আপডেট :

        ধর্ষকের শাস্তি সবার সামনে হোক: সোহম

        বায়ার্নের দাপটে বিদায় ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গো, পিএসজির মুখোমুখি কোয়ার্টারে

        ধর্ষণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুরাদনগরে রাজনৈতিক উত্তেজনা: কে দায়ী?

        ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি: ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি

        এশিয়া কাপের সম্ভাব্য সূচি জুলাইয়ে প্রকাশিত হবে

        সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যর্থ: জুলাই সনদ প্রকাশ করবে এনসিপি - নাহিদ ইসলাম

        রথযাত্রার উৎসবে বিপর্যয়: উড়িষ্যায় ভিড়ে পিষ্ট হয়ে ৩ মৃত, ১০ জন আহত

        মনু মিয়ার শেষ বিদায়ে অভিনেতা খায়রুল বাসারের মানবিকতার জয়

        মেসি-রোনালদো: সময় পেরিয়েও অপ্রতিরোধ্য ফুটবলের দুই কিংবদন্তি

        মুরাদনগরের অশান্তির জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দাতারা দায়ী: আসিফ মাহমুদ

        ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্পে পাকিস্তানে দুইবার কাঁপল ধরিত্রী

        হিরো আলমের যত্নে রিয়া মনি, প্রকাশ করলেন তার শারীরিক অবস্থা

        হাছিনা নয় শেখ হাসিনা নয়, তবুও বারবার বদলাচ্ছে স্কুলের নাম

        জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বাজেট: ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩২৩ কোটি টাকা

        কোকেন উৎপাদনে ঐতিহাসিক উচ্চতা, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উদ্বেগ

        ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক জোরদারে প্রস্তুত পুতিন, নতুন যোগাযোগের আভাস

        স্বর্ণের বাজারে ধস: এক মাসে সর্বনিম্ন দামে পৌঁছাল হলুদ ধাতু

        সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, ৩০০ গাড়ি অপেক্ষায়

        ট্রাম্পের দাবি: খামেনির প্রাণ বাঁচিয়েছি, ধন্যবাদ পাইনি

        এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা: কেন্দ্রে প্রবেশ নিয়ে নতুন নিয়ম

লাইলাতুল ক্বদর - যে রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম

লাইলাতুল ক্বদর - যে রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম

লাইলাতুল ক্বদর আরবি শব্দ।  লাইলাতুল শব্দের অর্থ হলো রাত আর ক্বদর শব্দের অর্থ হলো মহিমা, সর্বোত্তম ইত্যাদি।  সুতরাং লাইলাতুল ক্বদর শব্দের অর্থ হলো মহিমান্বিত রাত, শ্রেষ্ঠ রাত।

লাইলাতুল ক্বদরের গুরুত্ব বা মাহাত্ম্য হলো এটি রমজান মাসের এমন
একটি রাত যেটি বছরের অন্যান্য রাতের চেয়ে অনেক অনেক উত্তম রাত এবং এটাই সেই রাত, যে রাতে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল।

কোরআনে উল্লেখ আছে, ‘আমি এই কোরআনকে নাযিল করেছি শবে ক্বদরের রাতে।  শবে ক্বদর হলো হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।’
(আল-কদর, আয়াত ১-৩)

এ রাত সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে যে, এই রাতে করা কোনো নেক আমল অন্য হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।  এই হাজার মাসকে যদি ১২ দিয়ে ভাগ করা হয় তাহলে হিসাব দাঁড়ায় ৮৩ বছরের চেয়েও কিছু বেশি এবং এটা মানুষের গড় আয়ুর চেয়ে অনেক বেশি।  অর্থাৎ শুধু এই একরাতে ইবাদত করা হলে তার মর্যাদা সারাজীবন ইবাদত করার  চেয়ে আরো অনেক বেশি। 

এটা এমন এক রাত যেখানে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত আল্লাহর বিশেষ রহমত এবং শান্তি বর্ষিত হতে থাকে।  পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক বলেছেন, ‘আমি এ কোরআনকে নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে, এই রাত হলো সেই ভাগ্য রাত; যাতে প্রত্যেক  গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরিকৃত হয়’।
(আদ-দুখান, আয়াত ৩-৪)

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি কোরআনকে বুঝার জন্য সহজ
করে দিয়েছি, অতএব কোনো চিন্তাশীল
আছে কি?’ (আল-ক্বামার, আয়াত ৪০)

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘লাইলাতুল ক্বদরের রাতে যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে পুরস্কারের আশায় ইবাদাত করে আল্লাহ তার পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেবেন’।  (সহীহ আল-বুখারী, হাদিস ২০১৪)

সুতরাং এটা হলো দয়া ও মহিমার রাত।

লাইলাতুল ক্বদরের নির্দিষ্ট তারিখ সম্পর্কে চল্লিশটিরও বেশি মতামত পাওয়া যায়।  কেউ বলেন রমাদ্বানের প্রথম রাত, কেউ বলেন সপ্তম রাত, আবার কেউ বলেন রমাদ্বানের ঊনিশতম রাত।কিন্তু এ ব্যাপারে সবচেয় সঠিক মত হলো রমাদ্বানের শেষ দশদিনের কোনো এক বিজোড় রাত্রিতে।

এ ব্যাপারে হাদিসে বলা হয়েছে যে, ‘রমজান মাসের শেষ দশদিনের বিজোড় রাত্রিগুলোতে লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করো। ’ (সহীহ আল-বুখারী, হাদিস ২০১৭)

অপর হাদিসে বলা হয়েছে যে, উবাই বিন কা’ব হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, ‘লাইলাতুল ক্বদর সম্ভবত রমাদ্বানের ২৭তম রাতে।  কারণ ওই রাতে মহানবী (সা.) আমাদের নামাজে দাঁড়াতে বলতেন।  (সহীহ মুসলিম, হাদিস ২৩৬৪)

বলা হয়েছে যে, ‘লাইলাতুল ক্বদর রমাদ্বান মাসের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ এবং রমযানের শেষ রাতে খোঁজ করো।’  (সুনান আত-তিরমিযী, হাদিস ৭৯৪)
অপর হাদিসে আছে, ‘রমাদ্বানের শেষ দশ রাতে লাইলাতুল ক্বদর খোঁজ করো। তবে যদি অপরাগ হও তাহলে শেষ রাতে খোঁজ করো।  (সহীহ মুসলিম, হাদিস ২৬২১)

আরো বলা হয়েছে যে, ‘লাইলাতুল ক্বদর রমজানের শেষ সাতদিনের ভেতর রয়েছে।’  (সহীহ আল-বুখারী, হাদিস ২০১৫)
সুতরাং এসব আলোচনা হতে আমরা জানতে পারলাম যে, লাইলাতুল ক্বদর রমজানের শেষ দশদিনের কোনো এক রাতে।

এ কারণে অধিকাংশ আলিমগণ বলেন যে, লাইলাতুল ক্বদরের নির্দিষ্ট তারিখ কেউ জানে না, তবে এটা রমজান মাসের শেষ দশদিনের কোনো এক বিজোড় রাতে এবং সম্ভবত ২৭ রমজানের রাতে কিন্তু নির্দিষ্ট তারিখ বাতলে দিতে পারেনি।

মুয়াবিয়া (রা.)‎ থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, লাইলাতুল ক্বদর হচ্ছে সাতাশের রাত।  আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি নবী মুহাম্মাদের (সা.) কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেন হে নবী, আমি খুব বৃদ্ধ ও অসুস্থ লোক, আমার দ্বারা দাঁড়িয়ে থাকা খুব কঠিন, অতএব আমাকে এমন এক রাতের কথা বলুন, যেন সে রাতে খোদা আমাকে লাইলাতুল ক্বদর দান করেন।  তিনি বললেন, তোমার উচিত সাতাশ আকড়ে ধরা।
 
নামাজ

রাসুল পাক (স.) বলেন, ‘ক্বদরের রাতে যে কেউ চার রাকাত নামাজ এভাবে আদায় করবে যে, প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা ক্বদর একবার ও সুরা এখলাস সাতাশবার পড়বে, সে যেন মায়ের পেট হতে নিষ্পাপ হয়ে ভূমিষ্ট হলো।  বেহেশতে তার জন্য অসংখ্য বালাখানা তৈরি হবে।

অন্য হাদিসে আছে, ওই রাতে যে কেউ দুই রাকাত নামাজ এভাবে পড়বে যে, প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা ক্বদর একবার ও সুরা ইখলাস তিনবার পড়বে, আল্লাহ তা’আলা শবে ক্বদরের পূর্ণ সওয়াব তাকে দান করবেন। 

আর এক হাদিসে আছে যে, কেউ ক্বদরের রাতে এভাবে চার রাকাত নামাজ আদায় করবে যে, প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা ক্বদর তিনবার ও সুরা ইখলাস পঞ্চাশবার পড়বে সালাম ফিরিয়ে সেজদায় পড়ে ‘সোবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার’ একবার বলবে।  আল্লাহ তার দোয়া কবুল করবেন, সমুদয় গোনাহ মাফ করবেন ও অগণিত নিয়ামত তাকে দান করবেন।  ( ত্রুটি মার্জনীয়)


শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত