ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদারে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আজ বৃহস্পতিবার প্যারিসে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আয়োজিত এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী উপস্থিত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারির পর থেকে এটি ট্রান্সআটলান্টিক অঞ্চলে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানাবেন যেন রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগ করে যুদ্ধবিরতির জন্য বাধ্য করা হয়। এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্র এবার একটু ‘ছড়িও’ ব্যবহার করুক।”
বৈঠকটি এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলায় ইউক্রেনের সুমি শহরে অন্তত ৩৫ জন নিহত এবং ১১৭ জন আহত হয়েছেন। এর আগে, ক্রিভি রিহ শহরে এক আবাসিক এলাকায় রুশ হামলায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়।
সবশেষ, বুধবার রাতে ইউক্রেন জানায়, ডনিপ্রো শহরে রুশ ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন শিশু।
ইলিসি প্রাসাদে অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে মার্কো রুবিও ও স্টিভ উইটকফ ছাড়াও যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জনাথন পাওয়েল এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টারা অংশ নেবেন।
বৈঠকে একটি পৃথক সেশন থাকবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জন্য, যেখানে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলোচনার মূল লক্ষ্য হবে ইউক্রেনের যুদ্ধ কীভাবে থামানো যায়, তা নির্ধারণ করা। স্টিভ উইটকফ গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়েও একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রধান সহকারী আন্দ্রিই ইয়ারমাক বলেন, “আমরা ইউক্রেন ও সমগ্র ইউরোপের নিরাপত্তা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে কাজ করছি।”
অন্যদিকে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই আলোচনার বিষয়ে বলেন, “ইউরোপীয় নেতারা কেবল যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন।”
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরে আসার পর তার প্রশাসন মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আগেই সতর্ক করে দিয়েছেন, যদি ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো শান্তিচুক্তি হয়, তবে তারা তা মেনে নেবে না।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাকবিতার পর দুই নেতার সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছায়, যেখানে ট্রাম্প ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেন, কেন তারা আগেই রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করেনি।
এই পটভূমিতে প্যারিসে আয়োজিত এই বৈঠককে ইউরোপীয় নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকরা।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন