আপডেট :

        চীনের আধিপত্য রুখতে বিরল খনিজ সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র–অস্ট্রেলিয়া ঐতিহাসিক চুক্তি

        চোখে মাইক্রোচিপ বসিয়ে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

        প্রথম ম্যাচে জয়ের পরও ফাঁকা মিরপুরের গ্যালারি

        ১০ মাসেও জুটেনি নতুন বই, বিপাকে ৫৪ শিক্ষার্থী

        পাকিস্তান-আফগানিস্তানের অস্ত্রবিরতি টিকবে?

        বাংলাদেশের আকাশে উল্কাপাত দেখা যাবে মঙ্গলবার রাতে

        দেব-রুক্মিণীর ‘বিচ্ছেদ’ নিয়ে ফের গুঞ্জন

        পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন ‘ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্র চলছে’

        সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন বিএনপি মহাসচিব

        আইএমএফের কঠোর শর্ত: নির্বাচিত সরকার ছাড়া ঋণের অর্থ নয়

        সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের নির্দেশ

        রোনালদোর স্বপ্নপূরণের পথে আরও এক ধাপ এগোলেন তার ছেলে

        ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাড়ছে টিউশন ফি

        বর্ষা নিজেই গলায় কোপ দেয় জুবায়েদকে

        চীনকে ট্রাম্পের কঠোর হুঁশিয়ারি: চুক্তি না হলে ১৫৫% শুল্কের হুমকি!

        অভিনেতা আসরানি ৮৪ বছর বয়সে মারা গেলেন, দীর্ঘদিনের অসুস্থতায় মৃত্যু

        সিরিজ হারার পর হোয়াইটওয়াশ: বাংলাদেশী ফ্যানদের চোখে অশ্রু, লাহোরে হতাশার রাত্রি

        তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে চূড়ান্ত আপিল শুনানি শুরু হয়েছে

        "অস্ত্রের দৌড়ে বিশ্বের টাকা, শান্তি বিপন্ন"

        লস এঞ্জেলেসে ‘নো কিংস ডে’র প্রতিবাদে ১৪ জন গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক গণ-আদালত ‘গণহত্যায় দোষী’ মিয়ানমার সরকার

আন্তর্জাতিক গণ-আদালত ‘গণহত্যায় দোষী’ মিয়ানমার সরকার

প্রতীকী বিচারে মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকার ও দেশটির সামরিক বাহিনীকে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে ‘দোষী সাব্যস্ত’ করেছে কুয়ালালামপুরের ‘আন্তর্জাতিক গণ-আদালত’।

১৮ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি, বিভিন্ন প্রামাণ্য দলিল ও সাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের মিলনায়তনে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

অন্তত ৩০ পৃষ্ঠা দীর্ঘ প্রাথমিক রায়ের বিভিন্ন অংশ ট্রাইব্যুনালের সাতজন বিচারক ভাগ করে পাঠ করেন। তবে রায়ের অপারেটিভ বা কার্যকর অংশ পাঠ করেন অস্ট্রেলীয় বিচারক জিল এইচ বোয়েরিঙ্গার।

সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়া এই রায়ে ১৭টি সুপারিশ করা হয়েছে। এতে মিয়ানমারের ওপর অবিলম্বে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিয়ানমারের সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিদের বিদেশে থাকা ব্যাংক হিসাব বাজেয়াপ্ত, মিয়ানমারের বাইরে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে-১. মিয়ানামার সরকার এবং আসিয়ান প্রতিনিধিরা রাখাইনের সব সশস্ত্র গ্রুপকে নিয়ে রাখাইন সীমান্ত বরাবর অঞ্চলের বেসামরিকীকরণ এবং একটি অস্ত্রবিরতির প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন ২. অং সান সু চির ঘোষিত ‘যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায়’ রোহিঙ্গাসহ সব গোষ্ঠীকে পূর্ণ নাগরিকত্ব দিতে হবে ৩. জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থাকে রাখাইনের ঘটনা তদন্তের অনুমতি দিতে হবে ৪. মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গা, কাচিন ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতি তার বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার করতে হবে। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিলসহ ২০০৮ সালের সংবিধানে সংশোধনী আনতে হবে ৫. মিয়ানমারের পার্লামেন্টে সামরিক প্রতিনিধির কোটা বাতিল করতে হবে ৬. সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশকে পূর্ণ বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে আনতে সংবিধানে নিশ্চয়তা থাকতে হবে ৭. মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের দায়মুক্তি বন্ধ করে দোষী ব্যক্তিদের বিচার শুরু করতে হবে ৮. বাস্তুচ্যুত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন এবং তাদের উপযুক্তÿক্ষতিপূরণ প্রদানে একটি স্বাধীন বেসরকারি কমিশন গঠন করতে হবে ৯. একটি ফেডারেল কাঠামোর আওতায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী যে তাদের নিজেদের স্বায়ত্তশাসন নিজেরাই নিশ্চিত করার সামর্থ্য রাখে, সেটা স্বীকার করতে হবে ১০. মিয়ানমার ও তার প্রতিবেশী দেশগুলোকে মানবিক, মানবাধিকার, ধর্মীয় সংগঠন এবং সাংবাদিকদের রাখাইন প্রদেশ, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুসহ কাচিন ও অন্য গোষ্ঠীগুলোর এলাকায় প্রবেশাধিকার দিতে হবে। ১১. উদ্বাস্তু প্রবাহকে নিরাপত্তার চশমা দিয়ে দেখার একটি প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু সেটা শুধু ত্রুটিপূর্ণ তা-ই নয়, এটা ভ্রান্তনীতি অনুসরণে উৎসাহিত করতে পারে। রায়ের এ পর্যায়ে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসহ রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী পরিচয়পত্র দেওয়ার আহ্বান জানাই। কারণ, এটা তাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার হওয়া থেকে সুরক্ষা দেবে। ১২. অভিবাসন সংকট যেটা দেখা দিয়েছে, তার দায়ভার আসিয়ান দেশগুলোকে নিতে হবে। আসিয়ান সনদ অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দিতে হবে। ১৩. বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং অন্যান্য জাতি যারা রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানিয়েছে, তাদের আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দিতে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও চীনের মতো সম্পদশালীদের এগিয়ে আসতে হবে ১৪. স্বাগত জানানো দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। আবার একই সঙ্গে মানব পাচারকারীদের বিপদ থেকে বাঁচতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমকে উৎসাহিত করতে হবে ১৫. মিয়ানমারের সরকারের ওপর আশু অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। ১৬. মিয়ানমারের সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর টার্গেটেড নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে ১৭. এ রকম ঘটনার কারণ সম্পর্কে যা বিশ্বের জানা ছিল না, তা জানতে এবং সমস্যার কারণ চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বেসরকারি কমিশন গঠন করতে হবে।

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলারসের সাবেক প্রেসিডেন্ট আর্জেন্টিনার দানিয়েল ফিয়েরেস্তেইন ওই বিচারক প্যানেলের সভাপতি। অন্যরা হলেন মালয়েশিয়ার জুলাইহা ইসমাইল, কম্বোডিয়ার আইনবিদ হেলেন জার্ভিস, অস্ট্রেলিয়ার সিডনির মেকুইয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক প্রধান জিল এইচ বোয়েরিঙ্গার, ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার আইনজীবী নুরসিয়াবানি কাতজাসুংকানা, ইরানের মানবাধিকার আইনজীবী সাদি সদর ও ইতালির সুপ্রিম কোর্ট অব ক্যাসেসনের বর্তমান সলিসিটর জেনারেল নিলো রেসি।

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত