৩৫ বছর অপেক্ষার অবসান বুঝি এমনই হয়
চলতি মৌসুমের আগে লিভারপুল তাদের সমর্থকদের সামনে সবশেষ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা উদযাপন করেছিল ১৯৯০ সালে। ৩০ বছর পর ২০১৯-২০ মৌসুমে শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল দলটি। তবে সেসময় বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি থাকায় নিজেদের সমর্থকদের নিয়ে শিরোপা উদযাপন করতে পারেনি দ্য রেডর্সরা। তা নিয়ে আক্ষেপও করেছিলেন মোহাম্মদ সালাহরা। তবে চলতি মৌসুম শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর যেন ৩৫ বছরের আক্ষেপ মিটিয়ে নিলেন লিভারপুলের সমর্থকরা। তাদের বাঁধভাঙা উল্লাস এবং গগনবিদারী চিৎকারে অ্যানফিল্ডে সৃষ্টি হয় মৃদু ভূমিকম্প।
গেল মাসের ২৭ তারিখ অ্যানফিল্ডে টটেনহ্যামের বিপক্ষে মাঠে নামে লিভারপুল। প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিততে হলে সহজ সমীকরণ ছিল দ্য রেডর্সদের সামনে। ম্যাচটিতে হার এড়ালে শিরোপা নিশ্চিত করবে আর্নে স্লটের শিষ্যরা। তাই সেদিন অ্যানফিল্ডে শিরোপা উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলেন লিভারপুল সমর্থকরা। ম্যাচটিতে টটেনহ্যামকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেছিল লিভারপুল। শিরোপা জয়ের এক সপ্তাহ কেটে গেলও এখনো কাটেনি সেই রেশ। শিরোপার মতোই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও রয়েছে দ্য রেডর্সদের দখলে।
ব্লিংকফায়ার অ্যানালিটিক্সে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, টটেনহ্যামের বিপক্ষে লিভারপুলের লিগ শিরোপা জয়ের পর গেল রোববার এবং সোমবার ৭ কোটি ১০ লাখের বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিভারপুলের শিরোপা জয়ের উদযাপন মুহূর্ত শেয়ার করেছেন। যা প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ইম্প্রেশন। এমনকি ক্লাব চ্যানেলগুলোতে ১.১ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ম্যাচটিতে নজরে রেখেছিল।
কিন্তু সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে ম্যাচের দিন লিভারপুল সমর্থকদের পাগলাটে উদযাপন নিয়ে। সেদিন অ্যানফিল্ডে উপস্থিত ছিলেন ৬০ হাজার ৪১৫ জন সমর্থক। ম্যাচটিতে সমর্থকদের উদযাপন এবং গগনবিদারী চিৎকারে অ্যানফিল্ড কতটা কম্পন সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে গবেষণা করেছে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। গবেষণায় তারা ভূ-বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্প শনাক্তকরণের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জাম ব্যবহার করেছেন। সেখানে ধরা পড়ে অবাক করার মতো কিছু তথ্য।
লুইস দিয়াজের গোলের পর অ্যানফিল্ডে ০.৬৪ মাত্রার কম্পন সৃষ্টি হয়। এরপর অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের গোলের পর ১.৭৪ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়। যা ছিল সর্বোচ্চ কম্পন। এছাড়াও মোহাম্মদ সালাহর গোলের পর কম্পনের মাত্রা ছিল ১.৬০, যা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কোডি গ্যাকপোর গোলের পর ১.০৩ ও ডেসটিনি উডোগির আত্মঘাতী গোলের পর অ্যানফিল্ডে ১.৩৫ মাত্রার কম্পন সৃষ্টি হয়েছে।
এই নিয়ে ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপের একজন ভূকম্পবিদ ক্যালাম হ্যারিসন বলেন যে, ভক্তদের দ্বারা অনুভূত কম্পনের পরিমাপ করার জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, 'গত কয়েক বছর ধরে বেশ কয়েকটি কনসার্ট এবং ক্রীড়া আসরে এই আকারের ভূমিকম্পের সংকেত লক্ষ্য করা গেছে, যার মধ্যে গত বছর টেলর সুইফটের কনসার্টও রয়েছে। এই ইভেন্টগুলোতে নির্গত শক্তি একটি ছোট ভূমিকম্পের সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে, তবে এটি মানুষের লাফিয়ে লাফিয়ে বা নাচের মাধ্যমে উৎপন্ন হয় প্রকৃত ভূমিকম্পের সৃষ্টি থেকে নয়।'
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন