অবৈধ অভিবাসন দমনে হন্ডুরাস ও উগান্ডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত চুক্তি
বিশ্বকাপ ফুটবলে ৯২ বছরের ইতিহাস ঘোচাবেন নারী রেফারি
পুরুষ বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাস ৯২ বছরের। যতবারই ফুটবলের এ মহাআয়োজন হয়েছে; কোনোবারই, কোনো কিছুতে ছিল না নারীর স্পর্শ। এবার ভাঙছে বৃত্ত। বিশ্বকাপে হাতে বাঁশি তুলে নিচ্ছেন নারী রেফারি। তাঁর চোখে-চোখে থাকবে ২২ পুরুষ ফুটবলারের গতিবিধি। আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কোস্টারিকা-জার্মানি ম্যাচে অভূতপূর্ব ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে। আল বায়াত স্টেডিয়ামে 'ই' গ্রুপের এ ম্যাচে রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন ফ্রান্সের স্টেফানি ফ্রাপা। এ ম্যাচে শুধু রেফারিই না, দুই সহকারী রেফারিও হবেন নারী। পতাকা হাতে দু'পাশের টাচ লাইনে সহকারী রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন ব্রাজিলের নেউজা বাক ও মেক্সিকোর কারেন ডিয়াজ মেডিনা।
কাতার বিশ্বকাপেই নারী রেফারিংয়ের নতুন মাইলফলকটি হতে যাচ্ছে, সেটা আগেই জানা ছিল। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা পুরুষদের 'বিশ্বকাপ' পরিচালনার জন্য ৩৬ রেফারির তালিকায় রেখেছিলেন তিন মহাদেশের তিন নারীকে। তাঁরা হলেন- জাপানের ইয়ামাশিতা ইয়োশিমি, রুয়ান্ডার সালিমা মুকাসাঙ্গা ও ফ্রান্সের স্টেফানি ফ্রাপা। আর বিশ্বকাপের ৬৯ সহকারী রেফারির তালিকায় জায়গা করে নেন আরও তিন নারী। তাঁরা হলেন- নেউজা বাক, কারেন ডিয়াজ মেডিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাথরিন নেসবিট। তবে ভাগ্যবতী বলতেই হচ্ছে স্টেফানি ফ্রাপাকে। অনেক প্রথমের সঙ্গে আরও একটি প্রথমে নিজের নাম জড়াতে যাচ্ছেন ৩৮ বয়সী এই ফরাসি রেফারি। কারণ তাঁর মাধ্যমেই পুরুষ বিশ্বকাপ ফুটবলে যুগান্তকারী ঘটনাটি ঘটছে। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই ফুটবল রেফারিংয়ে হাতেখড়ি ফ্রাপার। আর ১৮ বছর বয়সে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলের আসরে রেফারিং করেন। ২০১১ সালে ফ্রান্সের তৃতীয় বিভাগ ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এর পর একে একে নতুন সব মাইলফলকের সিঁড়ি ডিঙাতে শুরু করেন তিনি। ২০১৪ সালে প্রথম নারী হিসেবে লিগ টুর (দ্বিতীয় বিভাগ লিগ) ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পান ফ্রাপা। পরের বছরই কানাডায় অনুষ্ঠিত ফিফা নারী বিশ্বকাপের ম্যাচে বাঁশি বাজান। ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত ২০১৯ নারী বিশ্বকাপ ফাইনালে ম্যাচেও রেফারির দায়িত্ব পালন করেন। সে বছরই বিশ্বের সেরা নারী রেফারির পুরস্কার জেতেন তিনি।
২০১৯ সালে লিগ ওয়ানের (প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগ) প্রথম নারী রেফারি হন। একই বছর প্রথম নারী রেফারি হিসেবে উয়েফা সুপার কাপের ম্যাচ (লিভারপুল বনাম চেলসি) পরিচালনা করেন। প্রথম নারী হিসেবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপ লিগের ম্যাচে বাঁশি বাজান। এর পর ফিফার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ অফিসিয়ালের দায়িত্ব পান। বলাই বাহুল্য, সেটাও নারী রেফারিদের জন্য ছিল আরেকটি 'প্রথম'। বিশ্বকাপ ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে দারুণ খুশি ফ্রাপা, 'পুরুষ বিশ্বকাপ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া আসর। আমি ফ্রান্স ও ইউরোপের প্রথম রেফারি (নারী) ছিলাম। আমি জানি কীভাবে এই দায়িত্ব সামলাতে হবে।' বিশ্বকাপে নারী রেফারিদের অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে কাতার আসরটি মাঠে গড়ানোর আগে ফিফার রেফরিজ কমিটির চেয়ারম্যান পিয়েরলুইগি কলিনা বলেন, 'তাঁরা নারী, শুধু এ কারণেই বিশ্বকাপ রেফরি প্যানেলে তাঁদের রাখা হয়নি, বরং এটা বলা ভালো, তাঁরা ফিফা রেফারি।'
শেয়ার করুন