মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রক্তপাতহীন সেনা অভ্যুত্থান
মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রক্তপাতহীন এক সেনা অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশটি শাসন করছে সেনাবাহিনী–সমর্থিত দ্য স্টেট অ্যাডিমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি)।
ওই অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সাড়ে তিন বছর পরও এখনো দেশটির বিভিন্ন স্থানে সেনাদের সঙ্গে সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীগুলো ও বিদ্রোহী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) রক্তক্ষয়ী লড়াই চলছে।
সেনা অভ্যুত্থানের নেতারা বিদ্রোহীদের অস্ত্রশস্ত্র রেখে রাজনৈতিক সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের এ আহ্বানকে এক বিস্ময়কর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হলেও দ্রুতই তা নাকচ করে দিয়েছেন বিদ্রোহীরা। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ও পিডিএফের এমন সেনাশাসনবিরোধী তৎপরতাকে জান্তা সরকার ‘সন্ত্রাসী পন্থা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের সংলাপে বসার ওই আহ্বান জানায়।
আজ শুক্রবার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউলাইট অব মিয়ানমারে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে স্টেট অ্যাডিমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল বলেছে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইরত ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সশস্ত্র সংগঠন ও পিডিএফের সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক বিষয়াদি সমাধানে দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। যাতে দলভিত্তিক রাজনীতি বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্রোহীরা জনগণের সঙ্গে হাত মেলাতে সক্ষম হয়। সশস্ত্র সন্ত্রাসী পথ বাদ দিয়ে দেশে যাতে টেকসই শান্তি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠা করা যায়, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়াই এ সংলাপের লক্ষ্য।
মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠনগুলো গত বছরের অক্টোবর থেকে সমন্বিতভাবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইতিমধ্যে দেশের এক বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।
দ্রুতই জান্তার ওই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে সু চি সরকারের নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের নিয়ে গঠিত দ্য ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)।
এনইউজির মুখপাত্র নে ফোন ল্যাট বলেছেন, জান্তার এ আহ্বান বিবেচনা করার মতো নয়।
সেনাঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক দমন–পীড়ন ও নির্যাতন শুরু হলে পিডিএফ গঠন করে এনইউজি।
মিয়ানমারের পর্যবেক্ষক সংগঠন ‘অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স’ বলেছে, দেশে অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর হাতে অন্তত ৫ হাজার ৭০৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আটক করা হয়েছে আরও প্রায় ২১ হাজার মানুষকে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের তদন্তকারীরা গত মাসে বলেছেন, সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের ঘটনা আশঙ্কাজনক মাত্রায় বেড়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন