আপডেট :

        বিটিএস ফিরছে পুরো দমে: ২০২৬-এ নতুন গান ও গ্লোবাল ট্যুরের প্রতিশ্রুতি

        ‘কফি খাচ্ছিলাম, চিল করছিলাম—হঠাৎ দেখি পাঁচ উইকেট নেই’

        দুপুরে আজ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

        পহেলগাম হামলার পর নিষেধাজ্ঞা শিথিল, পাকিস্তানি সেলিব্রিটিদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্সেস ফিরল

        করোনার টিকা নিরাপদ, আকস্মিক মৃত্যুর গুজবে জবাব দিল গবেষণা

        জুলাই বিপ্লবের গুরুত্ব বুঝতে ব্যর্থ কিছু মানুষঃ বাঁধনের আক্ষেপ

        শুঁটকি পিৎজা: উত্তরায় ঢাকার খাবারের নতুন ট্রেন্ড সেট করছে

        অর্থ উপদেষ্টার বিপাকে পড়ার কারণ এনবিআর নিয়ে প্রকাশিত খবর

        বাংলাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী জীনাত রেহানা প্রয়াত হয়েছেন

        টাইগারদের শক্তিশালী শুরু: প্রথম সেশনেই তিন উইকেটের ধাক্কা

        ট্রাম্পের বাজেট বিল নিয়ে মাস্কের তীব্র সমালোচনা: শত্রুতার শুরু

        স্বৈরাচারের ছায়া মুছে ফেলতে তৎপর সমাজ

        ধর্ষকের শাস্তি সবার সামনে হোক: সোহম

        বায়ার্নের দাপটে বিদায় ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গো, পিএসজির মুখোমুখি কোয়ার্টারে

        ধর্ষণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুরাদনগরে রাজনৈতিক উত্তেজনা: কে দায়ী?

        ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি: ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি

        এশিয়া কাপের সম্ভাব্য সূচি জুলাইয়ে প্রকাশিত হবে

        সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যর্থ: জুলাই সনদ প্রকাশ করবে এনসিপি - নাহিদ ইসলাম

        রথযাত্রার উৎসবে বিপর্যয়: উড়িষ্যায় ভিড়ে পিষ্ট হয়ে ৩ মৃত, ১০ জন আহত

        মনু মিয়ার শেষ বিদায়ে অভিনেতা খায়রুল বাসারের মানবিকতার জয়

বজ্রপাত থেকে রক্ষায় প্রযুক্তি

বজ্রপাত থেকে রক্ষায় প্রযুক্তি

বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে থাকতে মানুষের লড়াই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে। ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, বন্যা- এমন নানা দুর্যোগ থেকে বাঁচতে মানুষ বানিয়েছে ঘরবাড়ি। বিভিন্ন উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে চেষ্টা করেছে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণের। এসব উদ্ভাবন জীবনকে করেছে সহজ ও সাবলীল। এরই ধারাবাহিকতায় বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন ইউরোপের একদল বিজ্ঞানী। তাঁরা দেখিয়েছেন, লেজার রশ্মির ব্যবহারের মাধ্যমে বজ্রবিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

আড়াইশ বছরের বেশি সময় ধরে মানুষ বজ্রপাত ঠেকাতে ধাতব রডের ব্যবহার করে আসছে। ১৭৫২ সালে মার্কিন বিজ্ঞানী বেঞ্জামিক ফ্রাঙ্কলিন দেখান, ভবনে শুধু একটিমাত্র ধাতব রডের ব্যবহার কীভাবে বজ্রপাত থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। এখন পর্যন্ত এটিই বজ্রপাত ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী অধিকতর প্রচলিত পন্থা। তবে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, লেজার রশ্মির ব্যবহার করেও বজ্রপাত ঠেকানো সম্ভব।

যেসব স্থানে ধাতব রড ব্যবহার সম্ভব নয়, সেখানে বজ্রপাতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ধারণা থেকেই লেজার প্রযুক্তির উদ্ভাবন। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে শত শত ফুট ওপরে বজ্রপাতকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ নিয়ে ল্যাবরেটরিতে গবেষণা চলেছে বহু দশক ধরে। গবেষণায় লেজার রশ্মির বজ্রপাত ঠেকাতে সক্ষমতার প্রমাণও মেলেছে।

হাতেনাতে প্রমাণ পেতে বিজ্ঞানীরা সুইজারল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্যান্তিস পর্বতে পরীক্ষা চালান। গত বছর কয়েক মাস ধরে চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সেখানে ৪০৭ ফুট উচ্চতার একটি টাওয়ারও রয়েছে। এর মাথায় থাকা ধাতব রডটিতে প্রতি বছর গড়ে ১০০ বার আঘাত হানে বজ্রপাত। বিজ্ঞানীরা টাওয়ারের পাশে গাড়ির আকৃতির একটি উচ্চ ক্ষমতার লেজারযন্ত্র স্থাপন করেন। ঝোড়ো আবহাওয়ার সময় এর রশ্মি আকাশে ছুড়তে থাকেন। তারা দেখলেন, বায়ুমণ্ডল এ রশ্মি দ্রুতই শোষণ ও বর্জন করছে। এতে বায়ুমণ্ডলে গরম ও কম ঘনত্বের একটি প্রণালি তৈরি হচ্ছে। এ প্রণালিটি বজ্রবিদ্যুৎ তার গতিপথ হিসেবে বেছে নিচ্ছে। এতে বিদ্যুতের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, লেজারভিত্তিক এ বজ্রপাত সুরক্ষা ব্যবস্থা বিমানবন্দর ও আকাশচুম্বী ভবনগুলোতে ব্যাপকভাবে কাজ দেবে। গবেষক দলের প্রধান ফ্রান্সের প্যালাইসেউ অঞ্চলের ইকোল পলিটেকনিকের পদার্থবিদ ওরিলিয়েন হোয়ার্ড বলেন, প্রায় সব জায়গায়ই বজ্রপাত ঠেকাতে ধাতব রড ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এর সুরক্ষা ক্ষমতা সীমাবদ্ধ থাকে কয়েক মিটারের মধ্যে। যদি লেজারে যথেষ্ট শক্তি থাকে, তবে এ সুরক্ষাকে কয়েকশ মিটার পর্যন্ত ব্যাপ্ত করা যেতে পারে।

বজ্রপাতের মাধ্যমে মেঘ বিপুল পরিমাণে বিদ্যুৎ নির্গমন করে। দুই থেকে তিন মাইল এলাকাজুড়ে এ বিদ্যুৎ চমকায়। বজ্রপাতের সময় তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ উৎপন্ন হয়, যা সূর্যের পৃষ্ঠদেশ থেকে পাঁচ গুণ বেশি তপ্ত। প্রতি বছর বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি বজ্রপাত হয়। এতে হতাহত হন লাখো মানুষ। ক্ষতি হয় কোটি কোটি ডলারের।

ইউনিভার্সিটি অব নিউ হ্যাম্পশায়ারের পদার্থবিদ জোসেফ ডুয়ার এ উদ্ভাবনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি এটাকে 'বড় ধরনের অগ্রগতি' বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ধাতব রডের পরিবর্তে মানুষ লেজারের মাধ্যমে বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে বহুদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। লেজারের মাধ্যমে বজ্রবিদুতের নিয়ন্ত্রণ একটি চমৎকার ধারণা।

তবে শুধু রডের তুলনায় লেজার পদ্ধতির ব্যবহার অনেকটাই ব্যয়বহুল। কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানু হাদ্দাদ বলেন, শুধু রডের তুলনায় লেজার পদ্ধতির ব্যবহার ব্যয়বহুল। তথাপি বজ্রবিদ্যুৎকে নিয়ন্ত্রণ করতে এ লেজার পদ্ধতিটি ব্যাপক কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান ও দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।



এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত