করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৮৩
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চীনের হুবেই প্রদেশে মৃত্যুর মিছিলে একদিনে যোগ হয়েছে আরও ১১৬ জনের নাম। এ নিয়ে ভয়াবহ এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৪৮৩ জনে।
শুক্রবার হুবেই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রদেশটিতে মারা গেছেন ১১৬ জন। এই প্রদেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও চার হাজার ৮২৩ জন। এ নিয়ে প্রদেশটিতে করোনায়ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫১ হাজার ৯৮৬ জনে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। এরপর থেকে চীনে মহামারি আকার ধারণ করে এই ভাইরাস। ভাইরাসটি চীনের ৩১ প্রাদেশিক পর্যায়ের অঞ্চল ছাড়াও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে। বিভিন্ন দেশে চীন থেকে ফেরা মানুষের কাছ থেকে অন্য মানুষে কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার খবর আসতে থাকায় গত ৩০ জানুয়ারি এ ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে এখনও একে বৈশ্বিক মহামারি (প্যানডেমিক) ঘোষণা করেনি সংস্থাটি।
চীনে হুট করে আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার ডব্লিউএইচও-এর জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রধান মিশেল রায়ান বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পদ্ধতি বদলানোয় সংখ্যা হঠাৎ বেশি দেখালেও সার্বিক প্রাদুর্ভাবকে এটি খুব বেশি প্রভাবিত করবে না।
ভাইরাস সংক্রমণ রোধে চীনে মৃতদের পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে লাশ পোড়া বাতাস ছড়িয়ে যাচ্ছে চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে আরও দূরে। প্রায় দেড় মাস অবরুদ্ধ থাকা এক মৃত্যুপুরী যেন উহান। সেখানে আটকা পড়েছেন বহু বিদেশিও। খাদ্য সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই মৃত্যু উপত্যকায় বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন বাসিন্দারা।
এদিকে চীনের বাইরে এখন পর্যন্ত হংকং, ফিলিপাইন ও জাপানে তিনজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। চীনের বাইরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙর করা ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামক প্রমোদতরীতে। বিলাসবহুল ওই নৌযান তিন হাজার ৭০০ যাত্রী নিয়ে এখন কোয়ারেন্টাইনে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে থাকা ১৭৫ জনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশের মধ্যে চীনের প্রতিবেশী ১৪টি দেশ রয়েছে সবার ওপরে। এর মধ্যে চীনের সঙ্গে আকাশ, নৌ ও সড়কে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, মঙ্গোলিয়াসহ কয়েকটি দেশ। চীনের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর গভীর সম্পর্ক থাকায় এসব দেশে জীবনযাত্রায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সিঙ্গাপুরে এ পর্যন্ত ৫০ জন সংক্রমিত হয়েছে। এর ফলে সেখানকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। বিভিন্ন অফিসে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে চীনারা উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। দেশটিতে বিভিন্ন স্থানে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।
শেয়ার করুন