বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
ট্রান্সজেন্ডার সেনা নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ট্রাম্পকে অনুমতি দিলো সুপ্রিম কোর্ট
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সাময়িকভাবে অনুমতি দিয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে, যাতে তিনি সেনাবাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে পারেন। এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আইনি লড়াই চলমান থাকলেও আদালত এই রায় দেন।
২০২৫ সালের শুরুর দিকে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর, ট্রাম্প একাধিক নির্বাহী আদেশে পেন্টাগনকে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের অনুমতি দেন। তবে মার্চ মাসে একটি ফেডারেল আদালত এই নীতি স্থগিত করে জানায়, ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের সামরিক দক্ষতার ওপর নেতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ প্রশাসন দেখাতে পারেনি।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে জরুরি আবেদন করা হয়, যেখানে বলা হয়—জাতীয় প্রতিরক্ষা বিষয়ে সামরিক বাহিনীর মতামতের প্রতি আদালতের শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত।
তবে আদালতের তিনজন লিবারাল বিচারপতি এই আদেশের বিরুদ্ধে মত দেন। সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশটি ছিল সইবিহীন।
ট্রাম্প তার নির্বাহী আদেশে বলেন, “ট্রান্সজেন্ডার পরিচয় সেনাসদস্যদের সম্মান, সত্যবাদিতা ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাত্রার সঙ্গে সাংঘর্ষিক” এবং এটি সামরিক প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
পরবর্তী সময়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে দায়িত্বে থাকা ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হবে।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নৌবাহিনীর ফাইটার পাইলট কমান্ডার এমিলি শিলিংসহ সাতজন ট্রান্সজেন্ডার সেনা সদস্য এবং একজন নতুন নিয়োগপ্রত্যাশী আদালতে মামলা করেন। তারা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা “সামরিক প্রস্তুতি ক্ষুণ্ন করে, দেশের নিরাপত্তা বিপন্ন করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করে।”
আইনি সহায়তা দানকারী সংগঠন ল্যাম্বডা লিগ্যাল এবং হিউম্যান রাইটস ক্যাম্পেইন ফাউন্ডেশন যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “আজকের সুপ্রিম কোর্টের আদেশ ট্রান্সজেন্ডার সেনাসদস্যদের জন্য এক হৃদয়বিদারক ধাক্কা। যাঁরা নিজেদের যোগ্যতা এবং দেশের প্রতি অঙ্গীকার প্রমাণ করেছেন।”
তারা আরও বলেন, “এই বৈষম্যমূলক নীতিকে কার্যকর করতে অনুমতি দিয়ে আদালত সাময়িকভাবে এমন একটি সিদ্ধান্তকে স্বীকৃতি দিল, যার মূল উদ্দেশ্য সামরিক দক্ষতা নয়, বরং পক্ষপাত।”
এর আগে ওয়াশিংটনের এক ফেডারেল বিচারক সারা দেশে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়া থেকে বিরত রাখতে আদেশ দিয়েছিলেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের ফলে সেই স্থগিতাদেশ আপাতত বাতিল হয়ে গেছে, যতদিন না মামলাটি নিম্ন আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি পায়।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট এই আদেশকে “সুপ্রিম কোর্টে আরেকটি বড় জয়” বলে উল্লেখ করেছেন।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে আরও কিছু পদক্ষেপ ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের ওপর প্রভাব ফেলেছে। তিনি একটি নির্বাহী আদেশে ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু দুটি লিঙ্গ—পুরুষ ও নারী—স্বীকৃতি দেবে।
এই আদেশের ফলে ট্রান্সজেন্ডারদের সরকারি নথিপত্র সংগ্রহে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায়, পাসপোর্টে আর ‘X’ (জেন্ডার নিরপেক্ষ) অপশন থাকবে না—জন্মসূত্রে নির্ধারিত লিঙ্গ অনুযায়ী ‘পুরুষ’ অথবা ‘নারী’ নির্বাচন করতে হবে।
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU) ট্রান্সজেন্ডার ও নন-বাইনারি ব্যক্তিদের পক্ষে মামলা করেছে, যার ওপর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে একটি ফেডারেল বিচারক অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
এছাড়াও ট্রাম্প প্রশাসন এমন নীতিমালা প্রস্তাব করেছে, যেখানে ট্রান্সজেন্ডার কিশোর-কিশোরীদের নির্দিষ্ট ধরনের চিকিৎসাসেবা সীমিত করার কথা বলা হয়েছে, এবং ট্রান্সজেন্ডার নারীদের মেয়েদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন