বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
৫০০-র বেশি ছাত্রছাত্রীর ভিসা বাতিল, বাড়ানো হয়েছে নির্বাসনের কারণ
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ির অংশ হিসেবে এ বছর ৫২৫ জনেরও বেশি ছাত্র, শিক্ষক ও গবেষকের ভিসা বাতিল করেছে দেশটির সরকার। হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষক রাশিয়ান নাগরিক কসেনিয়া পেত্রোভার ঘটনা এই উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে সামনে এনেছে।
ফ্রান্স থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার পথে কসেনিয়া তার সঙ্গে থাকা ব্যাঙের ভ্রূণ (frog embryos)—যা "অ-ঝুঁকিপূর্ণ" বলে বিবেচিত—ঘোষণা না করায় তার ভিসা বাতিল করা হয় এবং তাকে আটক করা হয়। যদিও তার আইনজীবী গ্রেগ রোমানোভস্কি বলছেন, এটি ছিল কাস্টমস ফর্মে একটি "অনিচ্ছাকৃত" ভুল এবং এই ঘটনায় ভিসা বাতিল করা "মোটেই যুক্তিসঙ্গত নয়"।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য না করলেও এবিসি নিউজকে জানিয়েছে, পেত্রোভার মোবাইল ফোনে পাওয়া মেসেজ থেকে জানা গেছে, তিনি এই ভ্রূণগুলি ঘোষণা না করে চোরাইপথে আনতে চেয়েছিলেন।
বর্তমানে লুইজিয়ানার একটি আইসিই (ICE) ডিটেনশন সেন্টারে বন্দী পেত্রোভা, যিনি জুন ৯ তারিখে শুনানির মুখোমুখি হবেন। তার আইনজীবী আশঙ্কা করছেন, তাকে রাশিয়ায় ফেরত পাঠানো হলে, ইউক্রেন যুদ্ধবিরোধী বক্তব্যের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
“এটা শুধু অনৈতিক নয়, একেবারেই অপ্রয়োজনীয় একটি সিদ্ধান্ত,” বলেন রোমানোভস্কি।
কিন্তু পেত্রোভা এই একমাত্র ঘটনা নয়। সিএনএন-এর অনুসন্ধান অনুযায়ী, ৮০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও আইনি নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শত শত শিক্ষার্থী ও গবেষকের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত মাসে জানিয়েছেন, তার অধীনস্থ পররাষ্ট্র দপ্তর ৩০০-র বেশি ছাত্রভিসা বাতিল করেছে।
শুরুর দিকে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতি সহানুভূতির, যেমন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহমুদ খালিল, পরে এই ভিসা বাতিলের হার বাড়তে থাকে অপেক্ষাকৃত ছোটখাটো অপরাধের ভিত্তিতে—এমনকি কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিবাসন আইনে আগে থেকেই থাকা ক্ষমতাগুলো এখন এমনভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। অনেকে সঠিক আইনি সহায়তা না পেয়ে স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
আমেরিকান ইমিগ্রেশন ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট জেফ জোসেফ বলেন, “এই আইনি হাতিয়ারগুলো আগে কখনো এমন বিশাল আকারে ব্যবহৃত হয়নি। এখন সেগুলো এমনভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে যেন বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে সবাইকে দেশছাড়া করা যায়।”
এই পরিস্থিতি অভিবাসী ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে যারা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা নিতে এসেছে এবং এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন