আপডেট :

        ধর্ষকের শাস্তি সবার সামনে হোক: সোহম

        বায়ার্নের দাপটে বিদায় ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গো, পিএসজির মুখোমুখি কোয়ার্টারে

        ধর্ষণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুরাদনগরে রাজনৈতিক উত্তেজনা: কে দায়ী?

        ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি: ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি

        এশিয়া কাপের সম্ভাব্য সূচি জুলাইয়ে প্রকাশিত হবে

        সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যর্থ: জুলাই সনদ প্রকাশ করবে এনসিপি - নাহিদ ইসলাম

        রথযাত্রার উৎসবে বিপর্যয়: উড়িষ্যায় ভিড়ে পিষ্ট হয়ে ৩ মৃত, ১০ জন আহত

        মনু মিয়ার শেষ বিদায়ে অভিনেতা খায়রুল বাসারের মানবিকতার জয়

        মেসি-রোনালদো: সময় পেরিয়েও অপ্রতিরোধ্য ফুটবলের দুই কিংবদন্তি

        মুরাদনগরের অশান্তির জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দাতারা দায়ী: আসিফ মাহমুদ

        ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্পে পাকিস্তানে দুইবার কাঁপল ধরিত্রী

        হিরো আলমের যত্নে রিয়া মনি, প্রকাশ করলেন তার শারীরিক অবস্থা

        হাছিনা নয় শেখ হাসিনা নয়, তবুও বারবার বদলাচ্ছে স্কুলের নাম

        জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বাজেট: ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩২৩ কোটি টাকা

        কোকেন উৎপাদনে ঐতিহাসিক উচ্চতা, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উদ্বেগ

        ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক জোরদারে প্রস্তুত পুতিন, নতুন যোগাযোগের আভাস

        স্বর্ণের বাজারে ধস: এক মাসে সর্বনিম্ন দামে পৌঁছাল হলুদ ধাতু

        সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, ৩০০ গাড়ি অপেক্ষায়

        ট্রাম্পের দাবি: খামেনির প্রাণ বাঁচিয়েছি, ধন্যবাদ পাইনি

        এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা: কেন্দ্রে প্রবেশ নিয়ে নতুন নিয়ম

গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্বের জন্য ভারত ও চীনের তুমুল প্রতিযোগিতা

গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্বের জন্য ভারত ও চীনের তুমুল প্রতিযোগিতা

ভারতের নয়াদিল্লিতে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্বের জন্য ভারত ও চীনের তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যে শি জিনপিংয়ের এ অনুপস্থিতি তুমুল জল্পনার সৃষ্টি করে। এমনিতেই সীমান্ত বিরোধের কারণে এ দুটি দেশের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক বিরাজমান।

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন, ব্রিকস এবং জি-২০ চীন ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অনুপস্থিত থেকে শি জিনপিং মূলত এ বিষয়ে তার অসন্তোষই প্রকাশ করেছেন।

তবে শি জিনপিং এক্ষেত্রে নিজের বিপদই ডেকে এনেছেন। তার এ অনুপস্থিতিতে অন্যান্য দেশকে সুযোগ করে দিয়েছে গ্লোবাল সাউথের নেতা হিসেবে ভারতকে অগ্রাধিকার প্রদানের ব্যাপারে।

পশ্চিমা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার উপযোগী নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জোট এসসিও ও ব্রিকস উভয় সংস্থাতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ভারত ও চীন।

যদিও পূর্বে রাশিয়া পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে লড়াই করে বৈশ্বিক রাজনীতিতে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য উপযোগী ছিল, তবে বর্তমান ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া সে অবস্থান হারিয়েছে।

গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্বের জন্য ভারত ও চীনের তুমুল প্রতিযোগিতা বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ এর ফলাফল শুধুমাত্র গ্লোবাল সাউথের জন্যেই নয়, বিশ্ব ব্যবস্থার ভবিষ্যতকেও প্রভাবিত করবে।

উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্ব (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ) ইতিমধ্যেই ব্রিকসের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। সম্প্রতি ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার জোট) আরও ছয়টি উন্নয়নশীল দেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যার মধ্যে ইরানও রয়েছে।

তবে কোন একক শক্তিজোটই এককভাবে বিশ্বকে চালিত করার ক্ষমতা রাখে না। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের থিম হিসেবে ভারত সংস্কৃত বাক্যাংশ 'বসুধৈব কুটুম্বকম' ব্যবহার করেছে, যার অর্থ এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ। এর মূল অর্থ দাঁড়ায় এ পৃথিবীর সবাই একই পরিবারের অংশ। তবে চীন প্রথম এই বাক্যাংশ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপত্তি জানায়। তারা আপত্তি জানিয়ে বলে এটা কোনো স্লোগান নয়।

ঠিক এখানেই চীনা ও ভারতীয় নেতৃত্বের তফাৎ বুঝা যায়। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের বিশাল আর্থ সামাজিক বৈশিষ্ট্যের একটি হলো সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বহুত্ববাদ এবং বৈচিত্র্য।

ভারতের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদপত্র অন্যান্য উন্নত দেশসমূহের জন্য রোল মডেলস্বরূপ। বিপরীতে চীনের শাসনব্যবস্থা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।

ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি পশ্চিমা বিশ্বের জন্য বন্ধুভাবাপন্ন। ভারত উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতার আশাই করে থাকে। অন্যদিকে চীনের দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি পশ্চিমাবিরোধী।

ভারতের কূটনৈতিক দক্ষতা, জোটনিরপেক্ষতা একে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে। এ প্রেক্ষাপটে ভারতকেই যথার্থভাবে গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্বের জন্য উপযুক্ত বলে গণ্য করা যায়।

একদিকে চীন ব্রিকসকে ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায়, অন্যদিকে ভারত চায় বৈশ্বিক দারিদ্র‍্য বিমোচন এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে ব্রিকসকে ব্যবহার করতে।

অন্যদিকে নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে চীনের থেকে এগিয়ে রয়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে এ রাষ্ট্র।ভারতের যেকোনো বিষয়ে শান্তিপূর্ণ মনোভাবে চীনের আগ্রাসী বৈশিষ্ট্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তাই ভারতকে সমর্থন করছে পশ্চিমা বিশ্ব।

ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মিলিত জোট ভারতকে শক্তিশালী করেছে।

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম প্রতিরক্ষা বাজেট রয়েছে ভারতের। তাইওয়ানের প্রতি সমর্থন প্রদর্শন করে তার আন্তর্জাতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে চীনের বিরুদ্ধে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করেছে ভারত।

যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের নিরপেক্ষ অবস্থান ভারতের জন্য নেতিবাচক হিসেবে কাজ করেছে, তবে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের কাছেই গ্লোবাল সাউথের নেতা হিসেবে চীনের আগে থাকবে ভারতের নাম।

একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ বৈশ্বিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পশ্চিমা বিশ্বকে অবশ্যই ভারতের নেতৃত্বকেই স্বীকার করা উচিত।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস 

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত