রনিলই প্রেসিডেন্ট হলেন শ্রীলঙ্কার
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন দেশটির ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। গণবিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পালিয়ে যাওয়ার পর রনিল এই কদিন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া একটায় পার্লামেন্টের স্পিকার রনিলকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এর আগে বুধবার সকাল ১০টায় পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিক ভোটদান শুরু হয়।
পার্লামেন্টের মোট ২২৫টি আসনের বিপরীতে দুইজন সংসদ সদস্যের একজন পার্লামেন্টে অনুপস্থিত ছিলেন। আরেকজন পার্লামেন্টে উপস্থিত থেকেও ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন।
শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুসারে একজন প্রার্থীকে বিজয়ী হওয়ার জন্য মোট ১১২টি ভোট প্রয়োজন। সেখানে রনিল পেয়েছেন ১৩২ ভোট আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ডালাস আলাহোপ্পেরুমা ৮২টি ভোট পেয়েছেন। বামপন্থী নেতা অনুরা কুমারা দেশনায়েক ৩টি ভোট পেয়েছেন।
সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে পার্লামেন্টের সেক্রেটারি-জেনারেল ২২৩টি ভোট যাচাই-বাছাই শুরু করেন। তারপর চারটি ভোট বাতিল বলে ঘোষণা দেন সেক্রেটারি-জেনারেল। বাকি ভোটগুলো গণনার ভিত্তিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়।
ব্যালট গণনার সময় গোপনীয়তার কারণে মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর স্পিকার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ভোট গণনা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। অথবা তারা তাদের প্রতিনিধিও দিতে পারবেন।
গত মে মাসে জনগণের তীব্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন মাহিন্দা রাজাপাকসে। তারপর পরিবার নিয়ে একটি নৌঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটদানের উদ্দেশে পার্লামেন্টে উপস্থিত হন তিনি।
বড় ভাই মাহিন্দার পর গত সপ্তাহে তীব্র বিক্ষোভের মুখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তারপর শুরুতে মালদ্বীপ ও পরে সিঙ্গাপুর পালিয়ে যান তিনি।
গোতাবায়া রাজাপাকসে সিঙ্গাপুর পৌঁছানোর পর আনুষ্ঠানিকভাবে তার পদত্যাগপত্র শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের নিকট হস্তান্তর করেন। তারপর সংবিধান অনুসারে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর সাতদিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন স্পিকার।
স্পিকারের ঘোষণার পর রনিল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তার বিপরীতে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিলেও গতকাল মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তিনি। তারপরই রনিলের বিজয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়।
রনিল বিক্রমাসিংহে ১৯৯৩ সালের ৭ মে থেকে ১৯৯৪ সালের ১৯ আগস্ট, ২০০১ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে ২০০৪ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৫ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মাহিন্দা রাজাপাকসেকে পরাজিত করার পর ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপাল সিরিসেন কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।
এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/আই
[এলএ বাংলাটাইমসের সব নিউজ আরও সহজভাবে পেতে ‘প্লে-স্টোর’ অথবা ‘আই স্টোর’ থেকে ডাউনলোড করুন আমাদের মোবাইল এপ।]
শেয়ার করুন