আপডেট :

        অবৈধ অভিবাসন দমনে হন্ডুরাস ও উগান্ডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত চুক্তি

        যুক্তরাষ্ট্রে রেডিওঅ্যাকটিভ শঙ্কায় ওয়ালমার্টের চিংড়ি পণ্য প্রত্যাহার

        ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে ঢুকতেই দাম কমতে শুরু করেছে

        মেইল-ইন ভোট বন্ধ করতে পারবেন কি ট্রাম্প?

        ইসরায়েল গাজাযুদ্ধে ১৯ হাজার শিশু হত্যা করেছে

        টেক্সাসে ভুলে মুক্তি পাওয়া কয়েদিকে খুঁজছে পুলিশ

        সিলেটে পাথরের সঙ্গে শাহ আরেফিন টিলাও লুট হয়ে গেল

        ডাকসুর আজীবন সদস্যের প্রস্তাবে হাসিনা মানতে পারেননি ‘ভেটো’, প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হামলা

        চীনের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে স্বস্তিতে ভারত

        যুক্তরাষ্ট্রে শিপিং জালিয়াতি মামলায় ক্যালিফোর্নিয়ার এক ব্যক্তির কারাদণ্ড

        আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাত্রী বেড়ে রেকর্ড গড়ল অন্টারিও বিমানবন্দর

        ক্যালিফোর্নিয়ায় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু

        মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ৬,০০০ শিক্ষার্থী ভিসা বাতিল করেছে

        বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু

        সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেল এজেন্ট মোতায়েন, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ নিউসমের

        ক্যালিফোর্নিয়ায় পানির নিচ থেকে নিখোঁজ মা ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার

        ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল গার্ড পাঠাচ্ছে তিন রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্য

        হারিকেন এরিন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দিকে ধেয়ে আসছে, আকারে বড় হচ্ছে ঝড়

        আনাহাইমে কার ওয়াশ ও হোম ডিপোতে অভিবাসন অভিযান, আটক একাধিক ব্যক্তি

        সান বার্নার্ডিনোতে অভিবাসন অভিযানে ফেডারেল এজেন্টের গুলি

মেসি ম্যাজিকে ইকুয়েডরকে উড়িয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা

মেসি ম্যাজিকে ইকুয়েডরকে উড়িয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা

আরও একটি দুর্দান্ত ম্যাচ উপহার দিলেন লিওনেল মেসি। প্রায় একা হাতে জাদুকরী পারফরম্যান্সে আর্জেন্টিনাকে তুললেন সেমিফাইনালে। প্রথমে জোড়া গোল করালেন দুই সতীর্থকে, পরে নিজেই ফ্রি-কিক থেকে করলেন অবিশ্বাস্য এক গোল।

মেসির এক গোল আর জোড়া এসিস্টের ম্যাচে ইকুয়েডরকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চলতি কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলো আর্জেন্টিনা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ উরুগুয়েকে বিদায় করে সেমির টিকিট পাওয়া কলম্বিয়া।

অথচ ম্যাচের শুরুটা ছিল মেসির জন্য হতাশাময়। ম্যাচের বয়স তখন ২২ মিনিট। গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি। তবে প্রথমার্ধেই ভুলের মাশুল দিয়েছেন তিনি, সহায়তা করেছেন রদ্রিগো ডি পলের গোলে।

পরে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ৮৪ মিনিটের সময় মেসির পাস থেকেই দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন লাউতারো মার্টিনেজ। আর শেষ বাঁশি বাজার কয়েক মিনিট আগে দর্শনীয় এক ফ্রি-কিকে ইকুয়েডরের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন আর্জেন্টাইন জাদুকর।

বলিভিয়ার বিপক্ষে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ থেকে ৭টি পরিবর্তন নিয়ে এ ম্যাচের একাদশ সাজিয়েছেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। গোলবারের নিচে ফিরেছেন প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আক্রমণে মেসির দুইপাশে ফেরানো হয়েছে লাউতারো মার্টিনেজ এবং নিকোলাস গনজালেজকে।

অবশ্য প্রথমার্ধে তেমন কোনো পরীক্ষাই দিতে হয়নি আর্জেন্টাইন গোলরক্ষককে। কেননা পুরো ৪৫ মিনিটে একটি শটও লক্ষ্য বরাবর করতে পারেনি ইকুয়েডর। অন্যদিকে ঠিক বিপরীত চিত্র ইকুয়েডের গোলরক্ষক হার্নান গালিন্দেজের। আর্জেন্টিনার অন্তত ৪টি প্রচেষ্টা ফিরিয়ে দিলেও, ৪০ মিনিটের সময় আর পারেননি আটকে রাখতে।

ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে প্রথমবার আর্জেন্টিনাকে হতাশ করেন গালিন্দেজ। ইকুয়েডরের ডি-বক্সের ডান দিক দিয়ে লাউতারো মার্টিনেজকে দারুণ এক পাস এগিয়ে দিয়েছিলেন মিডফিল্ডার লেয়ান্দ্র পারেদেস। কাছের পোস্ট দিয়ে শট নেন লাউতারো। কিন্তু সেটি ফিরিয়ে দেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক।

সেই যে ২ মিনিট থেকে শুরু, একের পর এক আর্জেন্টাইন আক্রমণ সইতে হয়েছে ইকুয়েডরের রক্ষণভাগকে। ম্যাচের ১৪ মিনিটের মাথায় জার্মান পেজ্জেল্লার পাস থেকে পাওয়া বলে ইকুয়েডরের রক্ষণ ভাঙেন লাউতারো, গোলরক্ষককে পরাস্ত করে শট নেন গোলের উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেটি হেড দিয়ে ক্লিয়ার করেন ডিফেন্ডার রবার্ট আরবোলেদা।

দুই মিনিট পর আরবোলেদাকে পরাস্ত করেন মেসি। কিন্তু তার শট ব্লক করেন আরেক ডিফেন্ডার পারভিস এস্তুপিনান। ফিরতি বলে শট নিয়েছিলেন লাউতারো। তবে সেটি পিয়েরো হিনকাপির গায়ে লেগে চলে যায় কর্নারে।

মেসির নেয়া সেই কর্নার থেকে বুক দিয়ে বল নামিয়ে ফাঁকায় থাকা গনজালেজকে দিয়েছিলেন পেজ্জেল্লা। কিন্তু এ তরুণ ফরোয়ার্ড বল মেরে বসেন সাইড নেটে। ফলে গোল পাওয়া হয়নি আর্জেন্টিনার। এ মিনিটখানেক পর গনজালেজকে ফাউল করে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন অ্যাঞ্জেলো প্রেসিয়াদো।

শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকা মেসির সামনে সহজতম সুযোগটি আসে ম্যাচের ২২ মিনিটে গিয়ে। ইকুয়েডরের কার্লোস গ্রুয়েজো ব্যাক পাস দিয়েছিলেন গোলরক্ষককে, মাঝপথে সেটি পেয়ে যান মেসি। শুধুমাত্র গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারলেই মিলতো গোল। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে ডানপাশের বারে মারেন মেসি।

এই গোল মিসের হতাশা নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করার পথে ছিল আর্জেন্টিনা। তবে বিরতির বাঁশি বাজার আগে মেসিই এনে দেন উদযাপনের উপলক্ষ্য। ইকুয়েডর রক্ষণকে পরাস্ত করে প্রথমে লাউতারোর উদ্দেশ্যে দুর্দান্ত এক পাস দিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু ডি-বক্স থেকে বেরিয়ে সেই বলটি ক্লিয়ার করেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক।

তবে ফিরতি বল পেয়ে যান মেসি। এবার ডি-বক্সের বাম পাশ থেকে নিচু ক্রস এগিয়ে দেন ফাঁকায় দাঁড়ানো রদ্রিগো ডি পলের উদ্দেশ্যে। গোল লাইনে দাঁড়ানো দুই ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে ম্যাচের প্রথম সাফল্য নিজের নামে করে নেন ডি পল। যা তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল।

বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও একটি সহজ সুযোগ এসেছিল আর্জেন্টিনার সামনে। ম্যাচের ৪৫ মিনিটের মাথায় মেসির ফ্রি-কিক থেকে হেড করেন নিকোলাস গনজালেজ। সেটি ঠেকিয়ে দেন গালিন্দেজ। তবে ফিরতি বলে আরও সহজ সুযোগ পান গনজালেজ। কিন্তু এবারও ব্যর্থ হন গোলে পরিণত করতে।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে নিজেদের খানিকটা গুছিয়ে নেয় ইকুয়েডর, মনোযোগ দেয় বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার দিকে। প্রথমার্ধে তারা লক্ষ্য বরাবর কোনো শট নিতে না পারলেও, দ্বিতীয়ার্ধে দুইটি শট করে আর্জেন্টিনার জাল বরাবর। কিন্তু একবারও পারেনি কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে।

অন্যদিকে আক্রমণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখে আর্জেন্টিনা। কিন্তু নিকোলাস গনজালেজের আরও একবার ব্যর্থতার কারণে ম্যাচের ৫০ মিনিটের সময় দ্বিতীয় গোল পাওয়া হয়নি আর্জেন্টিনার। অবশ্য সুযোগ পেয়েছিলেন লাউতারো-মেসিরাও। তারাও কাজে লাগাতে পারেননি।

শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ৮৪ মিনিটে গিয়ে ফুরোয় অপেক্ষা। ইকুয়েডরের রক্ষণভাগে দারুণ নৈপুণ্যে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন বদলি হিসেবে নামা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। তিনি বল এগিয়ে দেন মেসির উদ্দেশ্যে। সময় নষ্ট না করে ডি-বক্সে অপেক্ষায় থাকা লাউতারোকে পাস দেন মেসি। জোরালো শটে জাল কাঁপান লাউতারো।

এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার ঠিক আগে ডি মারিয়াকে ফাউল করেন হিনকাপি। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ভিডিও এসিস্ট্যান্ট রেফারির সহায়তা নিয়ে জানা যায় ফাউলটি ছিল ডি-বক্সের ঠিক বাইরে। তাই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বদলে দেয়া হয় ফ্রি-কিক এবং হলুদের বদলে লাল কার্ড দেখেন হিনকাপি।

ডি-বক্সের ঠিক দাগের ওপর থেকে নেয়া বাঁকানো ফ্রি-কিকে ইকুয়েডরের গোলরক্ষককে কোনো সুযোগই দেননি মেসি। স্কোরলাইন হয়ে যায় ৩-০, নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনার জয়।

চলতি কোপা আমেরিকায় মেসির এটি চতুর্থ গোল। পাশাপাশি তিনি করেছেন চারটি এসিস্টও। দেশের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের মিশনে দুর্বার গতিতেই ছুটছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এ ফুটবলার। এখন সেরা চারের লড়াইয়ে তাদের সামনে কলম্বিয়া বাধা।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত