হেয়ারস্টাইল নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগে In-N-Out-এর বিরুদ্ধে ৩০ লাখ ডলারের মামলা
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
হেয়ারস্টাইল নিয়ে বৈষম্যের শিকার হয়ে চাকরি হারিয়েছেন—এমন অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ফাস্টফুড চেইন In-N-Out-এর বিরুদ্ধে ৩ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৩৩ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ মামলা করেছেন এক প্রাক্তন কর্মী।
এলাইজা ওবেন (Elijah Obeng) নামে ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পটন সুপিরিয়র কোর্টে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি বলেন, জাতিগত বৈষম্য, হয়রানি, চাকরি থেকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত এবং হেয়ারস্টাইল নিয়ে অপমানজনক আচরণের শিকার হয়েছেন, যার ফলে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, In-N-Out-এর পোশাকবিধি অনুযায়ী কর্মীদের চুল কোম্পানি প্রদত্ত হ্যাটের ভেতর ঢেকে রাখতে হয় এবং পুরুষ কর্মীদের ক্লিন শেভড থাকতে বলা হয়। কিন্তু এলাইজার চুল বড় হলে, ম্যানেজমেন্ট তাকে হেয়ারস্টাইল পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়, যাতে হ্যাটের নিচে তা পুরোপুরি ঢুকে যায়।
ওবেন জানান, তিনি নিয়ম মানার জন্য চুল ব্রেইড (বেণী করা) করে নেন, কিন্তু তারপরও তাকে সাইডবার্নস (কানের পাশে প্রাকৃতিক চুলের রেখা) কাটতে বলা হয়। তিনি বলেন, এটি ছিল তার স্বাভাবিক হেয়ারস্টাইলের অংশ, এবং এ নির্দেশনা ছিল বর্ণবৈষম্যমূলক ও অপমানজনক।
তিনি আরও বলেন, এরপর থেকেই তাকে অন্যদের চেয়ে বেশি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ, ছোটখাটো ভুলে বারবার শাসন এবং পদোন্নতির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হতে থাকে। ২৫ মে, ২০২৪ সালের দিকে তার সুপারভাইজার তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় এবং শেভ করে ফিরে আসতে বলেন—যদিও তার মুখে কোনো অতিরিক্ত দাড়ি ছিল না।
এই অপমানজনক ঘটনাটি তার সহকর্মীরাও প্রত্যক্ষ করেন। ওবেন বলেন, তিনি নিজেকে “সবার সামনে অপমানিত” মনে করেছিলেন। এর কয়েকদিন পর তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তিনি দাবি করেন, তাকে শুধু তার প্রাকৃতিক হেয়ারস্টাইল এবং বৈষম্যমূলক নিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে বরখাস্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, In-N-Out কোম্পানি দাবি করেছে, ওবেনকে চাকরি থেকে ছাড়ার পেছনে তার আগের সতর্কবার্তাগুলোই কারণ। তবে মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কোম্পানির এই আচরণ ক্যালিফোর্নিয়ার ‘CROWN Act’ লঙ্ঘন করেছে। এই আইন অনুযায়ী, কোনো কর্মীকে তার হেয়ারস্টাইল বা হেয়ার টেক্সচারের ভিত্তিতে বৈষম্যের শিকার করা অবৈধ।
In-N-Out এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি, কারণ মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। তবে এই ঘটনা নিয়ে হেয়ারস্টাইল ভিত্তিক বৈষম্য ও কর্মক্ষেত্রে জাতিগত সমতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন