ইসরায়েল-ইরান ফের সংঘাতে: দুই দেশে নিহত অন্তত ২৬, যুদ্ধ জোরালো হচ্ছে
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন ঢেউ—ইসরায়েল ও ইরান পরস্পরকে লক্ষ্য করে ফের ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে, যার ফলে দুই দেশেই বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষ একে অপরকে গুরুতর সামরিক ও পারমাণবিক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে একাধিক হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, তারা এই অভিযান "যতদিন প্রয়োজন চলবে", ততদিন চালিয়ে যাবে।
ইসরায়েলে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি
ইরান থেকে ২০০টির বেশি রকেট ইসরায়েল লক্ষ্য করে ছোড়া হয়, যার ফলে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন, এদের মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩৮০ জন, যার মধ্যে ৯ জনের অবস্থা গুরুতর। তেলআবিবের কাছে ব্যাট ইয়াম শহরের একটি আবাসিক ভবনে রকেট সরাসরি আঘাত করে, এতে চারজন নিহত হন এবং ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
ইরানে হামলা ও বেসামরিক হতাহত
ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়ে শনিবার রাতে ইরানের ৮০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, যার মধ্যে ছিল “পারমাণবিক কমান্ড সেন্টার”, গবেষণা কেন্দ্র ও জ্বালানি মজুদ স্থাপনা। ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অধিকাংশ নিহত ও আহত হচ্ছেন নারী ও শিশু।
দিনে প্রথমবার হামলা অব্যাহত
এ সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম দিনের বেলাতেও উভয়পক্ষ হামলা অব্যাহত রাখে। ইসরায়েল তাদের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে থাকতে বলে সতর্ক করে। একই সময়ে, তেহরানের বাসিন্দারা জোরালো বিস্ফোরণ অনুভব করেন।
গ্যাসক্ষেত্রে ইসরায়েলের হামলা
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাস ক্ষেত্র ইরানের সাউথ পার্স, যেটি কাতারের সাথে ভাগাভাগি করা একটি ফিল্ড, সেটিতে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গালফ অঞ্চলের এক কর্মকর্তা একে “দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক” আখ্যা দিয়েছেন। CNN নিশ্চিত করেছে যে এই অঞ্চলে বিশাল আগুন ও ধোঁয়ার কুন্ডলি উঠতে দেখা গেছে।
দীর্ঘমেয়াদি অভিযান চালাবে ইসরায়েল
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার এক টিভি ভাষণে বলেন, "এই যুদ্ধ চলবে যতদিন প্রয়োজন, ইরানের পারমাণবিক হুমকি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত।" হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানান, এই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের নীরব সমর্থন রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিষ্কারভাবে বলেছেন, “ইরানের ওপর আজ রাতের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।” তিনি ইরানকে সতর্ক করে বলেন, “আমাদের এই যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য করবেন না।”
ট্রাম্প আরো জানান, চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির কাছে ৬০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলেন একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তির জন্য, এবং চুক্তিতে ব্যর্থ হলে এর ফল ভোগ করতে হবে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন