আপডেট :

        এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ

        একই সারিতে থাকবে পৃথিবী-সূর্য-বৃহস্পতি

        ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে ভিসাসেবা সীমিত করা হয়েছে

        সারা দেশেই শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে

        ভারতের জনগণ ও ভারত সরকারকে আমরা কখনোই এক করে দেখি না

        চিন্ময় সুবিচার পাবেন, প্রত্যাশা ভারতের

        পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলেন ইমরান

        পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলেন ইমরান

        বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১১

        ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর

        ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর

        গত দেড় দশকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নতির কথা

        বিটকয়েন: সর্বকালের সর্বোচ্চ ১ লাখ ডলার ছাড়ালো

        কাজে কোনো পর্দা থাকবে না: অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার

        শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম থেকে দ্রুত সরানোর নির্দেশ

        এতো বছর ভারত যা করতে চেয়েছে একপাক্ষিকভাবে চাপিয়ে দিয়েছে

        আসামে প্রকাশ্য স্থানে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ

        আসামে প্রকাশ্য স্থানে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ

        নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটনে বাংলাদেশের হাইকমিশন স্থাপন করা হচ্ছে

        আওয়ামী লীগ নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে, তথ্য আছেঃ কর্নেল অলি

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও অভিবাসীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও অভিবাসীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি

ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস

দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি হোয়াইট হাউসে ফিরে আসছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার ও বিভিন্ন সাক্ষাৎকার-বক্তৃতায় ট্রাম্প তার অভিবাসন পরিকল্পনার কথা খোলাখুলি আলোচনা করেছেন। এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কলেজ কিংবা ভার্সিটিতে পড়তে আসা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অভিবাসন নীতির বিষয়টিও।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন পরিকল্পনা নিয়োগকর্তা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং উচ্চতর দক্ষ পেশাদারদের উপর গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও পুনর্বাসনের জন্য অন্যান্য দেশ বেছে নিতে বাধ্য হবে এবং অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিবাসীদের ভাগ্যে দূর্ভোগ নেমে আসবে।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শাসনামল এবং দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার আগের প্রতিশ্রুতি অনুসারে এবং তার উপদেষ্টাদের পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য ঐচ্ছিক ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ সীমাবদ্ধ করা হচ্ছে এবং এমন সব পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে যার ফলে কর্মসংস্থান-ভিত্তিক গ্রিন কার্ডের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে যেতে হবে শিক্ষার্থীদের।

আন্তর্জাতিক ছাত্রদের উপর পূর্ববর্তী অভিবাসন বিধিনিষেধ

শ্রম সরবরাহ সীমিত বা হ্রাস করার জন্য ফেডারেল সরকারকে ব্যবহার করে ট্রাম্প প্রশাসন প্রথম মেয়াদে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ‘শ্রমিক বিভ্রান্তি’ এর উপর ভিত্তি করে অর্থনীতিবিদরা দাবি করছেন, অভিবাসী ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মূল বাসিন্দাদের নির্দিষ্ট সংখ্যক কাজের জন্য প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে।

ট্রাম্প প্রশাসন কোভিড -১৯ মহামারী চলাকালীন সময়ে অভিবাসী এবং কর্ম ভিসাধারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দিয়েছে, এমনকি অভিবাসী বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের উপরও নীতি প্রণয়ন করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ন্ত্রক এজেন্ডায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ১২ মাস কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জনের ঐচ্ছিক ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের জন্য অভিবাসন উদ্বেগ

২০২৪ সালের নির্বচানের আগে ট্রাম্প মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের গ্রিন কার্ড দেওয়ার ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক আলোচনা করেনি। এর ফলে অভিবাসন অ্যাটর্নিরা নতুন বিধিনিষেধ নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অভিবাসন বিষয়ে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ রয়েছে বলেও জানান অ্যাটর্নিরা।

গ্রিন অ্যান্ড স্পিগেলের ড্যান বার্গার বলেছেন, ‘আমার সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হল ট্রাম্পের নীতির ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং স্কলারগণ যুক্তরাষ্ট্রে আসতে নিরুৎসাহিত হবে। ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ভিসা আবেদনের সময়, ভিসা প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে যাওয়া, প্রক্রিয়াকরণের সময় বেড়ে যাওয়া, দীর্ঘ নিরাপত্তা পরীক্ষা এবং আরও অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। তিনি কোভিড-১৯ এর সময় ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ নীতি আরোপ করেন যা আন্তর্জাতিক প্রতিভা আকর্ষণে প্রভাব ফেলেছে’।

কর্নেল ল স্কুলের অধ্যাপক স্টিফেন ইয়েল-লোহারের মতে, ‘ট্রাম্পের নতুন এই প্রশাসন বিভিন্ন উপায়ে H-1B কাজের ভিসার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করার চেষ্টা করতে পারে। যেমন উচ্চ প্রত্যাখ্যানের হার, দীর্ঘ প্রক্রিয়াকরণের সময় এবং যোগ্যতার ক্ষেত্রে আও কড়াকড়ি নিয়ম আরোপ করা। H-1B একটি সাধারণ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা স্নাতক হওয়ার পরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে এবং কাজ করতে পারে, তাই H-1B ভিসার উপর বিধিনিষেধ তাদের উদ্বেগকে বাড়িয়ে তুলবে। এমনকি এতে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার সম্ভাবনা কমিয়েও দিতে পারে’।

ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধের প্রস্তাব করেছে। ইতোমধ্যে একটি আদালত ট্রাম্প কর্মকর্তাদের অভিবাসন স্ট্যাটাস থেকে বেরিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বেআইনি অবস্থান’ সম্পর্কে নীতি কঠোর করতে বাধা দিয়েছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনার ক্ষেত্রে একটি ‘নির্দিষ্ট ভর্তি সময়’ এর প্রস্তাবিত নিয়মও প্রকাশ করেছে। এর ফলে অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে সম্ভাব্যভাবে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে যেতে হতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার অনুমতি নাও পেতে পারে। এছাড়া ট্রাম্প কর্মকর্তারা দ্বিতীয় মেয়াদে চীনা শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন।

নতুন অভিবাসন বিধিনিষেধ গ্রীন কার্ড আবেদনকারীদের প্রভাবিত করতে পারে

নতুন অভিবাসন নীতিগুলো কর্মসংস্থান-ভিত্তিক গ্রিন কার্ডের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করা আবেদনকারীদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

প্রথমত, ট্রাম্পের কর্মকর্তারা শ্রমবাজারের বাইরে বেতনের মূল্য নির্ধারণের জন্য ‘নিয়ন্ত্রক উপায়’ ব্যবহার করে কর্মসংস্থান ভিত্তিক গ্রীন কার্ডের জন্য আবেদন বা অপেক্ষা করা ব্যক্তিদের বাধা দিতে পারে। ২০২০ সালে শ্রম বিভাগ একটি নিয়ম প্রকাশ করেছে যা পিইআরএম নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এইচওয়ানবি ভিসা ধারক এবং কর্মসংস্থান-ভিত্তিক অভিবাসীদের ন্যূনতম মজুরি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। ফলস্বরূপ অনেক ক্ষেত্রে, ন্যূনতম বেতন ১০০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

দ্বিতীয়ত, যদি এইচওয়ানবি পিটিশনের প্রত্যাখ্যান বেড়ে যায়, গ্রীন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করা ব্যক্তিদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হতে পারে। ট্রাম্পের শাসনামলে চাকরি অব্যাহত রাখার জন্য এইচওয়ানবি পিটিশনের প্রত্যাখ্যানের হার FY 2018 এবং FY 2019-এ প্রায় ৩% থেকে বেড়ে ১২% হয়েছে৷

তৃতীয়ত, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প কর্মকর্তারা কর্মসংস্থান-ভিত্তিক গ্রীন কার্ডের জন্য অপেক্ষারত এইচওয়ানবি ভিসাধারীদের স্পাউসদের জন্য কাজের অনুমোদন বাতিল বা কমিয়ে দিতে পারেন। এটি কর্মসংস্থান ভিত্তিক গ্রীন কার্ডের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করা কঠিন করে তুলবে।

ধারণা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি আন্তর্জাতিক ছাত্র এবং কর্মসংস্থান-ভিত্তিক গ্রীন কার্ডের আবেদনকারীদের জন্য কল্পনার চেয়ে অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এলএবাংলাটাইমস/ওএম

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত