জর্জিয়ায় ব্রেইন-ডেড নারীর গর্ভে শিশুর জন্ম
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ব্রেইন-ডেড ঘোষণা পাওয়া এক নারীর গর্ভে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে, জানিয়েছেন তার মা। রাজ্যের কঠোর গর্ভপাতবিরোধী আইন অনুযায়ী ওই নারীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ৩১ বছর বয়সী নার্স আদ্রিয়ানা স্মিথের শিশুপুত্র ‘চ্যান্স’ শুক্রবার প্রি-ম্যাচিউর অবস্থায় জন্ম নেয়। শিশুটি এখন নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (NICU) রাখা হয়েছে।
শিশুটির ওজন মাত্র ১ পাউন্ড ১৩ আউন্স (প্রায় ৮০০ গ্রাম), তবে ডাক্তাররা বলছেন, সে ভালো থাকবে বলে আশা করা যায়। আদ্রিয়ানার মা এপ্রিল নিউকার্ক জানান, “ও এখন লড়ছে। আমরা শুধু তার জন্য সবার দোয়া চাই।” তিনি বলেন, তার মেয়েকে মঙ্গলবার লাইফ সাপোর্ট থেকে সরানো হবে। “আমি তার মা। আমার মেয়ের উচিত ছিল আমাকে কবর দেওয়া, উল্টোটা নয়।”
আদ্রিয়ানা ফেব্রুয়ারিতে তীব্র মাথাব্যথা নিয়ে প্রথম হাসপাতালে যান এবং ওষুধ দিয়ে বাসায় পাঠানো হয়। পরদিন সকালে তিনি গ্যাসপ করতে করতে জেগে ওঠেন। পরে এমরি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তার মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছে এবং তিনি ব্রেইন-ডেড।
সেই সময় তার সন্তানের জন্মের এখনও তিন মাস বাকি ছিল। কিন্তু রাজ্যের আইন অনুযায়ী, যখন গর্ভে শিশুর হৃদস্পন্দন পাওয়া যায়, তখন গর্ভপাত বা লাইফ সাপোর্ট বন্ধ নিষিদ্ধ। পরিবারের দাবি, তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন—কিন্তু আইন তাদের সে সুযোগ দেয়নি। চিকিৎসকেরা জানান, তারা চাইলেও লাইফ সাপোর্ট সরাতে পারেননি।
আদ্রিয়ানার মা বলেন, শিশু চ্যান্স ভবিষ্যতে অন্ধ হতে পারে, হাঁটতে না-ও পারে কিংবা বাঁচতেই না-ও পারে। এই সিদ্ধান্ত পরিবারের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আইনটির পেছনে রয়েছেন জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প, যিনি ২০১৯ সালে প্রায় সম্পূর্ণ গর্ভপাত নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেন, যা ২০২২ সালে ‘রো বনাম ওয়েড’ মামলার রায় বাতিলের পর কার্যকর হয়।
হাসপাতাল ঘটনাটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে বলেছে, তারা সবসময় রোগীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের গর্ভপাত আইন নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন