আপডেট :

        বিলাসবহুল রেল স্টেশন পরিণত হয়েছে বিনোদনকেন্দ্রে, চলে গেছে টিকটকাদের দখলে

        ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন-স্টপ জেনোসাইড’ স্লোগানে ছাত্রলীগ

        ধান কাটার সময় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু

        নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর

        অফিস শেষে নিমন্ত্রণ রক্ষায় করনীয়

        আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো সংঘাতে নেই

        একইসঙ্গে গাছ লাগানো এবং কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা

        ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফর করছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং

        সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও জেলা পরিষদের মতো ইউনিয়ন পরিষদেও প্রশাসক নিয়োগের বিধান

        সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও জেলা পরিষদের মতো ইউনিয়ন পরিষদেও প্রশাসক নিয়োগের বিধান

        কৃষি খাতে ভর্তুকি ৮ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে

        নেতা আমানকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলেন আদালত

        ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি

        রাজধানীতে ঝড়ে দেয়াল ভেঙে নারীর মৃত্যু

        মাদারীপুরে গাড়ির ধাক্কায় অজ্ঞাতনামা এক পথচারীর মৃত্যু

        রাজধানীতে শুরু হয়েছে বজ্রসহ বৃষ্টি

        টাইটানিক সিনেমার অভিনেতা মারা গেছেন

        আবারো গাজায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

        দুটি এম্বুলেন্সের একটি নষ্ট গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

        নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউটে মোট শয্যা হবে এক হাজার

সর্বনিম্ন ২৫০ জন হজযাত্রীর কোটা নির্ধারণ

সর্বনিম্ন ২৫০ জন হজযাত্রীর কোটা নির্ধারণ

সৌদি সরকার চলতি বছর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের একটি হজ এজেন্সির জন্য সর্বনিম্ন ২৫০ জন হজযাত্রীর কোটা নির্ধারণ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে হজযাত্রীদের সৌদি আরব পর্বের খরচের পুরো টাকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু সৌদি পর্বের খরচের পুরো টাকা একসঙ্গে জমা দিতে পারেনি কোনো হজ এজেন্সি। আবার যে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে, সে টাকাও বাড়ি ভাড়ার জন্য যথাসময়ে হজ এজেন্সির আইবিএএন হিসাবে জমা হয়নি।


পাশাপাশি বেশির ভাগ হজ এজেন্সি যেমন ২৫০ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করতে পারেনি, একইভাবে এবার মোনাজ্জেম ভিসাও পাওয়া যায়নি। ফলে এবারের হজযাত্রা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা ধরনের সংকট। এ নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরোধ। হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) গত মঙ্গলবার রাতে এ নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছে।


ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হাব সূত্রে জানা গেছে, এবারই প্রথম হজযাত্রীদের সৌদি পর্বের খরচের পুরো টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ধর্ম মন্ত্রণালয় সৌদি আরবে পাঠাচ্ছে। এরপর ওই টাকা সৌদি সরকার সৌদি রিয়ালে প্রতিটি এজেন্সির আইবিএএন হিসাবে স্থানান্তর করবে। তবে এ নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। চলতি বছরের জন্য বেসরকারি পর্যায়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।


একটি প্যাকেজে (সাধারণ) খরচ ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। অন্য প্যাকেজে (বিশেষ) খরচ ধরা হয়েছে ছয় লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা। এর মধ্যে সৌদি আরব পর্বে বাড়িভাড়া, পরিবহন, মুয়াল্লিম ফি, খাওয়া ও অন্যান্য চার্জ বাবদ প্রথম প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৫ হাজার ৬৫৭ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজে এটি চার লাখ ৭৯ হাজার ৭৪০ টাকা। সৌদি পর্বের খরচের এই পুরো টাকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চেয়েছে সৌদি সরকার।


চলতি বছর ২৫৯টি হজ এজেন্সি হজযাত্রী পাঠাতে সৌদি ই-হজ সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার ৩৫টি এজেন্সিকে চিঠি দিয়ে বলেছে, সৌদি পর্বের খরচ নির্বাহ করতে এসব এজেন্সি যে পরিমাণ টাকা জমা দিয়েছে তাতে সৌদি সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা যাচ্ছে না। এতে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন অনিশ্চত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একইভাবে ৯৪টি এজেন্সিকে গত ৩ এপ্রিল চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গত ১০ মার্চ হাবের পক্ষ থেকে ধর্মমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, ঢাকায় হজ এজেন্সিগুলো টাকা জমা করেছে। সে টাকা সৌদি রিয়ালে গত ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাঠানোর কথা। কিন্তু সৌদি আরবের হজ এজেন্সির আইবিএএন হিসাবে কোনো রিয়াল জমা হয়নি। এতে নির্দিষ্ট সময়ে বাড়িভাড়া ও মুয়াল্লিম নির্বাচন করতে না পারলে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

 


ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের হজে সৌদি পর্বের খরচের জন্য প্রায় দুই হাজার ৯০০ কোটি টাকা পাঠানো প্রয়োজন। কিন্তু অর্ধেকের বেশি টাকা এখনো জমা হয়নি। ফলে যেসব এজেন্সি এখনো টাকা জমা করতে পারেনি তাদের ২১ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সৌদি পর্বের খরচের টাকা জমা দিতে এজেন্সিগুলোর সঙ্গে ছয়বার বৈঠক করেছি, বহুবার চিঠিও দিয়েছি। এরপরও পুরো টাকা জমা দেওয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘মোনাজ্জেম ভিসার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সৌদি সরকার এ বছর মোনাজ্জেম ভিসা দেয়নি। ফলে এজেন্সিগুলো তাদের ওমরাহ ভিসার মাধ্যমে বাড়িভাড়া করছে।’

 


গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মোনাজ্জেম ভিসার জন্য সংযুক্ত কাগজপত্র সত্যায়নসহ আবেদনের বিষয়ে প্রতিটি এজেন্সিকে চিঠি দেয় ঢাকার আশকোনা হজ অফিস। এরপর হজ এজেন্সিগুলো মোনাজ্জেম ভিসার জন্য কাগজপত্র সত্যায়নসহ অন্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ভিসার অপেক্ষায় আছে।

হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এজেন্সির মোনাজ্জেমরা সৌদি আরবে না যাওয়ায় সব কার্যক্রম এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি। বিগত বছরের মতো অপারেটিং এজেন্সির মোনাজ্জেমদের মাল্টিপল ভিজিট ভিসা ইস্যুর ব্যবস্থা করা জরুরি।’

তিনি বললেন, ‘হজযাত্রীদের সৌদি পর্বের খরচের টাকা সেন্ট্রালি নেওয়া হলে মক্কা হজ মিশনে জনবল বাড়াতে হবে। জনবল না বাড়িয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে টাকা নেওয়ায় হজ এজেন্সির আইবিএএন হিসাবে সৌদি রিয়াল যথাসময়ে জমা হচ্ছে না। এ ছাড়া হজযাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে প্রতি এজেন্সির জন্য ১০০ জন্য হাজি নির্ধারণ করতে হবে।’

 


সৌদি সরকার চলতি বছরের হজের জন্য বাংলাদেশসহ সব দেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা প্রথমে দুই হাজার জন নির্ধারণ করে। পরে বাংলাদেশের হজ এজেন্সির জন্য সর্বনিম্ন ২৫০ জন এবং অন্য দেশের এজেন্সির জন্য ৫০০ নির্ধারণ করা হয়। তবে বাংলাদেশের বেশির ভাগ এজেন্সি ২৫০ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করতে পারেনি।

কক্সবাজার ওভারসিজ এজেন্সির মালিক মোহাম্মদ হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগে সর্বনিম্ন হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ১০০ জন। এবার ২৫০ জন করায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমার ১৪০ জন হজযাত্রী ছিল, পরে অন্য এজেন্সিকে সঙ্গে নিয়ে ২৫০ জন করা হয়েছে। তবে একসঙ্গে একাধিক এজেন্সির কাজ করা অনেক কঠিন। আর মোনাজ্জেম ভিসা না পাওয়ায় ঠিকমতো বাড়িভাড়া করতে পারছি না।’

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সৌদি সরকার বেশি হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজযাত্রী নিতে চাচ্ছে না। যোগাযোগসহ নানা সুবিধার জন্য তারা কমসংখ্যক এজেন্সির মাধ্যমে হজযাত্রী পাঠাতে বলেছে। আগামী বছর হজযাত্রীর সংখ্যা আরো বাড়াতে পারে। এতে কোনো সমস্যা হবে না। অনেক এজেন্সির বেশিসংখ্যক হজযাত্রীকে সেবা দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত ১০টি হজ এজেন্সির স্বত্বাধিকারীরা জানান, অনেক হজ এজেন্সি শুধু হজযাত্রী পাঠায়। এ কারণে লিড এজেন্সিকে হজযাত্রীর জমা টাকা নিতে নানা ধরনের ঝামেলায় পড়তে হয়। কোনো এজেন্সি যথাসময়ে টাকা না দিলে হজযাত্রীরাও বিড়ম্বনার শিকার হন। চলতি বছর যেহেতু অনেক বেশি হজ এজেন্সির দায়িত্ব কয়েকটি এজেন্সিকে নিতে হয়েছে, তাই এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে সঠিকভাবে তদারকি করতে হবে।

ভিসার আবেদন করেননি ৮০ শতাংশ হজযাত্রী

চলতি বছর হজে যেতে বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন হজযাত্রী। এর মধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করেছেন মাত্র ১৬ হাজার। ৬২ হাজার ৮৯৫ জন বা ৮০ শতাংশ হজযাত্রী এখনো ভিসার জন্য আবেদন করেননি। যদিও ভিসা আবেদনের শেষ সময় ২৯ এপ্রিল। অন্যদিকে সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন চার হাজার ২৮৩ জন। সৌদি আরব চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করে দেয়।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত