মার্কিন মাটিতে ‘ট্রাম্প ফোন’ তৈরি সম্ভব কি না, উঠছে প্রশ্ন
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
৪৯৯ ডলারের গোল্ড ট্রাম্প স্মার্টফোনটি পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করা সম্ভব কি না—এ নিয়ে বিশ্লেষকরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের দাবি, ফোনটি “আমেরিকায় তৈরি”, তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে এটি “প্রায় অসম্ভব”।
জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক টিংলং ডাই বলেন, “তাদের এখনও কোনও কার্যকর **প্রোটোটাইপই নেই। একে অলৌকিক কিছু না হলে সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, “এই কাজের জন্য প্রয়োজন অর্থনৈতিক স্কেল, টেকসই চাহিদা ও প্রযুক্তি অবকাঠামো— যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রে এই খাতে এখনও তৈরি হয়নি।”
বিশ্লেষক লিও গেবি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে এখনও স্মার্টফোন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় হাই-টেক সাপ্লাই চেইন গড়ে ওঠেনি। তাই আগস্টে ফোনটি বাজারে ছাড়ার সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ দেশীয় উৎপাদন সম্ভব নয়।” তবে তিনি জানান, “দেশে উৎপাদন নয়, বিদেশি যন্ত্রাংশ এনে যুক্তরাষ্ট্রে সংযোজন করা হতে পারে—এই পথে ‘মেইড ইন আমেরিকা’ দাবি করা সম্ভব।”
এটি হবে ‘T1’ নামে পরিচিত ট্রাম্প ফোন, যার সঙ্গে থাকবে একটি মোবাইল সার্ভিস—মাসিক ফি $47.45। সংখ্যাটি ট্রাম্পের ৪৭তম এবং ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রতীক। তবে ফোন তৈরির দায়িত্বে কোন কোম্পানি আছে বা মোবাইল সার্ভিস কে পরিচালনা করবে—সে বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য জানায়নি ট্রাম্প অর্গানাইজেশন।
ট্রাম্প পরিবার জানিয়েছে, ব্যবসায়িক স্বার্থ বর্তমানে ট্রাস্টে রাখা হয়েছে, যা তার সন্তানরা পরিচালনা করছে। তবে নাগরিক অধিকার সংস্থা CREW-এর যোগাযোগ পরিচালক মেগান ফকনার বলেন, “ট্রাম্প পরিবার অফিসে থেকেও ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার নতুন পথ তৈরি করেছে—এটি অসাধু ও উদ্বেগজনক।”
তিনি আরও বলেন, এই ব্যবসা কতটা নৈতিক, এবং এটি ট্রাম্প নীতিনির্ধারণে প্রভাব ফেলবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ এই ফোন কিনে হয়তো রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতে পারেন বলেও আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
এরই মধ্যে ট্রাম্প অ্যাপল সিইও টিম কুককে চাপ দিচ্ছেন, যেন আইফোনও যুক্তরাষ্ট্রেই তৈরি হয়। গত মাসে ট্রাম্প হুমকি দেন, যেসব আইফোন আমেরিকায় তৈরি নয়, সেগুলোর ওপর কমপক্ষে ২৫% শুল্ক বসানো হবে।
ফোন ও সার্ভিস ঘোষণায় ট্রাম্প অর্গানাইজেশন বলেছে, “কঠোর পরিশ্রমী আমেরিকানরা এমন একটি ওয়্যারলেস সার্ভিসের যোগ্য, যা সাশ্রয়ী, তাদের মূল্যবোধকে সম্মান করে এবং নির্ভরযোগ্য।”
তারা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে সেনাবাহিনীতে কর্মরত সদস্যদের পরিবারের জন্য থাকবে ডিসকাউন্টেড আন্তর্জাতিক কল সুবিধা। গ্রাহক সেবাকর্মীদেরও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ফোনটি ইতিমধ্যে প্রি-অর্ডারে পাওয়া যাচ্ছে, তবে এখনও কোনও বিস্তারিত কার্যকর তথ্য পাওয়া যায়নি—না নির্মাতা কোম্পানির নাম, না কোনো নীতিনৈতিক প্রশ্নের জবাব। প্রযুক্তি মহলে প্রশ্ন রয়ে গেছে: এই ‘ট্রাম্প ফোন’ সত্যিই আমেরিকায় তৈরি? নাকি আরেকটি রাজনৈতিক প্রচারণা মাত্র?
এলএবাংলাটাইমস/ ওএম
শেয়ার করুন