আপডেট :

        চুক্তিতে যেতে আগ্রহ নন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন

        গণহত্যার প্রতিবাদে চীন বর্জনের ডাক

        রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির আশা

        টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে আবহাওয়ায় ব্যপক পরিবর্তন

        হানিফ ফ্লাইওভারের উপরের যানজটকে সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য সমন্বয় সভা

        মালদায় দেবের হেলিকপ্টারে আগুন

        প্যারিসের সায়েন্সেস পো ইউনিভার্সিটি থেকে গাজাপন্থী কিছু শিক্ষার্থীকে সরিয়েছে পুলিশ

        চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা পাকিস্তানের স্যাটেলাইট

        চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা পাকিস্তানের স্যাটেলাইট

        এজলাস কক্ষে এসি স্থাপন সময়ের দাবি

        জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ

        জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ

        ট্রেনে গুনতে হবে বাড়তি ভাড়া

        রাজশাহীর গোদাগাড়ির ছেলে রাফায়েল টুডু ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা

        রাজশাহীর গোদাগাড়ির ছেলে রাফায়েল টুডু ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা

        স্বাধীন সাংবাদিকতাকে নিরুদ্দেশ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব

        কেজরিওয়াল ও রাহুলকে ঘিরে চড়ছে ভোটের পার

        রাজধানী ঢাকায় ঝুম বৃষ্টির সম্ভাবনা

        এক টেবিলে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ১৮ জন!

        এক টেবিলে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা দিলেন ১৮ জন!

দেশের মানুষ ভালো নেই, আমাকে ফিরতে হবে: দেশনেত্রী খালেদা জিয়া

দেশের মানুষ ভালো নেই, আমাকে ফিরতে হবে: দেশনেত্রী খালেদা জিয়া

দেশের মানুষ ভালো নেই, আমাকে ফিরতে
হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। যদিও
লণ্ডনে তার পরিবারের লোকজন আরও
কিছুদিন থেকে যাওয়ার আবদার করছেন
তাকে।
স্থানীয় সময় রোববার রাতে (বাংলাদেশ
সময় সোমবার ভোররাত) লন্ডনের পার্ক
প্লাজার অডিটোরিয়ামে সুধী সমাবেশে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া একথা
জানান।
যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ প্রবাসীদের নিয়ে এ
সভার আয়োজন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির
সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এটিই মা-ছেলের আনুষ্ঠানিক কোনো বড়
জমায়েতে একসাথে প্রথম বক্তৃতা। সভায়
তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা
রহমানের উপস্থিতি বাড়তি আকর্ষণের সৃষ্টি
করে।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,
“চিকিৎসা এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে
সাক্ষাতের জন্য লন্ডনে এসেছিলাম। এখন
আমি সুস্থ। দীর্ঘদিন পর একসঙ্গে কিছু সময়
কাটিয়েছি। পরিবারের সদস্যরা আরো
কিছুদিন থাকার আবদার করছে। কিন্তু
দেশের মানুষ ভালো নেই। আমাকে দেশে
ফিরে যেতে হবে। দেশে গিয়ে দল
গোছানোর কাজকে গুরুত্বের সঙ্গে এগিয়ে
নিতে হবে।”
খালেদা জিয়া বলেন, “দেশের মানুষ আজ
মোটেও ভালো নেই, মোটেও শান্তিতে নেই।
প্রতিনিয়ত জুলুম-অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে
যাচ্ছে। দেশে এখন রাজতন্ত্র কায়েম
হয়েছে। রাজতন্ত্রের জন্য আছেন একজন
লেডি হিটলার। কারণ তিনি যা হুকুম দিচ্ছেন,
নির্দেশ দিচ্ছেন; তার সৈন্য-সামন্তরা যারা
আছে, অর্থাৎ প্রশাসন, তারা সেভাবে কাজ
করছেন। সবকিছু এই এক ব্যক্তির কথামতো
চলে।”
শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর
বিবিসিকে দেওয়া শেখ হাসিনার এক
সাক্ষাৎকার তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন,
“হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমি বাংলাদেশে
যাব রাজনীতি করার জন্য নয়, প্রতিশোধ
নিতে’। তিনি দেশ গড়তে আসেননি। তিনি
এসেছেন দেশ ধ্বংস করতে।”
তিনি আরো বলেন, “এক ব্যক্তি ক্ষমতার
লোভে বাংলাদেশে ‘রাজতন্ত্র’ কায়েম
করেছেন। তার দুঃশাসনে দেশের মানুষ
ভালো নেই। দেশে যা কিছু ঘটছে, সবকিছুর
জন্য লেডি হিটলার শেখ হাসিনা ও তার
বাহিনী জড়িত। এ অপশক্তিকে সরাতে
জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি
আমি আহ্বান জানাচ্ছি।”
‘গণতন্ত্রহীন বলেই দেশে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে’
উল্লেখ করে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন,
“গণতন্ত্র নেই বলেই দেশে একের পর দুর্ঘটনা
ঘটছে। আর এজন্য বিএনপিকে দোষারোপ
করা হচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য
সরকারই দায়ী। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের
জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
গণতন্ত্রে ফিরতে হবে। দেশ রক্ষায় জাতীয়
ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “গণতন্ত্রের জন্য অনেক
সংগ্রাম করেছি। এবারো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারই
আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য। গণতন্ত্র
পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত লড়াই অব্যাহত
রাখা আমার অঙ্গীকার। ভবিষ্যতে
প্রতিহিংসা নয়, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ
চালানোর প্রতিশ্রুতি আমি দিচ্ছি। বিভক্তি
নয়, আমরা একতায় বিশ্বাস করি।”
জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্য আওয়ামী লীগ
সরকারকেই দায়ী করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা সরকার বোঝাতে
চাইছে, আমরা যদি চলে যাই তবে বিএনপি
এলে জঙ্গিদের উত্থান হবে। কিন্তু দেখেন,
জঙ্গিদের উত্থান কিন্তু আওয়ামী লীগের
সময় হয়েছে। তারা একটা জঙ্গিকেও ধরেনি।
আমরা এসে সব জঙ্গিকে ধরেছি। বিচার
করেছি।”
সরকারকে হটাতে ব্যর্থতার জন্য ঢাকা শহরে
শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারার
কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন
বলেন, “আন্দোলন ঢাকায় সেভাবে করা সম্ভব
হয়নি। ঢাকা শহরে বের হলেই গুলি করে দেয়।
তবে সারা দেশে বিএনপি যে আন্দোলন
করেছে, স্বাধীনতার সময়, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও
তা হয়নি।”
তিনি গণমাধ্যমে দেওয়া পুলিশের ভাষ্যের
উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “আন্দোলন দমাতে পুলিশ
গাড়ি পুড়িয়ে সেই দায় বিএনপির নেতা-
কর্মীদের ওপর চাপিয়েছে। একথা পুলিশ
অফিসাররাই প্রকাশ্যে স্বীকার করছে। হুমকি
দিয়ে তারা এও বলেছে, তারাই সরকারকে
ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে।”
তিনি আরো বলেন, “শেখ হাসিনা আজীবন
ক্ষমতায় থাকতে বিএনপির নেতাকর্মীদের
ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। বিএনপি ভাঙার
ষড়যন্ত্র করছে। এসবে কোনো ফল হবে না।
বিএনপি কেউ ভাঙতে পারেনি। বহু চেষ্টা
করেছে, কিন্তু পারেনি। বিএনপিকে ভাঙা
যাবে না। সত্যি কথাই বলি, এরশাদ তেমন
করেনি। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দীনও কম করেনি।
পারেনি। শেখ হাসিনাও পারেনি। পারবে
না।”
তিনি বলেন, “সাত বছরে বিএনপির তিন
হাজার নেতাকর্মীকে খুন, এক হাজার
দুশোজনকে গুম, এক হাজার ১২ জনকে
ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। র্যাবের
মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ কত মানুষকে
যে মেরেছে তার হিসাব নেই।”
বর্তমান সংসদকে অবৈধ অভিহিত করে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া
বলেন, “এমপি হওয়ার যোগ্যতা নেই এমন
অনেককে মন্ত্রী করা হয়েছে। আর বর্তমানে
সংসদে কোনো কাজ হয় না, শুধু খালেদা
জিয়া, তারেক রহমান আর জিয়াউর রহমানকে
গালিগালাজ করা হয়। বর্তমানে বেসামরিক
প্রশাসনকে পুরোপুরি দলীয়করণ করে অনেক
যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তাকে দায়িত্বের
বাইরে রাখা হয়েছে।”
দেশে দল গঠনের অসমাপ্ত কাজ কাজ শেষ
করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার দেশে
ফেরা অত্যন্ত প্রয়োজন। গিয়ে আমাকে
বাকি কাজগুলো করতে হবে। এখানে আমার
পরিবারের লোকজন আমাকে যেতে দিতে
দেয় না। কিন্তু আমাকে যেতে হবে। স্থায়ী
কমিটির নেতাদের আমি অনেক কিছু
দেখিয়ে এসেছি। কিন্তু কিছু হলে ওরা
সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সেজন্য আমার
যাওয়াটা প্রয়োজন। তাই আমাকে যেতেই
হবে। দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “দেড় মাসে এখানে
থেকে অনেক কিছু দেখেছি, খুব ভালো
লেগেছে। তাদের যে আইন-শৃঙ্খলা এবং
পরিপাটি যেসব আইন আছে সেগুলো থেকে
আমার মনে হয়, অনেক ভালো জিনিস শেখার
আছে। শুধু শেখার নয়, এসব আইন-কানুন
বাংলাদেশে বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে।”
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ
মালেকের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা
করেন সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ।
খালেদা জিয়ার এ সভা চলাকালে যুক্তরাজ্য
আওয়ামী লীগের একদল নেতাকর্মী
হোটেলের বাইরে বিক্ষোভ করেন। দেড়
ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ শেষে অর্ধশতাধিক
নেতাকর্মীর বিক্ষোভটি শেষ হয়। আর
খালেদা জিয়ার সুধী সমাবেশ শেষ হয় রাত
সাড়ে ১১টায়।
উল্লেখ্য, ১৬ সেপ্টেম্বর চোখের চিকিৎসা
করাতে লন্ডনে আসেন খালেদা জিয়া। তার
দেশে ফেরার ব্যাপারে দলের নেতারা
সুনির্দিষ্ট করে কিছুই বলছিলেন না। এরই
মধ্যে শিগগিরই দেশে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন
খালেদা জিয়া নিজেই।
তিনি বলেন, “এক-এগারো সরকার আমাকে
বিদেশে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করে। আমি
বলেছিলাম, বিদেশে আমার কোনো ঠিকানা
নেই। দেশ ও দেশের মাটিই আমার ঠিকানা।
দেশের মানুষই আমার একমাত্র ভরসা। আমি
বিদেশে যাইনি। দেশকে অবৈধ সরকারের
হাত থেকে সেদিন রক্ষা করা গেলেও
বাকশালী স্বৈরতন্ত্র এখনও অব্যাহত আছে।”
যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত সুধি সমাবেশে
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক
রহমান বলেন, “দেশের জন্য, দেশের মানুষের
জন্য, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য যাদের
সৎ কোনো পরিকল্পনা থাকে না, তারা
গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। মানুষের উপরে
আস্থা নেই বলে আওয়ামী লীগ একটি
ফ্যাসিস্ট দলে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতায়
থাকতে তারা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ
বেছে নিয়েছে। কারণ অবৈধ ক্ষমতায় টিকে
থাকতে হলে তাদের এই সন্ত্রাসের ওপর
দিয়েই টিকে থাকতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “বর্তমান সরকার যে
সন্ত্রাসবাদের ওপর টিকে আছে তার বড়
প্রমাণ হলো, বাংলাদেশের বর্তমান
পরিস্থিতি। জনগণ যেন সরকারের বিরুদ্ধে
প্রতিবাদ করতে না পারে এজন্য সরকার
জনগণকে ব্যস্ত রাখার জন্য বিভিন্ন গল্প
তৈরি করে।”
এদিকে নিউইর্য়ক টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে,
শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বর মাসে নিউইর্য়ক
সফর করেন। এসময় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ
কয়েকটি দেশের সরকার তাকে বাংলাদেশে
বিদেশি হত্যাকাণ্ডের কথা জানায়। কিন্তু
দেখা যায়, শেখ হাসিনা সরকার ও তার
নেতা-মন্ত্রীরা তা আমলে না নিয়ে উল্টো
তথ্যদাতাদের গালমন্দ করেছে।
সেখানে আরো বলা হয়, এদিকে তারেক
রহমান মনে করছেন, সেপ্টেম্বরে শেখ
হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের
জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট আর্টিকেল ও বক্তব্যের
পরই দেশে এ ধরনের জঙ্গিবাদের ঘটনা
ঘটছে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত