ঢাকার ভেতরে যারা আছে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে ডিএমপি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
সংলাপের জন্য প্রস্তুত মস্কো
কিয়েভের সঙ্গে যে কোনো সময় শান্তিসংলাপ শুরুর জন্য প্রস্তুত রয়েছে মস্কো। মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র ও প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ এক সাক্ষাত্কারে এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরো অর্থ সাহায্য না পেয়ে গোসসা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এজন্য তিনি মার্কিন সিনেটে ভাষণ বাতিল করেছেন।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটিভিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে পেসকভ বলেন, ইউক্রেন যদি রাজি থাকে, সেক্ষেত্রে যে কোনো সময়েই শুরু হতে পারে সেই সংলাপ। আমাদের প্রেসিডেন্ট আগেও কয়েক বার বলেছেন, (ইউক্রেনে) আমাদের লক্ষ্য অর্জনই মস্কোর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর যুদ্ধের মাধ্যমেই সেই লক্ষ্য অর্জন করতে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পন্থাতেও আমাদের দ্বিপাক্ষিক বিরোধগুলোর সমাধান হতে পারে। আমরা শান্তিসংলাপ শুরুর জন্য প্রস্তুত। আমাদের দুয়ার খোলা। কিয়েভ যদি রাজি থাকে, তাহলে যে কোনো সময় এই সংলাপ শুরু হতে পারে।
২০১৫ সালে সমঝোতাচুক্তি স্বাক্ষরের পরও ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে সাংবিধানিক ভাবে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবিরের অভিযোগে ইউক্রেনের সঙ্গে কয়েক বছর টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। প্রেসিডেন্ট পুতিন এই অভিযানের নির্দেশ দেন। এই যুদ্ধ শুরুর এক সপ্তাহ পর প্রথম যুদ্ধবিরতি ও শান্তিসংলাপের উদ্যোগ নিয়েছিল বেলারুশ। দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা তাতে অংশও? নিয়েছিলেন কিন্তু কয়েকদিন পর সেটি ভেস্তে যায়। পরে জুলাই মাসে দ্বিতীয় বারের মতো সংলাপের উদ্যোগ নেয় তুরস্ক। কিন্তু সেটিরও একই পরিণতি হয়। দুই উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ডিক্রি জারি করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনায় বসবেন না তিনি এবং তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এদিকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনকে নিয়মিত অর্থ ও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে সম্প্রতি হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখা আর সম্ভব হচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে। রিপাবলিকানরা এবার হাউজে ১০ হাজার কোটি ডলারের একটি সহায়তা প্যাকেজ আটকে দিয়েছে। এতে করে ইউক্রেনকে সাহায্য করার মতো অর্থ হাতে নেই বাইডেন প্রশাসনের।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, কংগ্রেস যদি দ্রুত এই প্যাকেজ অনুমোদন না করে, তাহলে রাশিয়া লাভবান হবে। হোয়াইট হাউজ আরো বলেছে, সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে, আমাদের হাতে ইউক্রেনকে সাহায্য করার মতো অর্থও আর নেই। কংগ্রেস যদি প্যাকেজ অনুমোদন না করে, তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ইউক্রেনকে সাহায্য করা যাবে না। গত অক্টোবর বাইডেন প্রশাসন কংগ্রেসকে ১০ হাজার কোটি ডলারের প্যাকেজ অনুমোদন করতে বলে। কিন্তু হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে এখন রিপাবনিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা এই অনুমোদন দেয়নি।
সোমবার হাউজের স্পিকারকে চিঠি লেখেন জো বাইডেনের বাজেট ডিরেক্টর। তিনি লিখেছেন, আমাদের হাতে কোনো জাদুর বাক্স নেই, যা দিয়ে আমরা পরিস্থিতি সামলাতে পারি। আমাদের হাতে কোনো অর্থ নেই। আর আমাদের হাতে সময়ও নেই। এমতাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরো অর্থসাহায্য না পেয়ে হয়তো রাগই করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আর সেজন্য মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের সভা একেবারে শেষ মুহূর্তে বাতিল করেন তিনি।
জানা যায়, মঙ্গলবার মার্কিন সিনেট এবং হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল জেলেনস্কির। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেটি বাতিল করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মার্কিন সিনেটের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার। তবে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট কেন এই অংশগ্রহণ বাতিল করলেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। এর কিছুক্ষণ আগেই ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ অ্যান্ড্রি এরমাক সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য না পেলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেন হেরে যাওয়ার ‘বিশাল ঝুঁকি’ রয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন