বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
সিরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারআ। বুধবার সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ সিরিয়ার আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে ওঠার পথে একটি সম্ভাব্য মোড়বদলের ইঙ্গিত দিয়েছে।
বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (GCC) নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের ফাঁকে। সিরিয়ার নতুন নেতা আল-শারআ, যিনি একসময় যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় ছিলেন এবং যার মাথার দাম ১০ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করা হয়েছিল, তিনিই এখন দেশের হাল ধরেছেন।
ট্রাম্প আল-শারআকে প্রশংসা করে সাংবাদিকদের বলেন, “তাঁর অতীত শক্তিশালী, লড়াকু এবং দারুণ। তিনি এক তরুণ, আকর্ষণীয় ও দৃঢ় নেতৃত্বের অধিকারী। আমি মনে করি, তিনি দেশের স্থিতিশীলতা ধরে রাখার ভালো সম্ভাবনা রাখেন।”
আল-শারআ, যিনি আগে “আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি” ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন, ছিলেন আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ এবং ইরাক যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী যুদ্ধে অংশ নেন। একসময় তিনি মার্কিন বাহিনীর হাতে বন্দিও ছিলেন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে যাচ্ছেন। সেই ঘোষণায় মঙ্গলবার রাতেই সিরিয়ায় উদযাপন শুরু হয়—মানুষ রাস্তায় নেমে আসে, আতশবাজি ফোটায় এবং নতুন সিরীয় পতাকা উড়ায়।
ট্রাম্প বলেন, “নিষেধাজ্ঞাগুলো খুবই কঠিন ছিল। এখন আমি তা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিচ্ছি, যেন তারা আবার উঠে দাঁড়াতে পারে।” তিনি আরও বলেন, আল-শারআ তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে সিরিয়া আব্রাহাম চুক্তিতে যুক্ত হবে এবং একসময় ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে।
তবে ইসরায়েল এই সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আগেই ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছিলেন সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা না তুলতে। সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বের ইসলামপন্থী অতীত এবং উত্তরের সীমান্তে নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে ইসরায়েলের উদ্বেগ রয়েছে।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কুর্দি বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত ৯ হাজার আইএস বন্দির কারাগারগুলো সিরীয় সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব। এটি মার্কিন সেনাবাহিনীর সিরিয়া থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ইঙ্গিত বলেও ধরা হচ্ছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই বৈঠক ছিল সিরীয় জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার আমাদের জন্য স্থিতিশীলতা, আত্মনির্ভরতা এবং জাতীয় পুনর্গঠনের একটি বাস্তব সুযোগ এনে দেবে।”
১৯৭৯ সাল থেকে সন্ত্রাসে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কালো তালিকাভুক্ত সিরিয়া এখন সেই অধ্যায় থেকে বেরিয়ে নতুন পথে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
এই বৈঠক ২০০০ সালে হাফেজ আল-আসাদের সঙ্গে বিল ক্লিনটনের বৈঠকের পর প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও সিরীয় রাষ্ট্রপ্রধানের সম্মুখীন হওয়ার ঘটনা। সিরিয়া এখন অপেক্ষা করছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের নতুন এক সম্ভাবনার।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন