পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় আকস্মিক বন্যায় ৫ জনের মৃত্যু, নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চলছে
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনা শেষ, ট্রাম্প ও শি’র অনুমোদনের অপেক্ষা
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্র ও চীন জানিয়েছে, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাসের জন্য একটি কাঠামোগত সমঝোতায় তারা নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে বিরোধপূর্ণ বিষয়—বিশেষত দুর্লভ খনিজ ও ম্যাগনেট রপ্তানির ওপর থাকা বিধিনিষেধ—সমাধান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
দুই পক্ষই জানিয়েছে, এখন এই পরিকল্পনা দেশদুটির রাষ্ট্রপতি—ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিং-এর অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
এই ঘোষণাটি আসে লন্ডনে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী বৈঠকের পর, যেখানে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বৈঠকের আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে চীনের দুর্লভ খনিজ রপ্তানি ছিল অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। এই খনিজ উপাদানগুলো আধুনিক প্রযুক্তি—যেমন স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও সামরিক যন্ত্রপাতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এক সাময়িক অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছায়, যেখানে তারা পারস্পরিক শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তারপর থেকেই উভয় দেশ একে অপরকে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চীন ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্লভ খনিজ ও ম্যাগনেটের রপ্তানি ধীর করেছে। অপরদিকে, চীন অভিযোগ করেছে যে যুক্তরাষ্ট্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ও সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানিতে বাধা দিয়েছে, যা তাদের শর্তভঙ্গের সমান।
লুটনিক বলেন, “আমরা জেনেভা বৈঠকে রাষ্ট্রপতিদের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছিল, সেটি বাস্তবায়নের কাঠামো নির্ধারণে সম্মত হয়েছি। এখন এটি রাষ্ট্রপতিদের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।”
এই আলোচনার প্রেক্ষাপট তৈরি হয় গত সপ্তাহে ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক ফোনালাপের মাধ্যমে, যেটিকে ট্রাম্প “খুব ভালো আলোচনা” বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
চীনের ভাইস কমার্স মিনিস্টার লি চেংগ্যাং জানান, “৫ জুনের ফোনালাপ ও জেনেভা বৈঠকের সমঝোতার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন কাঠামো চূড়ান্ত হয়েছে।”
এর আগে এই বছর ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করেন, যার সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত ছিল চীন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বেইজিংও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করে। এতে উভয় দেশের মধ্যে ‘টিট ফর ট্যাট’ শুল্ক আরোপ ১৪৫% পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
মে মাসে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই উত্তেজনা সাময়িকভাবে প্রশমিত হয়। তখন যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যে শুল্ক কমিয়ে ৩০% করে, আর চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক কমিয়ে ১০% করে এবং দুর্লভ খনিজ রপ্তানির বাধা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
তবে সেই সমঝোতার পরও উভয় দেশ পরস্পরকে অশুল্ক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ করে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার জানান, চীন এখনো দুর্লভ খনিজ ম্যাগনেট রপ্তানিতে বিধিনিষেধ তুলে নেয়নি। অপরদিকে, বেইজিং বলছে যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়ের চিপ ব্যবহার না করতে সতর্ক করেছে, সফটওয়্যার বিক্রি বন্ধ করেছে এবং চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করেছে—যা স্পষ্ট চুক্তি লঙ্ঘন।
এই সপ্তাহের আলোচনা শুরুর আগে, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয় যে, তারা দুর্লভ খনিজ রপ্তানির কিছু লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছে, তবে কোন দেশগুলোর জন্য তা নির্দিষ্ট করে বলেনি।
ট্রাম্প শুক্রবার বলেন, শি জিনপিং দুর্লভ খনিজ বাণিজ্য পুনরায় চালুর বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।
এখন এই কাঠামো চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়—যা পেলে দুই দেশ নতুন করে এক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের পথে এগোতে পারবে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন