লিটন হত্যা সন্ত্রাসীদের নতুন কৌশল : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা সন্ত্রাসীদের নতুন কৌশল হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
সচিবালয়ে রবিবার (১ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
শনিবার সন্ধ্যায় মনজুরুল ইসলাম লিটনকে তার সুন্দরগঞ্জের সাহাবাজ গ্রামের নিজের বাড়ির বসার ঘরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জন সন্দেহভাজনকে ধরা হয়েছে। আরও ধরা হচ্ছে। আমরা আশা করছি তার (লিটন) টেলিফোন ও আশেপাশের ফোনের যে তথ্য আদান-প্রদান সেগুলো এনে আমরা তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা আমরা শুরু করে দিয়েছি। আমরা নিশ্চিত যেই ঘটনা করে থাকুক, অচিরেই এদেরকে শনাক্ত করে ধরতে পারব। সেজন্য আমাদের পুলিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘এটা সন্ত্রাসীদের নতুন কৌশল হতে পারে। এমপিদের সরাসরি এভাবে (খুন করা)... সাত/আট বছরের মধ্যে এবারই প্রথম ঘটনা ঘটল। সন্দেহের তালিকা থেকে আমরা বাদ দিচ্ছি না, সব কিছুই আমরা অ্যানালাইসিস করছি।’
‘একজন সংসদ সদস্যের এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে আমরা সবাই অত্যন্ত দুঃখিত। যতো ধরনের গোয়েন্দা তৎপরতা, ফরেনসিক করে...যা কিছু সাক্ষী-সাবুত আছে এর মাধ্যমে আসল অপরাধীকে চিহ্নিত করব ও ধরে ফেলব’ বলেন মন্ত্রী।
দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে কিনা- একজন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এর মাধ্যমে (এমপি লিটন হত্যা) আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে এ প্রশ্নই আসে না। আইনশৃঙ্খলা অত্যন্ত স্বাভাবিক আছে। আমরা মনে করছি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা সঠিক কাজটি করছি বলেই আইনশৃঙ্খলা ঠিক আছে। এখানে কোন ব্যত্যয় ঘটেনি।’
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের মোটিভ কি হতে পারে বলে মনে করছেন- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘পূর্ণ তথ্য না আসার আগে এ বিষয়ে কথা বলা উচিত হবে না। আমি যতটুকু শুনেছি, পুলিশ ও গোয়েন্দারা কতগুলো ডাইমেনশনে চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করছেন। আমি খুব দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আমরা খুব শিগগিরই দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করব।’
কোন গোষ্ঠীর নাম উল্লেখ না করে তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা অনেকবার হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী-গোয়েন্দা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর। কোনকিছু করে পার পাবে না।’
মন্ত্রী এমপিরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সবকিছুই আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি। এটাও আমাদের চিন্তায় থাকবে, যে এটাও একটা কৌশল ছিল কি না। এটার মাধ্যমে তারা একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করার প্রচেষ্টা নিচ্ছে কি না।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি জেনেছি তিনি (মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন) অত্যন্ত জনদরদী ছিলেন এবং মানুষের সঙ্গে মিলেমিলে কাজ করতেন। সেজন্যই তার বাড়িতে এভাবে (হত্যাকারী) পাঁচজন ঢুকে গিয়েছিল। তাই কেউ সন্দেহ করতে পারেনি।’
এ ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন কিনা- একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার আগেও উদ্বিগ্ন ছিল না, এখনও কোন ঘটনার জন্য উদ্বিগ্ন নয়। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর যথেষ্ট বিশ্বাস রয়েছে। তারা ভাল কাজ করছে।’
এর ঘটনার পর জনপ্রতিনিধিদের সতর্কভাবে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হবে কিনা- একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন আমরা তো সব সময়ই আমরা বলি যার যার সতর্কতা সে সে নিয়ে চলবেন। এটা নতুন কিছু নয়। কথা এটুকুই।’
একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না এই কথাটা আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারব না। কে কখন কি করে...দেখেন তুরস্কের মত জায়গায় রাশিয়ার অ্যাম্বাসেডরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা তো পৃথিবীর সর্বত্রই ঘটছে।’
শনিবার খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জেড এ মাহমুদকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। লক্ষভ্রষ্ট সেই গুলিতে শিপ্রা কুণ্ডু নামে এ নারী নিহত হন।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খুলনার ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। পিস্তল সরবরাহ কে করেছে, কে খুন করেছে এগুলো শনাক্ত হয়েছে। পিস্তল সরবরাহকারীকে ধরা হয়েছে। বাকিরাও ধরা পড়বে খুব শিগগিরই। পুলিশ কাজ করছ
শেয়ার করুন