আপডেট :

        দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার জেরে উত্তপ্ত ফরিদপুর

        দেশে একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো

        বাংলাদেশ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        যুক্তরাষ্টের শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে

        র‍্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ

        বিশেষ ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত

        কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটার কতজন?

        বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এশিয়া অঞ্চল

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে

        বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ বুধবার রাজধানী ঢাকা শীর্ষ ১০ এর বাইরে

        লোহিত সাগরের জিবুতি উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবি

        থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রাজধানী ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

        গোলাপি চাঁদের দেখা মিলবে রাতে

        ২ হাজার ডলার দাম কমলো টেসলা গাড়ির

        যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালে নাগরিকত্ব ও গ্রিন কার্ড বিষয়ে যেসব পরিবর্তন আসছে

যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালে নাগরিকত্ব ও গ্রিন কার্ড বিষয়ে যেসব পরিবর্তন আসছে

ছবি: এলএবাংলাটাইমস

সাবেক ট্রাম্প প্রশাসনের জারি করা অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফলে গ্রিন কার্ডের আবেদনকারী ও অস্থায়ী বিদেশি শ্রমিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহার করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আদেশে স্বাক্ষর করার সময় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা অনেক পরিবারকে পৃথক করেছে। এমনকি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ট্রাম্পের আরোপিত নীতি দেশের স্বার্থের প্রতি সাংঘর্ষিক।’

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতে আমূল পরিবর্তন আনছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জো বাইডেনের এই অভিবাসন নীতিকে বলা হচ্ছে ‘ইউএস সিটিজেন এক্ট অব ২০২১’। এই অভিবাসন নীতি পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১ কোটি ১০ লাখ বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেতে পারে। প্রথমধাপে এসব অভিবাসীদের পাঁচ বছরের জন্য গ্রিন কার্ড দেওয়া হবে। পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে এদের স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

তবে এখন পর্যন্ত বাইডেনের এই অভিবাসন নীতি আইন হিসেবে পাশ করা হয়নি। সিনেটে ভোটাভুটির মাধ্যমে বাইডেনের ‘ইউএস সিটিজেন এক্ট অব ২০২১’ পাশ করানো হবে। ইতোমধ্যে সিনেটের আইনপ্রণেতারা এই বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করেছেন।

ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত অভিবাসন সম্পর্কিত তিনটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নির্বাহী আদেশে অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় পিতা-মাতার সাথে বা অন্য উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসীদের বৈধতার আবেদনপত্র গ্রহণ, ডাকা কর্মসূচি চালু ও ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি খতিয়ে দেখতে টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

জো বাইডেনের নতুন অভিবাসন নীতি সম্পর্কে কী জানা প্রয়োজন? এই অভিবাসন নীতি কীভাবে কাজ করবে?

বাইডেনের অভিবাসন পরিকল্পনা: জো বাইডেনের পরিবর্তিত এই অভিবাসন নীতির সুফল ভোগ করবেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসীরা। ২০২১ সালের জানুয়ারির ১ তারিখ পর্যন্ত যারা ‘লিগ্যাল স্ট্যাটাস’ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেছেন, তাদের পাঁচ বছরের জন্য ‘টেম্পোরারি লিগ্যাল স্ট্যাটাস বা গ্রিন কার্ড’ দেওয়া হবে। এই টেম্পোরারি লিগ্যাল স্ট্যাটাস পেতে এসব বাসিন্দাদের ব্যাকগ্রাউন্ড পর্যবেক্ষণ, ট্যাক্স পে ক্লিয়ারেন্স ও অন্যান্য আরো কিছু বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা হবে। গ্রিন কার্ড প্রাপ্তির পাঁচ বছর পর পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে তাদের স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

ডাকা (DACA) কর্মসূচি থেকে ভিন্ন বাইডেনের অভিবাসন পরিকল্পনা: মূলত যেসব শিশুরা অপ্রাপ্ত বয়সে পিতা-মাতার সাথে অবৈধ উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে, শুধুমাত্র তাদের জন্য DACA (Deferred Action for Childhood Arrivals program) কর্মসূচি চালু করেছিলেন ওবামা প্রশাসন। তবে বাইডেনের অভিবাসন পরিকল্পনায় যারা ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বসবাস করে আসছেন, তাদের সবার জন্যই প্রযোজ্য হবে।

জো বাইডেনের অভিবাসন পরিকল্পনাটি মূলত ডাকা কর্মসূচি থেকে আরো বিস্তৃত। এই অভিবাসন নীতির অন্তর্ভূক্তরা হলেন-

১) ডাকা বা ড্রিমারস।
২) টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাসধারী বাসিন্দা।
৩) কৃষিক্ষেত্রের সাথে যুক্ত অভিবাসী।
৪) এতিম, বিধবা এবং শিশু।
৫) ফিলিপিনো সৈন্য যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার সৈন্যদের সাথে একত্রে যুদ্ধ করেছেন।
৬) অস্থায়ীভাবে পরিবারের সাথে যোগ দিতে ফ্যামিলি-স্পন্সরড প্রাপ্ত অভিবাসী।
৭) রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী।
৮) ইউ ভিসা, টি ভিসা এবং ভিএডব্লিউএ ভিসা প্রত্যাশী।
৯) অন্য দেশের নাগরিক যারা আমেরিকার সৈন্যদের সহায়তা করছেন।

বাইডেনের অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের জন্য করণীয় কী?

বাইডেনের এই অভিবাসন নীতি আইনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এজন্য সিনেটের সমর্থনের প্রয়োজন পড়বে। তবে বাইডেনের অভিবাসন নীতি বাস্তবায়ন করতে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা বরাবরই দ্বিমত পোষণ করে আসছেন। কিন্তু ডেমোক্রেটিক আইনপ্রণেতারা আশা করেছেন, সিনেটের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে ডেমোক্রেটিকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এটি আইন অনুসারে পাশ করানো সম্ভব হবে। আপাতদৃষ্টিতে বাইডেনের অভিবাসন নীতি পাশ করানো কিছুটা কঠিন মনে হলেও অসম্ভব নয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের কোন নীতিগুলোতে বাইডেন প্রশাসন পরিবর্তন আনছে?

ডাকা কর্মসূচি: ২০১৭ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চালু করা ডাকা কর্মসূচি তৎকালীন এটর্নি জেনারেল জেফ সিজনসের মাধ্যমে বাতিল করে দেন। ফলে প্রায় ৮ লাখ অভিবাসী শিশু অর্থাৎ ড্রিমারদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ে যায়। তবে ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের ডাকা কর্মসূচি বন্ধের আদেশকে অবৈধ বলে ঘোষণা দেয়।

ক্ষমতায় বসেই জো বাইডেন ডাকা কর্মসূচি আবারো চালু করার এক নির্বাহী আদেশে সই করেন। একই সাথে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি এবং এটর্নি জেনারেলকে আইনানুগভাবে ডাকা কর্মসূচি শক্তিশালী এবং সুরক্ষিত করার জন্য নির্দেশ দেন বাইডেন।

মুসলিম দেশগুলোর নাগরিকদের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা: যুক্তরাষ্ট্রে সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুসলিম দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর ফলে নিষিদ্ধ হয়ে পড়া মুসলিম দেশগুলোর নাগরিকরা এখন আমেরিকার ভিসার জন্য আবারো আবেদন করতে পারবেন। ইতোমধ্যে এসব দেশের নাগরিকদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন বাইডেন।

বিচ্ছিন্ন শিশুদের বাবা–মায়ের সঙ্গে একত্রে থাকার সুযোগ সৃষ্টি: সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে সীমান্ত পথ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ৫ হাজার ৫০০ অভিবাসী শিশুকে তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। এসব শিশুদের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে অমানবিকভাবে রাখা হয় বলে মানবাধিকার ও অভিবাসী গ্রুপগুলো অভিযোগ করে আসছিলো।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন এসব অভিবাসী শিশুদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা এসব শিশুকে একটি টাস্ক ফোর্সের মাধ্যমে তাদের মা–বাবার সঙ্গে মিলিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এলএবাংলাটাইমস/ওএম

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত