আপডেট :

        হোয়াইট হাউসের একাংশ ভেঙে ফেলছেন ট্রাম্প

        LAX-এর টার্মিনাল ৫-এ পরিবর্তন, ২০২৮ অলিম্পিকের জন্য সংস্কার শুরু

        ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পটনে নারী ক্রেতার গুলিতে দোকানে এক ব্যক্তি নিহত

        মাত্র ২৯ বছর বয়সে প্রয়াত আমেরিকান দাবা গ্র্যান্ডমাস্টার ড্যানিয়েল নারডিটস্কি

        ইসরায়েল সফরে ভ্যান্স, যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ

        আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ‘তৃতীয় নিরাপদ দেশ’ হিসেবে কাজ করতে সম্মত হলো বেলিজ

        চীনের আধিপত্য রুখতে বিরল খনিজ সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র–অস্ট্রেলিয়া ঐতিহাসিক চুক্তি

        চোখে মাইক্রোচিপ বসিয়ে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

        প্রথম ম্যাচে জয়ের পরও ফাঁকা মিরপুরের গ্যালারি

        ১০ মাসেও জুটেনি নতুন বই, বিপাকে ৫৪ শিক্ষার্থী

        পাকিস্তান-আফগানিস্তানের অস্ত্রবিরতি টিকবে?

        বাংলাদেশের আকাশে উল্কাপাত দেখা যাবে মঙ্গলবার রাতে

        দেব-রুক্মিণীর ‘বিচ্ছেদ’ নিয়ে ফের গুঞ্জন

        পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন ‘ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্র চলছে’

        সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন বিএনপি মহাসচিব

        আইএমএফের কঠোর শর্ত: নির্বাচিত সরকার ছাড়া ঋণের অর্থ নয়

        সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের নির্দেশ

        রোনালদোর স্বপ্নপূরণের পথে আরও এক ধাপ এগোলেন তার ছেলে

        ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাড়ছে টিউশন ফি

        বর্ষা নিজেই গলায় কোপ দেয় জুবায়েদকে

বিধ্বংসী ভূমিকম্প

বিধ্বংসী ভূমিকম্প

মিয়ানমারে গত কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। রোববার দেশটির জান্তা সরকার বলেছে, ভূমিকম্পে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৭০০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আর আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রস বলেছে, সাত দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। দেশটিতে প্রতি ঘণ্টায় সহায়তার চাহিদা বাড়ছে।

গত শুক্রবার দুপুরে দেশটিতে ভয়াবহ এই ভূমিকম্প হয়। একই সময় কেঁপে ওঠে থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভারত, কম্বোডিয়া ও চীনের কিছু এলাকা। তবে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে মিয়ানমারের প্রাচীন রাজধানী মান্দালয়ে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল সাগাইংয়ের কাছাকাছি।

 


জাতিসংঘের ভূমিকম্প ঝুঁকি মূল্যায়ন অনুসারে, ১৯৩০ সালে মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বাগোতে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ৫৫০ জনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে দেশটিতে বেশ কয়েকবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে।


যে কারণে ভূমিকম্পন হয়

পৃথিবী তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। এগুলো হলো কোর, ম্যান্টল ও ক্রাস্ট। পৃথিবীর কেন্দ্র হলো কোর। গলিত এই অংশের বেশিরভাগই ধাতব দিয়ে তৈরি। কোরের ওপরের উত্তপ্ত অংশ প্রায় কঠিন শিলার স্তর দিয়ে তৈরি ম্যান্টল। আর এর বাইরের বিশেষ আকৃতির ভূতত্ত্বকে বলা হয় ক্রাস্ট। এটি ক্রমাগত পরিবর্তনশীল টেকটনিক প্লেট দিয়ে গঠিত। পিচ্ছিল আবরণের ওপর বিভিন্ন গতিতে এবং বিভিন্ন দিকে এসব টেকটনিক প্লেটের চলাচলের কারণে শক্তি তৈরি করে। টেকটনিক প্লেটগুলো একটির ওপর থেকে আরেকটি সরে গেলে পুঞ্জীভূত শক্তি নির্গত হয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠে কম্পন অনুভূত হয়, যাকে আমরা ভূমিকম্প বলি। যখন এই শক্তি সমুদ্রের নিচে নির্গত হয়, তখন এটি একের পর এক দৈত্যাকার তরঙ্গ তৈরি করে, যাকে আমরা সুনামি বলে জানি।

 

ইউএসজিএসের ভূকম্পনবিদ উইল ইয়েকের মতে, ভূমিকম্পের মূল ধাক্কার কারণে পৃথিবীর চাপের যে পরিবর্তন হয়, তার কারণে আফটার শক বা পরাঘাত হয়।

কী আছে মিয়ানমারের ভূপৃষ্ঠের নিচে

দুটি টেকটোনিক প্লেট—ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেটের মধ্যে মিয়ানমারের অবস্থান, যা দেশটিকে ভূমিকম্পের বিশেষ ঝুঁকিতে ফেলেছে। এ দুটি প্লেটের মধ্যবর্তী সীমানাকে সাইগং ফল্ট বলা হয়। বিশেষজ্ঞরা এটিকে মিয়ানমারের মান্দালয় ও ইয়াঙ্গুনের মতো শহরগুলোর মধ্য দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় এক হাজার ২০০ কিলোমিটার (৭৪৫ মাইল) দীর্ঘ একটি সরলরেখা হিসেবে বর্ণনা করেন, যা লাখো মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

ইউএসজিএসের মতে, ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেটের মধ্যে ঘর্ষণের কারণে মিয়ানমারে ভূমিকম্প হয়, যাকে ‘স্ট্রাইক-স্লিপ ফল্টিং’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

 

লন্ডনভিত্তিক সায়েন্স মিডিয়া সেন্টারের উদ্ধৃতি দিয়ে ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডনের টেকটোনিকস বিশেষজ্ঞ ড. রেবেকা বেল দুটি প্লেটের মধ্যবর্তী সীমানাকে ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত সান আন্দ্রেয়াস ফল্টের সঙ্গে তুলনা করেন। এই সান আন্দ্রেয়াস ফল্টের কারণে ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের নর্থরিজে মারাত্মক ভূমিকম্প হয়।

ড. রেবেকা বেল বলেন, 'লম্বা ও সোজা প্রকৃতির ফল্টের অর্থ হলো ভূমিকম্প বৃহৎ এলাকাজুড়ে ফাটল তৈরি করতে পারে। আর ফল্টের ক্ষেত্র যত বড় হবে, ভূমিকম্পও তত বড় হবে।'

ইউএসজিএস অনুমান করেছে, মিয়ানমারে প্রায় আট লাখ মানুষ ভয়াবহ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় বসবাস করছে। ফলে আগামী দিনগুলোতে মৃতের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়তে পারে।

কতটা ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে

এবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় তুলনামূলক কম অর্থাৎ মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরতায়। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়্যাল হলোওয়ের আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের ড. ইয়ান ওয়াটকিনসনকে উদ্ধৃত করে সায়েন্স মিডিয়া সেন্টার জানায়, অগভীর ভূমিকম্প অনেক বেশি ক্ষতি করতে পারে। কারণ, গভীরতা থেকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে ভূমিকম্পের শক্তি খুব বেশি ক্ষয় হয় না।

ওয়াটকিনসন আরও বলেন, শুক্রবারের ভূমিকম্প ২০২৩ সালে দক্ষিণ তুরস্কে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের মতো ক্ষয়ক্ষতি করতে পারত। বছরের পর বছর অপরিকল্পিত নির্মাণের কারণে ওই ভূমিকম্পে বহু ভবন ভেঙে পড়েছিল। সূত্র: আল জাজিরা ও স্কাই নিউজ

 

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত