বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
চীনা জাহাজের ওপর বন্দর ফি আরোপের পরিকল্পনা প্রকাশ করলো যুক্তরাষ্ট্র
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন চীনা জাহাজের ওপর বন্দর ফি আরোপের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, যার লক্ষ্য দেশটির জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং চীনের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করা।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (USTR) দপ্তর জানিয়েছে, এই ফি ১৮০ দিনের মধ্যে কার্যকর হবে এবং ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে। ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাবিত এক পরিকল্পনায় প্রতিটি চীনা জাহাজের জন্য আমেরিকান বন্দরে ঢোকার ফি $১.৫ মিলিয়ন পর্যন্ত করার কথা বলা হলেও, নতুন পরিকল্পনাটি তুলনামূলকভাবে নমনীয়।
USTR এক বিবৃতিতে জানায়, “চীন ইতোমধ্যে জাহাজ শিল্পে তার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে, যা মার্কিন কোম্পানি, শ্রমিক ও অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়েছে।”
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, চীনা মালিকানাধীন বা চীনে নির্মিত জাহাজগুলোর ওপর ফি আরোপ করা হবে তাদের বহন করা পণ্যের ওজন, কন্টেইনার সংখ্যা বা গাড়ির ভিত্তিতে।
বাল্ক জাহাজ: প্রতি টন কার্গোতে প্রাথমিক ফি হবে $৫০, যা প্রতি বছর $৩০ করে বাড়বে আগামী তিন বছরে।
চীনা নির্মিত জাহাজ: প্রতি টনে $১৮ বা প্রতি কন্টেইনারে $১২০ ফি নির্ধারিত হয়েছে, যা একইভাবে তিন বছরে বাড়বে।
যেসব জাহাজ গাড়ি পরিবহন করে: অ-মার্কিন নির্মিত জাহাজ হলে প্রতি গাড়ির জন্য ফি হবে $১৫০।
এই ফি প্রতি ভ্রমণে একবারই আরোপিত হবে এবং বছরে সর্বোচ্চ পাঁচবার নেওয়া যাবে।
USTR জানিয়েছে, চীনা নির্মিত জাহাজের সংখ্যা বা ভবিষ্যৎ অর্ডারের উপর ভিত্তি করে ফি আরোপের আগের প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া, খালি জাহাজ যেগুলো মার্কিন বন্দর থেকে কয়লা বা শস্য পরিবহনের জন্য আসে, সেগুলো এই ফি থেকে অব্যাহতি পাবে।
যেসব জাহাজ এই ফি থেকে ছাড় পাবে:
আমেরিকান বন্দরগুলোর মধ্যে বা সেখান থেকে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং মার্কিন অঞ্চলগুলোতে যাতায়াতকারী জাহাজ।
মার্কিন ও কানাডিয়ান জাহাজ যা গ্রেট লেকস অঞ্চলের বন্দরে আসে।
USTR আরও জানিয়েছে, তিন বছর পর দ্বিতীয় ধাপে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) বহনকারী মার্কিন নির্মিত জাহাজগুলোর পক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যা পরবর্তী ২২ বছরে ধীরে ধীরে কার্যকর হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হচ্ছে যখন বিশ্ববাণিজ্য ইতোমধ্যে ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ব্যাহত হচ্ছে। এক বাণিজ্য গোষ্ঠীর মতে, চীনের পণ্যবোঝাই অনেক জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে ইউরোপীয় বন্দরে চলে যাচ্ছে।
চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের মহাপরিচালক মার্কো ফরজিওনে জানান, যুক্তরাজ্যে বন্দরের ভিড় বিশেষভাবে ফিলিক্সস্টো বন্দর ঘিরে বেশি, আর ইউরোপে রটারডাম ও বার্সেলোনায়ও congestion দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, “চীনের অনেক জাহাজ যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিল, তা এখন ইউরোপের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ইউরোপে চীনা পণ্যের আমদানি ১২% এবং যুক্তরাজ্যে ১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।”
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক পদক্ষেপ:
চীন থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫% শুল্ক।
জুলাই পর্যন্ত অন্য দেশের ওপর ১০% হারে সাধারণ শুল্ক।
সব শুল্ক মিলিয়ে চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ২৪৫% শুল্ক আরোপ সম্ভব।
ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, এই নতুন ফি এবং শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যের দাম বাড়বে এবং সরবরাহ চেইনে বড় রকমের পরিবর্তন আসতে পারে। ইউরোপীয় ভোক্তাদের ওপর এর প্রভাব কম পড়লেও মার্কিন ভোক্তাদের জন্য এটি ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন