আপডেট :

        সোমবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় বৃষ্টির আভাস

        ইসলাম ধর্মকে কটূক্তি করার অভিযোগের পর সঞ্জয় রক্ষিত আটক

        গ্রেপ্তার হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টেইন

        পাঁচ জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে

        নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে ২ বাংলাদেশির মৃত্যু

        কিছু জেলার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা আগামীকাল বন্ধ

        লাউয়াছড়ায় শতাধিক গাছ বিধ্বস্ত

        শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের ৭১তম জন্মদিন উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন

        কোনো জেলা তাপমাত্রা যদি ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে, সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে

        কোনো জেলা তাপমাত্রা যদি ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে, সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে

        পদ্মা সেতুতে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা টোল আদায়ের মাইলফলক অর্জন

        প্রচণ্ড গরমে মৃত্যু হলো স্কুল শিক্ষকের

        মে মাস থেকে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স ও এয়ার চায়না বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করবে

        দিল্লি প্রধান লাভলির পদত্যাগ

        দিল্লি প্রধান লাভলির পদত্যাগ

        বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর মন্তব্য

        আজ বিকেল ৪টায় শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ

        ব্যাংক খাতে ডলারের সরবরাহ বাড়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে এলসি খোলা এবং নিষ্পত্তি উভয়ই বেড়েছে

        বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার অস্কার

        চট্টগ্রামে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট চলছে

হজের সময় পরিবেশ ও পরিস্থিতি

হজের সময় পরিবেশ ও পরিস্থিতি

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন : ‘হজ সুপরিচিত মাসগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর যে ব্যক্তি এ মাসগুলোতে হজ করার নিয়্যাত করবে, তার জন্য হজের সময় স্ত্রী সহবাস, অন্যায় আচরণ এবং ঝগড়া-বিবাদ করা বৈধ নয়। আর তোমরা যে উত্তম কাজগুলো কর, আল্লাহ তা জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর, নিঃসন্দেহে সবচেয়ে উত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহভীতি। অতএব, হে বুদ্ধিমান ব্যক্তিগণ, তোমরা আল্লাহকেই ভয় কর’। মহান আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি হজ ইবাদত। হজ পালন করতে হলে প্রত্যেক হজ পালন ইচ্ছুক ব্যক্তির হজের সময় পরিবেশ পরিস্থিতি ও করণীয় সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে। কিন্তু অতিব দুঃখের বিষয় হল আমরা অনেকেই এ বিষয় সম্পর্কে অবহিত নই। নিম্নে এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হল।* হজের সময় : আমরা জানি যে, শরিয়তের বিধান মতে হজের মাস হল শাওয়াল, জিলকাদ ও জিলহাজ্জ। এখন প্রশ্ন হল, তাহলে কি শাওয়াল বা জিলকাদ মাসে হজ করা যাবে? উত্তরে বলব : না। হজ করতে হবে জিলহাজ্জ মাসে নির্দিষ্ট সময়ে। শাওয়াল, জিলকাদ মাসে হজের প্রস্তুতি নিতে হবে। কেমন প্রস্তুতি নিতে হবে? হজের উদ্দেশ্যে গমন বা রওয়ানা থেকে শুরু করে মক্কা মদিনায় অবস্থান ও ওমরা পালনসহ সকল পস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।* হজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা : আমরা যে দেশেই (সৌদি আরব ব্যতীত) থাকি না কেন হজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করব। আমি বাংলাদেশের হজযাত্রীদের কথা বলব। আমরা প্রথমে বাংলাদেশের যে কোন এয়ারপোর্ট থেকে বিমানে আসন গ্রহণ করব। বাংলাদেশের হাজীরা কখন এবং কোন স্থান থেকে ইহরাম বাঁধবে। যেহেতু বাংলাদেশের হাজীদের নির্ধারিত ইহরাম বাঁধার স্থান ইয়ালামলাম। সেহেতু বাংলাদেশের হাজীরা বিমানে উঠার পূর্বে অথবা বিমানে উঠে অথবা বিমানে সৌদি আরব প্রবেশের পর অথবা সর্বশেষ ইয়ালামলাম থেকে ইহরাম বাঁধবে। বিমানে ওঠার আগে ইহরাম বেঁধে নেয়াই উত্তম।* সৌদি আরব পৌঁছা ও করণীয় : সৌদি আরব পৌঁছার পর- (ক) ব্যক্তি যদি ইফরাদ হজ করতে ইচ্ছুক তাহলে সে ওমরাহ করবে না বরং সে ইহরাম পরা অবস্থায় থাকবে। ইহরাম ছেড়ে দিতে পারবে না। (গোসল করার জন্য ও ইহরামের কাপড় পরিস্কার করার জন্য) প্রয়োজনে সে ইহরামের কাপড় পরিবর্তন করতে পারবে। (খ) ব্যক্তি যদি ক্বিরান হজ করতে ইচ্ছুক তাহলে সে ওমরাহ করবে কিন্তু সে ইহরামের কাপড় খুলতে পারবে না। বরং সে ইহরাম পরা অবস্থায় থাকবে। ইহরাম ছেড়ে অবস্থান করতে পারবে না। (গোসল করার জন্য ও ইহরামের কাপড় পরিস্কার করার জন্য) প্রয়োজনে সে ইহরামের কাপড় পরিবর্তন করতে পারবে। (গ) ব্যক্তি যদি তামাত্তু হজ করতে ইচ্ছুক তাহলে সে ওমরাহ করবে। ওমরাহ করার পর সে হালাল হয়ে যাবে বা ইহরামের কাপড় খুলে ফেলে স্বাভাবিক অবস্থায় হজ পর্যন্ত অবস্থান করবে এবং সে ৮ জিলহাজ্জ সকালে পুনরায় হজের জন্য ইহরাম বাঁধবে।* মদিনায় অবস্থানকালীন সময় : মদিনায় অবস্থানকালে হাজী সর্বদা ইবাদত বন্দেগীতে লিপ্ত থাকবে। মাসজিদে নববীতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার চেষ্টা করবে। (সাওয়াবের নিয়্যাত ব্যতীত) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবুবকর রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু, ওমর রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু-এর রওজা জিয়ারত করবে। বাকিতে সাহাবাসহ সকলের কবর জিয়ারত করবে। ওহুদ, খন্দক, কিবলাতাইন, মসজিদে কুবা ইত্যাদি শরিয়তের নির্দেশমত পরিদর্শন করবে। উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত স্থানসমূহ পরিদর্শন করা হাজীর জন্য অপরিহার্য নয় এবং উপরোক্ত স্থানসমূহে হাজী কখনও বিদআত ও শিরক করতে পারবে না।* মক্কায় অবস্থানকালীন সময় : মক্কায় অবস্থানকালে হাজী সর্বদা ইবাদত বন্দেগিতে মগ্ন থাকবে। মাসজিদুল হারামে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার চেষ্টা করবে। মদিনার ন্যায় মক্কায় উল্লেখযোগ্য স্থানসমূহ শরিয়তের নির্দেশমত পরিদর্শন করবে। উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত স্থানসমূহ পরিদর্শন করা হাজীর জন্য অপরিহার্য নয় এবং উপরোক্ত স্থানসমূহে হাজী কখনও বিদআত ও শিরক করতে পারবে না।* ৮ জিলহাজ্জে করণীয় : ৮ জিলহাজ্জ হজের প্রথম দিন। ইফরাদ ও ক্বিরান হজ আদায়কারীগণ পূর্ব থেকেই ইহরাম অবস্থায় আছে। তামাত্তু হজ আদায়কারীগণ ইহরাম বাঁধবে। আমাদের দেশের প্রায় সব হাজীই তমাত্তু হজ পালন করে থাকেন। সকলেই হজের নিয়্যাতে তালবিয়া পাঠ করবে। নিয়্যাত শেষে তালবিয়া পাঠ করলেই ইহরাম আরম্ভ হল। এখন থেকেই ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ সকল কাজ থেকে বিরত থাকবে। এ দিনের সূর্যোদয়ের পর সকালে মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশ্যে সকল হাজী রওয়ানা হবে। মক্কায় কেউ অবস্থান করতে পারবে না। ৮ জিলহাজ্জ মিনাতে অবস্থান করবে এবং সেখানে যোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও পরদিন ৯ জিলহাজ্জ ফজরের নামাজ আদায় করবে।* ৯ জিলহাজ্জে করণীয় : ৯ জিলহাজ্জ মিনাতে ফজরের নামাজ পড়ে আরাফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। আরাফাতে যোহর ও আসরের নামাজ একত্রে যোহরের ওয়াক্তে আদায় করবে। তারপর আরাফাতে মাগরিবের নামাজ না পড়েই সূর্যাস্তের পর আরাফাত ত্যাগ করতে হবে। কোন গ্রহণযোগ্য ওজর ব্যতীত সূর্যাস্তের পর আরাফাতে অবস্থান করা যাবে না। বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী, জিকর আযকার, দুআ-দরুদ ও কান্নাকাটি করতে হবে।উল্লেখ্য যে, সকল হাজীকে হুদুদে আরাফাতের মধ্যে অবস্থান করতে হবে। অল্প সময়ের জন্য হলেও (যাকে অবস্থান বলা হয়) অবস্থান করতে হবে। আমি অনেক হাজীকে দেখেছি যে, তারা হুদুদে আরাফাতের বাহিরে অবস্থান করেছেন। (কারণ হল আরাফাহ মাঠের কিছু অংশ সীমানার বাহিরে রয়েছে) তাদেকে যখন প্রশ্ন করলাম যে, আপনারা কি অল্প সময়ের জন্যও হুদুদে আরাফাতের ভিতরে আসেননি বা অবস্থান করেননি? উত্তরে তারা বললেন- না। অথচ শরিয়তের মাসআলায় আরাফাতের ময়দানে অবস্থান না করলে তার হজ আদায় হবে না। কারণ ৯ জিলহাজ্জ আরাফাতে অবস্থান করা হজের অন্যতম প্রধান রুকন বা ফরজ।০৯ জিলহাজ্জ সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ না পড়েই আরাফাত ত্যাগ করে মুযদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে হবে। মুযদালিফা পৌঁছতে যতক্ষণই সময় লাগবে তারপর মাগরিব ও এশার নামাজ একসাথে এশার ওয়াক্তে আদায় করবে এবং মুযদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করবে। (ওয়াজিব)* ১০ জিলহাজ্জে করণীয় : ১০ জিলহাজ্জ মুযদালিফাতে ফযরের নামাজ আদায় করে সূর্যোদয়ের পর মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে হবে। মিনায় পৌঁছে জামারাতে কুবরাতে (জামারাতে উসতা ও জামারাতে ছোগরাতে নয়) কঙ্কর নিক্ষেপ (ওয়াজিব) করে (এদিন সূর্যোদয়ের পর হতে দ্বিপ্রহর পর্যন্ত কঙ্কর নিক্ষেপ করতে পারবে, দ্বিপ্রহর পর মাকরুহ) যাদের উপর কুরবানি ওয়াজিব তারা কুরবানি (ওয়াজিব) করে হলক বা কসর (ওয়াজিব) করবে (হলক বা কসর করার পর স্ত্রী সহবাস ব্যতীত সব কিছু হালাল)। সম্ভব হলে মক্কায় গিয়ে তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ) করে মিনায় ফিরে আসবে। (তাওয়াফে জিয়ারত করার পর স্ত্রী সহবাসসহ সব কিছু হালাল)।* ১১ জিলহাজ্জে করণীয় : ১১ জিলহাজ্জ মিনাতে (এদিন দ্বিপ্রহরের পর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কঙ্কর নিক্ষেপ করতে পারবে, সূর্যাস্তের পর মাকরুহ) প্রথমে জামারাতে ছুগরাতে, তারপর জামারাতে উসতাতে, তারপর জামারাতে কুবরাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করবে। (ওয়াজিব) যদি ১০ জিলহাজ্জ তাওয়াফে জিয়ারত না করে থাকে তাহলে মক্কায় গিয়ে তাওয়াফে জিয়ারত করবে।* ১২ জিলহাজ্জে করণীয় : ১১ জিলহাজ্জের ন্যায় ১২ তারিখেও কঙ্কর নিক্ষেপ করবে। (ওয়াজিব) কুরবানি ও তাওয়াফে জিয়ারত না করে থাকলে তা আদায় করবে।* ১৩ জিলহাজ্জে করণীয় : যদি ১২ জিলহাজ্জ মিনা ত্যাগ না করে তাহলে এদিন তিন স্থানেই কঙ্কর নিক্ষেপ করবে এবং মক্কায় ফিরে আসবে। মক্কা বাহিরের লোক হলে তাওয়াফে বিদা করে বিদায় নিবে। (ওয়াজিব)

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত