বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
চীন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সম্পূর্ণভাবে শুল্ক প্রত্যাহার’ করার আহ্বান জানিয়েছে
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ বা পারস্পরিক শুল্ক সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে চীন।
সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৈশ্বিকভাবে নির্ধারিত বেশ কিছু শুল্কের ওপর ৯০ দিনের বিরতি ঘোষণা করলেও, চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করছি যেন তারা তাদের ভুল শুধরে নেয়, পারস্পরিক শুল্কের এই ভ্রান্ত নীতি সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার সঠিক পথে ফিরে আসে।”
যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য — যার মধ্যে চীনে উৎপাদিত পণ্যও রয়েছে — এর ওপর শুল্ক থেকে সাময়িক অব্যাহতির ঘোষণা দেয়। তবে রোববার মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লাটনিক জানান, এই অব্যাহতি সাময়িক এবং ভবিষ্যতে ‘সেমিকন্ডাক্টর ট্যারিফ’ নামে নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে।
“আমরা চাই এই পণ্যগুলো আমেরিকাতেই উৎপাদিত হোক,” বলেন লাটনিক।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে বলেন, এই পণ্যগুলোর কোনো স্থায়ী অব্যাহতি নেই। তিনি জানান, এগুলো কেবল ভিন্ন একটি ‘ট্যারিফ বাকেটে’ স্থানান্তরিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা সেমিকন্ডাক্টর এবং পুরো ইলেকট্রনিক্স সাপ্লাই চেইন নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে নতুন তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছি।”
এ ধরনের মন্তব্যে টেকনোলজি পণ্যের (যেমন: স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও সেমিকন্ডাক্টর) সাময়িক শুল্ক অব্যাহতি নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই অব্যাহতিকে ‘ছোট পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, তারা এর প্রভাব মূল্যায়ন করছে।
তবে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে নতুন শুল্ক আরোপের আভাস দেওয়ায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে।
রোববার, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে আলোচনার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।
উল্লেখ্য, এপ্রিলের শুরুতে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ৫৪% শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যা পরে বাড়িয়ে ১৪৫% পর্যন্ত করা হয়। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর প্রথমে ৩৪%, পরে ৮৪% এবং সর্বশেষ ১২৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে, যা শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক বা বাণিজ্য যুদ্ধ উস্কে দিতে চায়, তাহলে চীন শেষ পর্যন্ত লড়বে।”
শনিবার রাতে ফ্লোরিডার মায়ামির উদ্দেশে যাত্রাকালে ট্রাম্প বলেন, আগামী সপ্তাহের শুরুতে তিনি শুল্ক অব্যাহতির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানাবেন।
হোয়াইট হাউজের দাবি, এ ধরনের শুল্ক চাপিয়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় সুবিধাজনক অবস্থানে যেতে চায়।
ট্রাম্প বলেন, তার এই নীতি বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার অন্যায্যতা দূর করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান ও শিল্পকারখানা ফিরে আনবে।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে এবং তার প্রভাব পড়তে পারে চাকরি ও দেশীয় অর্থনীতির ওপর।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন