এখনো চলছে বেকারত্ব ভাতা জালিয়াতি, প্রশ্নের মুখে ইডিডি
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
মহামারীর দুই বছর পরেও ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যজুড়ে বেকারত্ব ভাতা জালিয়াতি পূর্বের মতো চলে যাচ্ছে। এখন অপরাধীরা অন্যের পরিচয় চুরি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
মে মাসে এক প্রেস বিবৃতিতে ক্যালিফোর্নিয়া ইমপ্লয়েমেন্ট ডেভোলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট জানান যে অপরাধীরা কাগজ এবং ফ্যাক্স দরখাস্ত ব্যবহার করে লক্ষাধিক ডলার হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্ঠা করেছে। ডিপার্টমেন্টটি প্রায় ৪৭ হাজার জালিয়াতিকারীকে আটক করেছে এবং ৫৬০ মিলিয়ন ডলার চুরি হওয়া থেকে রক্ষা করেছে।
ইডিডি বলেছে,’যদিও আমরা সফলতা পাচ্ছি, তবে এখনো অপরাধীরা অন্যদের পরিচয় চুরি করছে এবং সরকারের সাথে জালিয়াতি করার চেষ্ঠা করছে।‘
সাম্প্রতিককালে পরিচয় চুরির শিকার হয়েছে এমন একজন হচ্ছে ভায়োলেটা কোরাল। জুন মাসে কোরাল ইডিডির তরফ থেকে চিঠি পাওয়া শুরু করে। কিছু সপ্তাহ পরেই ইডিডি জানায় তাঁরা কোরালের পরিচয় ব্যবহার করে জালিয়াতি করার প্রচেষ্ঠা থামিয়ে দিয়েছে। কোরাল জানায়, চিঠিতে লেখা ছিলো যে কোরাল সফলতার সাথে বেকারত্ব ভাতা পাওয়ার আবেদন সম্পন্ন করেছে। কোরাল জানায়, সে বর্তমানে কাজ করছে এবং সে কোন বেকারত্ব ভাতা পাওয়ার আবেদন করেনি।
মহামারী চলাকালীন সময়ে, ইডিডি প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার এরকম জাল আবেদনকারীদের দিয়েছে। দুই বছর পরেও এইরকম জাল আবেদন অহরহ ইডিডির কাছে আসছে।
স্যাক্রামেন্টো কাউন্টির ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি নিক জনসন বলেছেন যে ID.me যাচাইকরণের কারণে এরকম জালিয়াতির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, তবে তিনি জানান যে জালিয়াতির সংখ্যা এখনো শূন্যে পৌঁছায়নি। জনসন বলেন,’ আমরা দেখছি যে প্রায় প্রতিদিনই হাজার হাজার ভিকটিম আসছে। একমাত্র যাচাইয়ের কারণে ভিকটিমরা সামনে এগিয়ে আসছে।কিন্তু এর মানে এই নয় যে ইডিডি জালিয়াতির দৌড় শেষ।‘
জনসন জানিয়েছেন যে এখন পর্যন্ত ইডিডি জালিয়াতির ৭৮টি মামলার রায় এসেছে এবং ২৮টি মামলা এখনো চলছে। এই ৭৮টি মামলার মাধ্যমে ৭ মিলিয়ন ডলারের হদিস পাওয়া গেলোও এখনো অনেক অর্থের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
জালিয়াতির শিকার হাজার হাজার ক্যালিফোর্নিয়াবাসীর জন্য এই সংবাদ হজম করা কঠিন।
গত ১৫ মাসে রাজ্যে মোট তদন্ত, গ্রেফতার এবং উদ্ধারকৃত অর্থের পরিসংখ্যান নিম্নে দেওয়া হলোঃ
· মোট তদন্ত – ১ হাজার ৫২৫
· গ্রেফতারের সংখ্যা – ৪৬৭
· উদ্ধারকৃত অর্থ – ৩ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার
· জালিয়াতির দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির সংখ্যা – ১৬২
যদি ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন না করার পরেও আপনার কাছে ইডিডির তরফ থেকে কোন চিঠি আসে, তাহলে তা ডাকযোগে পুনরায় ফেরত দিতে পারেন বা ইডিডিকে ফোন দিয়ে জানাতে পারেন। এর পাশাপাশি আপনাকে ফেডারেল ট্রেড কমিশনের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করতে হবে।
জালিয়াতির ব্যাপারে ইডিডিকে করা প্রশ্ন এবং ইডিডির উত্তর
প্রশ্নঃ ইডিডির ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে যে ২০২২ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত ইডিডি প্রায় ১৮৩ বিলিয়ন ডলার ভাতা হিসেবে প্রদান করেছে। তাঁর মধ্যে কতটুকু অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে? আমরা ২০২১ সালে জানানো ২০ বিলিয়ন ডলারের পরিবর্তে নতুন তথ্য জানতে চাই।
ইডিডিঃ বিগত বছরেই আমরা জানিয়েছে যে প্রদানকৃত অর্থের ১০ শতাংশ অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ জালিয়াতিগুলো মহামারীর প্রথমদিকেই সম্পন্ন করা হয়েছে। শতকরা ৯০ ভাগ জালিয়াতিই বিগত সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া সরকারী বেকারত্ব ভাতা প্রোগ্রামের প্রথম কয়েকমাসেই সংগঠিত হয়েছে। আমরা এখন নতুন নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে জাল আবেদনগুলো সনাক্ত করছি এবং ঘটে যাওয়া জালিয়াতির ঘটনাগুলোর তদন্ত চালাচ্ছি।
প্রশ্নঃ এখন পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ায় এবং ক্যালিফোর্নিয়ার বাইরে কয়টি জালিয়াতির মামলার রায় এসেছে? সরকারীভাবে কয়টি মামলার রায় এসেছে?
ইডিডিঃ ক্যালিফোর্নিয়ার কাউন্টিগুলো ইডিডিকে তাদের তদন্তের তথ্য জানাতে আইনগতভাবে বাধ্য না। তবে, ২০টি কাউন্টি তাদের অগ্রগতি সম্পর্কে আমাদের জানায়। এই তথ্য আপনার আমাদের ওয়েবসাইটেই পাবেন।
প্রশ্নঃ জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থের মধ্যে ঠিক কতটুকু অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে? আমরা উদ্ধারকৃত অর্থের পরিমাণ জানতে চাচ্ছি, আটকে থাকা অর্থের পরিমাণ না।
ইডিডি: এখন পর্যন্ত আমরা ১ বিলিয়ন ডলার উদ্ধার করতে পেরেছি।
প্রশ্নঃ মে মাসে এক প্রেস বিবৃতিতে ইডিডি জানিয়েছিলো যে সংস্থাটি নতুন জালিয়াতির চেষ্ঠা প্রতিরোধ করছে এবং সম্ভাব্য ভুক্তভোগীদের সাথে যোগাযোগ করছে। এই যোগাযোগ প্রক্রিয়াটি কিভাবে সম্পন্ন হচ্ছে?
ইডিডিঃ সাধারণত, আমরা সকল আবেদনকারীর সাথে ডাকযোগে এবং ফ্যাক্সের সাহায্যে যোগাযোগ করি। এর মাধ্যমে আমরা আসল আবেদন এবং জাল আবেদনের তফাত করে থাকি। চিঠি এবং ফ্যাক্সে আমরা উল্লেখ্য করি যে অর্থ প্রদানের পূর্বে কিছু সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমরা চিঠি এবং ফ্যাক্সে ভুয়া আবেদন এবং সম্ভাব্য জালিয়াতির তথ্য জানাতে অনুরোধ করে থাকি।
ইডিডির পাঠানো নোটিশগুলি, এর জালিয়াতির বিরুদ্ধে লড়াই করার একটি দিক এবং সম্ভাব্য পরিচয় চুরির ভুক্তভোগীদের সতর্ক করতে সাহায্য করে যে প্রতারকরা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।.
এলএবাংলাটাইমস/এমডব্লিউ
শেয়ার করুন