উডল্যান্ড হিলসে রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা, তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ
মার্কিন নাগরিকত্ব ইন্টারভিউতে গিয়েই গ্রেফতার ফিলিস্তিনি ছাত্রনেতা
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ফিলিস্তিনি ছাত্রনেতা এবং গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক মোহসেন মাহদাভিকে মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা গ্রেফতার করেছেন। নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে তাকে সোমবার ভেরমন্ট অঙ্গরাজ্যের কোলচেস্টারে আটক করা হয়।
তার আইনজীবী লুনা দ্রুবি জানিয়েছেন, মাহদাভিকে গ্রেফতার করা হয়েছে “সরাসরি প্রতিশোধমূলকভাবে”, কারণ তিনি গাজার পক্ষে এবং ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তিনি বলেন, “এই গ্রেফতার শুধুমাত্র তার ফিলিস্তিনি পরিচয় ও মানবাধিকারের পক্ষে কণ্ঠস্বর তোলার কারণে। এটি অসাংবিধানিক।”
মাহদাভির নাগরিকত্ব আবেদন থামাতে এবং তাকে ভেরমন্টের বাইরে নেওয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার রোধ করতে দ্রুবি একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেন। ওবামা মনোনীত বিচারপতি উইলিয়াম সেশনস দ্রুত সেই আদেশ অনুমোদন করেন।
আদালতে জমা দেওয়া নথিতে উল্লেখ করা হয়, মাহদাভির জন্ম হয়েছিল পশ্চিম তীরের একটি শরণার্থী শিবিরে এবং তিনি ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তিনি ২০১৫ সাল থেকে মার্কিন স্থায়ী বাসিন্দা (গ্রিনকার্ডধারী)। তিনি একজন দর্শন বিভাগের ছাত্র এবং নিজেকে অহিংসা ও সহানুভূতিকে ধর্মীয় বিশ্বাসের কেন্দ্রস্থলে রাখেন বলে পরিচয় দেন।
মাহদাভির বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য মেলেনি।
মাহদাভি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের 'প্যালেস্টাইনিয়ান স্টুডেন্ট সোসাইটি'-র সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়মিত প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিয়েছেন। গত ডিসেম্বরে CBS'র '60 Minutes' প্রোগ্রামে তিনি ইসরায়েলকে "গণহত্যাকারী" বলে অভিযুক্ত করেছিলেন, যদিও ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
মাহদাভির গ্রেফতার এমন এক সময়ে হয়েছে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
গত মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যান্টিসেমিটিজম মোকাবেলায় অন্তত ৩০০ বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, প্রশাসন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষার্থীদের 'ইহুদিবিদ্বেষী' বলে আখ্যা দিচ্ছে এবং মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন করছে।
ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেছেন, “মাহদাভিকে নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপে অবৈধভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার আইনগত অধিকার দিতে হবে এবং অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”
বিচারপতি সেশনস একই দিন বোস্টনের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের তুর্কি শিক্ষার্থী রুমাইসা ওজতুর্কের মামলায় শুনানি করেন, যিনি গত মাসে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের হাতে গ্রেফতার হন। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের এই অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আদালতের আদেশ উপেক্ষা করলে এটি একটি সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।”
এদিকে, কলম্বিয়ার আরেক প্রতিবাদ নেতা মাহমুদ খলিলের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে অভিবাসন আদালত তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের অনুমতি দিয়েছে। তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে গ্রেফতার করে লুইজিয়ানার একটি আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন