বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
শুধু ফুল দিয়ে নয়, মন থেকে বিশ্বাস করতে হবে: মাশরাফি
ব্যাটে-বলে ঝড় তুলে দেশকে আনন্দে ভাসান তারা। বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিনিধিত্ব করেন বাংলাদেশের হয়ে। বুক চিতিয়ে লড়েন চেনা-অচেনা, দুর্বল-শক্তিশালী যে কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। তাই অনেকের সংজ্ঞাতে তারা একেকজন যোদ্ধা। এমন যোদ্ধা বাংলাদেশের ইতিহাসে আরো আছেন।
তবে তারা ব্যাটে-বলে লড়েননি। তারা লড়েছেন কালি, কলম, ব্যানার, ফেস্টুন আর ঝাঁঝাঁলো স্লোগান নিয়ে। ৬৪ বছর আগের সেই লড়াই ছিল ভাষার জন্য। একটাই দাবী- রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই। এমন দাবীর মুখে ঝরেছে অনেক রক্ত। রক্তাক্ত হয়েছে ঢাকার রাজপথ। তবু থামেনি লড়াই। অবশেষে প্রাণের মিনিময়ে মিলেছে প্রিয় বাংলা ভাষা।
এরপর সময় পাড়ি দিয়েছে অনেকটা পথ। কিন্তু সেইসব যোদ্ধারা আরো আজও অমর-চিরযৌবন। আর সেইসব যোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের যোদ্ধারা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ শে ফেব্রুয়ারি আসতেই মাশরাফিবাহিনী ছুটে গেলো ভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে যাওয়া শহীদদের সম্মান জানাতে।
সেনাপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা অবশ্য শুধু এই একটি দিনেই পড়ে থাকছেন না। তার ভাবনাও শুধু ফুল দেয়া কেন্দ্রিক নয়। মিরপুর ন্যাশনাল বাংলা হাই স্কুলের শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে মাশরাফি জানালেন শুধু ফুল দেয়া গুরুত্বপূর্ণ নয়, মনের থেকে বিশ্বাস করতে হবে।
তবে খেলার সাথে এই দিনটাকে মেলাচ্ছেন না তিনি, ‘এখানে খেলার সাথে আসলে কোনোই মিল নেই। খেলা একটা জিনিস আর পুরো জাতি আজ যে এক হয়ে যাচ্ছে, তবে ফুল দেয়াটাই শুধু যে গুরুত্বপূর্ণ সেটা নয়। মনের থেকে বিশ্বাস করাটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার কাছে মনেহয়। আমরা যে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, সেটা যে ফুল দিয়ে শেষ হয়ে যাওয়ার চেয়ে মনের ভেতর থাকাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
এশিয়া কাপকে সামনে রেখে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ। রোববারও ছিল অনুশীলন। তবে অনুশীলনের আগে ভাষা শহীদদের স্মরণ করেছেন মাশরাফিরা। এ নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বলছেন, ‘অবশ্যই ভালো লাগছে। আর অবশ্যই এটা বাংলাদেশের জাতির জন্য বড়দিন। সেই জায়গা থেকেই অনুশীলনের আগে এসে শহীদ মিনারে ফুল দেয়া। আর এখন আমাদের কাজ হচ্ছে মাঠে নামা এবং সেরা সম্ভাব্য প্রস্তুতি নেয়া।’
স্বভাবতই মাশরাফিদের প্রথম পছন্দ বাংলা ভাষা। তবে ক্রিকেট খেলেন বলে ইংরেজিটা বলতেই হয়। এ নিয়ে মাশরাফি বলছেন, ‘ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে ইংরেজির প্রয়োগটা একটু বেশি থাকে। কিন্তু আমার কাছে মনেহয় আমরা যারা আছি, বাঙ্গালি আছি, বাংলা ভাষাটা সবার ভেতরেই থাকা উচিত। প্রথমে বাংলা ভাষাটাকেই প্রাধান্য দেয়া উচিত সবার। যেখানেই থাকি আমরা চাই বাংলা ভাষায় কথা বলতে। আমাদের প্রথম পছন্দ অবশ্যই বাংলা ভাষা।’
তবে ইংরেজি বলাটা বড় কিছু এমন মনে করেন না তিনি, ‘আমি মনে করি না যে ইংরেজি ভাষায় কথা বলা বিরাট ব্যাপার কিংবা ইংরেজি ভাষায় আমাকে কথা বলতেই হবে। বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারা একজন বাঙ্গালি হিসেবে সবচেয়ে বড় আনন্দের। আমরা সেটাই বিশ্বাস করি। বিশেষ করে আমি।’
শেয়ার করুন