        মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যবিমা খরচে তীব্র উল্লম্ফনের আশঙ্কা

        মার্কিন বিমানবন্দরে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা: কর্মী সংকটে ব্যাহত বিমান চলাচল

        মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইরিশ নাগরিকদের নির্বাসন ৫০% এর বেশি বেড়েছে

        বলিউড বাদশাহর আজ ৬০ বছর, শুভ জন্মদিন শাহরুখ খান

        বলিউড বাদশাহর আজ ৬০ বছর, শুভ জন্মদিন শাহরুখ খান

        খ্রিস্টানদের হত্যার অভিযোগে নাইজেরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানোর হুমকি ট্রাম্পের

        বিরতির পর লিটনের ট্রাস্ট: বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি স্কয়াডে নতুন জীবন!

        অর্ধেকেরও বেশি ব্যাংক সাইবার হামলা প্রতিরোধে অক্ষম

        ক্যারিয়ারে সাফল্যের শক্তি

        ‘নূর ভাই বেঁচে আছেন, সে বেঁচে থাকা মৃত‍্যুর চেয়ে একটু ভালো’

        ইউক্রেনে ‘টমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে পেন্টাগন

        সালমান শাহ হত্যা মামলা: আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ভক্তদের মানববন্ধন

        ফুটবলাররা জানেন না কোচ নেই

        ‘আমার লোক, তোমার লোক’ কালচার থেকে বিএনপি-জামায়াতকে বের হয়ে আসতে হবে: আসিফ নজরুল

কোয়ারেন্টাইন ভঙ্গকারীদের ধরতে ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন’ ব্যবহার করছে রাশিয়া

কোয়ারেন্টাইন ভঙ্গকারীদের ধরতে ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন’ ব্যবহার করছে রাশিয়া

রাশিয়ায় নজরদারি কাজে ব্যবহৃত ক্যামেরা


রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন বলতে গেলে রাশিয়ার কর্তৃত্ববাদী প্রযুক্তির পথিকৃত। গত বৎসর ক্রেমলিনের এই নেতা এমন কিছু ব্যবস্থার অনুমোদন করেছেন যা রাশিয়ার জন্য একটি ‘সার্বভৌম’ ইন্টারনেট ব্যবস্থা তৈরি করতে সক্ষম হয়। এই ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল থেকে রাশিয়াকে সুরক্ষিত রাখবে।

কভিড-১৯ মহামারীটি, রাশিয়াকে নতুন এই শক্তিশালী প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। অবশ্য দেশটির গোপনীয়তা ও বাক স্বাধীনতায় সমর্থন কারীরা এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলছে, সরকার নজরদারি বৃদ্ধি করার জন্য নতুন নতুন সক্ষমতা তৈরি করছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রাশিয়ার কাছে সবচেয়ে শক্তিশালী ও সর্বাধিক প্রচারিত অস্ত্র হল ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন’ প্রযুক্তি। এই বছরের শুরুর দিকে এই নজরদারি সিস্টেমটি নিয়ে জনমনে একটি অস্বাভাবিক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তাছাড়া, গোপনীয়তার পক্ষে আইনজীবীরা অবৈধ রাষ্ট্রের এই নজরদারি করার জন্য মামলা দায়ের করেন।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অবশ্য এই সিস্টেমকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে অণুঘটক হিসেবে কাজ করে। বর্তমানে ১ লক্ষ ৭০ হাজার ক্যামেরা ও ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন’ মাধ্যমে এই ব্যবস্থাটি পরিচালিত হচ্ছে। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গত সপ্তাহে মস্কো পুলিশ কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন নিয়ম ভঙ্গ করা ২০০ জন ব্যক্তিকে ধরতে সক্ষম হয়। অবশ্য ধরা পড়া এই ব্যক্তিদের জরিমানাও গুণতে হয়েছে। রাশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা, ধরা পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে এমন লোকও ছিল যারা বাইরে বের হয়েছে মাত্র ৩০ সেকেন্ডেরও কম সময় হয়েছিল।  

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে মস্কোর পুলিশ প্রধান ওলেগ বারানভ বলেন, “রাস্তাগুলোতে নজরদারি বাড়াতে আমাদের আরও অতিরিক্ত ক্যামেরা প্রয়োজন। অবশ্য এখন আরও ৯ হাজার ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। 

তাছাড়া, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের সামাজিক নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণ করতেও ব্যভার করা হচ্ছে এই সিস্টেমটি। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবায়ানিন তার অফিসিয়াল ব্লগে একটি ঘটনার বর্ণনা করেন। সেখানে তিনি কীভাবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বেইজিং থেকে পালিয়ে আসা এক চীনা নারীকে ট্র্যাক করেন সেই বিষয়ে বর্ণনা করেন।

তবে এখনো পর্যন্ত, একটি পরীক্ষার ফলাফল শেষ পর্যন্ত নেতিবাচক হওয়ার কথা জানান। সোবায়ানিন বলেন, কর্তৃপক্ষ ওই নারীকে বিমানবন্দর বাসায় নিয়ে আসা এক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে ট্র্যাক করে। এক বন্ধু তার অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের বাইরে তার সাথে কোয়ারেন্টাইন লঙ্ঘন করে দেখা করতে আসে। কিন্তু নতুন এই প্রযুক্তি ব্যবস্থাটি বিল্ডিংয়ে বসবাসকারী ৬০০ মানুষ সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়। 

আর তাই এখন করোনাভাইরাস সংক্রান্ত কেসগুলোর ট্র্যাক করতে জিও-লোকেশনের  ব্যবহার করা হচ্ছে। মহামারী বিশেষজ্ঞরা ট্র্যাকিং এবং ডেটা ক্রাঞ্চিংকে প্রাদুর্ভাবের প্রভাব বোঝার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে ব্যভার করে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে রাশিয়া বর্তমানে একটি স্বতন্ত্র পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। এই সপ্তাহের শুরুতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিন যোগাযোগ মন্ত্রীকে এক নির্দেশ দেন। এই সপ্তাহের শেষ থেকে প্রতিটি মোবাইল অপারেটর যাতে জিওলোকেশন পদ্ধতির ব্যবহার করে প্রত্যেকটি ব্যক্তির জন্য আলাদাভাবে তথ্য সংগ্রহ করে। 

সরকারের ডিক্রি অনুসারে, এই ট্র্যাকিং সিস্টেমের অধীনে সংগৃহীত তথ্যগুলি করোনা ভাইরাস বাহকের সংস্পর্শে আসা লোকদের প্রেরণ করা হবে। আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অবহিত করা হবে, যাতে তারা ঐ নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পৃথকীকরণে রাখতে পারে।

রয়টার্স জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোবাইল ব্যবহারকারীরা কীভাবে লোকজন সামাজিক দূরত্বের সাথে মেনে চলে, তা পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করার জন্য ইতালি, জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে তাদের ডেটা ভাগ করছে। ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, মার্কিন সরকারও এই ধরণের প্রযুক্তি প্রয়োগের কথা ভাবছে। 

অনলাইন দুনিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করে এমন একটি বেসরকারী সংস্থা রোজকমসোবোদার। প্রতিষ্ঠানটির আইনজীবী সার্কিস ডারবিনিয়ান বলেন,“এখানে সবচেয়ে ভয়ানক বিষয় এই যে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারীটি একদিন শেষ হবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত এই ব্যবস্থাগুলি তখনও থাকবে”।

এদিকে, রাশিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে তার বিদ্যমান সিস্টেমগুলিও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। তবে মস্কোর ‘বিগ ব্রাদার’ নজরদারির ব্যবস্থা নিখুঁত। রাশিয়ার রাজধানীর বাইরে, ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন’ প্রযুক্তি সাধারণত বিমানবন্দর ও রেল স্টেশনগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে সরকার বলেছে যে ভাইরাসের নিদর্শনগুলি ম্যাপিং এর মাধ্যমে আরও উন্নত নজরদারি সরঞ্জাম তৈরিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।

এমন একটি পদক্ষেপ জনগণের মাঝে সামান্য বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। রাশিয়া বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসাবে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে নজরদারি ক্ষমতা বাড়িয়েছে।

/এলএ বাংলা টাইমস/

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত