কক্সবাজারঃ তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল, দুর্ভোগে কয়েক লক্ষ মানুষ
শ্রাবণের মাঝ সময়ে কক্সবাজারে ভারী বর্ষণ চলছে। গত কয়েকদিনের চলমান ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার অন্যতম নদী মাতামুহুরি, ঈদগাঁওর ফুলেশ্বরী, বাকঁখালী ও রেজুখালে ঢল নেমেছে। বাঁধ উপচে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি। অনেক জায়গায় বাঁধ ডিঙিয়ে খাল-নদীর পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। সঙ্গে বৃষ্টি ও পাহাড় বেয়ে নামা পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন উপজেলার অন্তত দু'শতাধিক গ্রামের নিম্নাঞ্চল।
কক্সবাজার সদর, রামু, টেকনাফ, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া, উখিয়া উপজেলার কয়েক লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন জনপ্রতিধিরা। সবচেয়ে বেশি পানিবন্দি এলাকা উখিয়া উপজেলা। কক্সবাজার-টেকনাফ-উখিয়া হাইওয়ের অনেক এলাকা পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
প্লাবিত এলাকায় বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো পরিবার। অনেক বাড়িতে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন গৃহকর্তারা। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকাল পর্যন্ত দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উখিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী জানান, টানা ৩ দিনের বৃষ্টির কারণে বুধবার সন্ধ্যা হতে তিন ইউনিয়নের লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এলাকার রাস্তা-ঘাট, খাল-বিল তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পানি ঢুকেছে বাসাবাড়িতেও। তাৎক্ষনিক সহায়তার কোন ব্যবস্থা প্রশাসনের ছিল না, এটা দুঃখজনক। ভোগান্তির চেয়ে সরকারি সহায়তা নগণ্য।
কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন কবির জানান, সোমবার রাত হতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত থেমে থেমে টানা বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সদর ইউজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, বাঁকখালী নদীতে ঢল নামায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে ইউনিয়নের ২০ থেকে ২৫টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভা মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, নালার পথ দখল হওয়ায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের সমস্যায় রূপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে নালায় অবৈধ দখল ও নির্মিত স্থাপনা গুড়িয়ে পানির প্রবাহ সচলের কাজ শুরু করেছি।
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরীর একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধে ভাঙন ধরেছে। সেসব স্থান দিয়ে লোকালয়ে ঢলের পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজারের আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, গত কয়েকদিনে কক্সবাজারে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আরও কয়েকদিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, টানা বর্ষণে নদী ও খালে ঢল নেমেছে। অনেক উপজেলায় সৃষ্টি হয়েছে প্লাবন। উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং, জালিয়াপালং, পালংখালী ইউনিয়নের জন্য ৬ মেট্রিকটন চাল ও নগদ দেড় লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত কুতুবদিয়া উপজেলায় ৩ মেট্রিকটন চাউল ও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন