আপডেট :

        প্রকাশ পেল তুফান সিনেমার ফার্স্টলুক

        নিউইয়র্কে রাস্তায় আচমকা নারীদের ঘুষি মারছে অজ্ঞাতরা

        যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

        পাপারাজ্জিকে ঘুষি: টেলর সুইফটের বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

        দশ বছরে ৬৪ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু, সাগরেই ৩৬ হাজার

        বাল্টিমোরে সেতুধসে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের সব ক্রু ভারতীয়

        কে হচ্ছেন নতুন বন্ড

        জাহাজের ধাক্কায় বাল্টিমোরে সেতু ধসের সর্বশেষ

        শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের ভালো করা উচিত: সাকিব

        রিকশাওয়ালাদের গেম শো

        আর্জেন্টিনায় ৭০ হাজার সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত

        সর্বজনীন পেনশন স্কীম কার্যক্রমের উদ্বোধন

        ভুটানের রাজাকে গার্ড অব অনার ও বিদায়ী সংবর্ধনা

        গাজায় মানবিক বিপর্যয় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে পরিণত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান

        ভুয়া পিতৃপরিচয় দিয়ে বৃদ্ধের সঙ্গে প্রতারণা

        বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভূয়সী প্রশংসায় ডোনাল্ড লু

        মস্কোতে আইএসের হামলা চালানো, বিশ্বাস হচ্ছে না মারিয়া জাখারোভার

        নগরীর অচল ১১০টি সিসি ক্যামেরা হল সচল

        একনেকে ১১ প্রকল্পের অনুমোদন

        স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে সিকৃবিতে আলোচনা সভা

বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে: এবিবিএ’র ১০ম বিজনেস সামিটে বক্তারা

বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে: এবিবিএ’র ১০ম বিজনেস সামিটে বক্তারা

‘প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা আর বাংলাদেশ ও আমেরিকার মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করার’ মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হলো আমেরিকান বাংলাদেশী বিজনেস অ্যালায়েন্স (এবিবিএ)-এর ১০তম ‘বিজনেস সামিট’। সামিটের আলোচনায় দেশ ও প্রবাসে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সমস্যা ও সম্ভানা এবং অর্থ লেন-দেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সরকারী উদ্যোগ এবং সমাধানের পথ প্রভৃতি বিষয় আলোচনায় উঠে আসে। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ আমাদের সবার। ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে আরো শক্তিশালী করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন বিনিয়োগের পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রেই সততা আর দূর্নীতিমুক্ত প্রশাসন। 

নিউইয়র্ক সিটির লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের সদস্য সেলিম উদ্দিন, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মহিউদ্দিন, এসবিএসি ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ও সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারম্যান শেকিল চৌধুরী। এছাড়াও গেষ্ট অব অনার ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান নাসির। প্রবাসের শীর্ষ স্থানীয় বাংলাদেশী ব্যবসায়ীসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ‘বিজনেস সামিট’-এ অংশ নেন।

এবিবিএ’র ১০তম ‘বিজনেস সামিট’ আয়োজক কমিটির কনভেনর মইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠান মঞ্চে ছিলেন বিজনেস সামিট-এর এবিবিএ’র চেয়ারম্যান ও এবিএইচ ফার্মাসিউটিক্যাল-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, মেম্বার সেক্রেটারী ইয়াকুব এ খান সিপিএ, এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান ও জেবিবিএ’র সভাপতি শাহ নেওয়াজ, চিফ কো-অর্ডিনেটর ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, কো-কনভেনর এজে বাবুল, ফোবানা-২০১৯ এর আহবায়ক ও বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট নাসির আলী খান পল, কমিউনিটি বোর্ডের ভাইস চেয়ার এন মজুমদার, রেজাউল করিম চৌধুরী, জেবিবিএ’র সাবেক সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ জিকো ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খান ও এটর্নী হাসানুজ্জামান মালিক।  

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ইমাম কাজী কাইয়্যুম, গীতা থেকে পাঠ করেন তারেক গায়েন এবং বাইবেল থেকে পাঠ করেন টমাস দুলু রায়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন এক্সিকিউটিভ কো-কনভেনর মোহাম্মদ বিলাল চৌধুরী।

এবিবিএ’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মরহুম সাঈদ রহমান মান্নানের বিদেহী আতœার শান্তি কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য কমিউনিটির অনুষ্ঠানে এবিবিএ’র পক্ষ থেকে ৫জনকে ক্রেস্ট প্রদান এবং এবিবিএ’র ১০ বছর উপলক্ষে কেক কাটা হয়। ক্রেস্টপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন, নাঈমা খান, এস এম আমজাদ হোসেন, মাহতাবুর রহমান নাসিম বসির খান প্রমুখ।   

অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ ছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এলিজাবেথ ক্রাউলী, যৌথভাবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন টাইম টেলিভিশন-এর সাবেক নিউজ প্রেজান্টার শামসুন্নাহার নিম্মি ও বিজনেস সামিট-এর জয়েন্ট মেম্বার সেক্রেটারী এ এফ মিসবাউজ্জামান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে। তারপর অনেকে ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, ভালো আর সৎ ব্যবসায়ীদের কোন সমস্যা নেই। একথা সত্য যে, বিশ্বব্যাপী মানি লন্ডারিং-এর কারণে দেশ থেকে অর্থ লেনদেনে কড়াকড়ি চলছে। তবে বৈধ পথে অর্থ লেন-দেনে কোন সমস্যা নেই। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়ে অনেক কিছুই করার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, দেশে ক্যাপিটাল কন্ট্রোল না হওয়া পর্যন্ত সহজে দেশ থেকে অর্ত প্রবাসে আনা সহজ হবে না। প্রবাস থেকে দেশে প্রপার্টি নিয়ন্ত্রণ করাও সহজ নয়। তিনি বলেন, সরকার দেশে ১০০ ইকোনমিক জোন গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এসব জোনে প্রবাসীরা তাদের মতো জোন তৈরী করতে পারেন। তবে এজন্য প্রবাসীদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকতে হবে। তবে এসব জোন প্রতিষ্ঠায় সুবিধা-অসুবিধাও আছে। এজন্য জেনেশুনেই বিনিয়োগ করতে হবে। সরকার বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি (বিডিআইএ)-কে ঢেলে সাজিয়েছে। তিনি বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা অতীতের ১০/২০ বছরের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে।

কোটা প্রসঙ্গে ড. মশিউর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ব্যক্তিগতভাবে আমার দূর্বলতা রয়েছে তবে দেশ ও প্রবাসের জন্য কোটা থাকবে না প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতি থাকবে তা নতুন প্রজন্মের কাছে জানতে হবে, বিষয়টি ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে। 

ড. মশিউর রহমান বলেন, প্রবাসীদের কথা প্রধানমন্ত্রীরই কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের ব্যাপারে অবগত বলেই অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপ কমিটির সদস্যদের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানের পথ খুজতে বলেছেন। তিনি দেশে অর্থনীতিকে আরো সমৃদ্ধ করতে দেশে-প্রবাসে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

জাতীয় সংসদের সদস্য সেলিম উদ্দিন বলেন, আমি নিজেও এক সময় প্রবাসী ছিলাম। তাই প্রবাসীদের ভালো-মন্দ সম্পর্কে আমি অবহিত। তিনি বলেন, দেশকে ভালোবেসে রাজনীতি শুরু করেছি। আমার বিশ্বান এবিবিএ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবসায়ীক সুসম্পর্ক জোরদারে সেতু হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে প্রবাসীদের স্বার্থে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি গঠনের চেষ্টা করছি। আমরা ইতিমধ্যেই ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু করেছি এবং এই সার্ভিসের মাধ্যমে প্রবাসীরা উপকৃত হবে, দেশে ফিরে বিনিয়োগ করবেন। 

এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বাঙলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। কথা বলে ‘মিরাকল কামস ফ্রম হ্যাভেন’, আমি বলি মিরাকল স্ট্যান্ড অন বাংলাদেশ’। দরকার সবার ঐক্য আর আন্তরিকতা। তিনি বলেন, দেশের সিভিল অ্যাভিয়েশন, কাস্টমস আর বিমান এই তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় থাকলে মার্চেন্ডাই আদমদানী-রপ্তানী সহজ হবে, এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের পরে শাক-সবজী ব্যবসায় বাংলাদেশ ভালো করছে। তিনি প্রবাস ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সাহসী হয়ে সততার সাথে ব্যবসা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদেরকে ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন সফল করতে হবে।  

এসবিএসি ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এবিবিএ যোগসূত্র হিসেবে কাজ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবশে সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায় বিনিয়োগের নানা সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের উদ্যোগের ফলে বিভিন্ন জট খুলে যাচ্ছে। তারপরও প্রবাসীদের বিনিয়োগের ব্যাপারে নানা সমস্যা রয়েছে। এজন্য তিনি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন, মূলত: দূর্নীতি আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার জন্যই প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে উৎসাহিত হচ্ছেন না। তিনি প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বলেন, আমরা সরকারকে ট্যাক্স দিয়েই ব্যবসা করতে চাই। তবে ব্যবসা করা বা বিনিয়োগের কর্মকান্ড সহজকরণ করতে হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে সহজেই দেশ-বিদেশে অর্থ লেনদেন করতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে হবে। সৎ ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের সুনজর রাখতে হবে।

সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারম্যান শেকিল চৌধুরী বলেন, প্রবাসীরা দেশের জন্য অনেক কিছুই করছেন, যা প্রশংসার দাবী রাখে। তিনি বলেন, সেন্টার ফর এনআরবি’র প্রবাসীদের সমস্যা নিয়ে কাজ করছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রবাসীদের সমস্যা আর সৌদি আরবে বসবাসকারী প্রবাসীদের সমস্যা এক নয়। কিন্তু সবার রুট হচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ঢাকায় বিমানবন্দর এখন অনেক সহজ হলেও অনেক সমস্যা রয়েছে। তিনি প্রবাসীদের সমস্যা আর উদ্যেগের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব সরকারের কাছে পেশ করার অহ্বান জানিয়ে বলেন, ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, ইকোমিক জোন প্রতিষ্ঠা, অনলাইনে ভোটার হওয়া, জাতীয় আইডি কার্ড প্রভৃতি প্রবাসীদের অন্যতম দাবী।  

শিল্পপতি মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান নাসির তার বক্তব্যে প্রবাসীদেরকে বৈধ পথে দেশে অর্থ প্রেরণ করে সরকারের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশে ব্যাংক ইন্টারেস্ট সিঙ্গেল ডিজিডে চলে এসেছে। ওয়েজওর্নার বন্ড ক্রয়ে লাভবান হওয়া সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ‘রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড’ ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৩৩ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ফান্ড রয়েছ, এরমধ্যে ১৪ বিলিয়ন ডরার প্রবাসীদের। তাই প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা দরকার। তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে প্রবাসী। প্রবাসীদের স্বার্থে সরকারের সাথে কাজ করছি। প্রবাসীতের জন্য পৃথক ইকোনমিক জোন দরকার, বিনিয়োগের জন্য পৃথক স্কীম দরকারের পাশাপাশি প্রবাসী নতুন প্রজন্মের জন্য চাকুরীতে কোটার দাবী করেন।

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ স্বর্ণের দেশ। বিশ্বের কোন দেশের চেয়ে বাংলাদেশ কোন অংশেই কম নয়। তবে বাংলাদেশের অপরার সৌন্দর্য আর সম্ভাবনা প্রস্ফুটিত করতে প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। তিনি প্রবাসীদের বিনিয়োগের জন্য ‘ইপিজেড’ এর মতো পৃথক জোন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যোগাযাগ ব্যবস্থা আরো বৃদ্ধি ও উন্নত এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার দাবী জানান।

ইয়াকুব এ খান সিপিএ তার বক্তব্যে এবিবিএ’র সাফল্য কামনা করে বলেন, সংগঠনটি বাংলাদেশী আর আমেরিকান ব্যবসায়ীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরী করতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে। তিনি দেশ ও প্রবাসের মধ্যে ব্যবসা প্রবাসের লক্ষ্যে আইনী বিষয়গুলো জানা এবং বৈধভাবে সবকিছু করার জন্য সংশ্লিস্টদের প্রতি আহ্বান জানান। 

শাহ নেওয়াজ তার বক্তব্যে এবিবিএ’র সফলতা কামনা করেন।

ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার উপস্থিত অতিথি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন, আমরা সবাই মিলে এবিবিএ’র মাধ্যমে প্রবাসের ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ করে দেশ ও প্রবাসে ব্যবসায়ীক সমস্যা সমাধানের পথ পাবো বলে বিশ্বাস করি। 
এজে বাবুল বলেন, চীন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা সহজেই আমেরিকায় অর্থ এনে বিনিয়োগ করতে পারেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন। তারা তাদের সম্পদের বিনিময়ে ঋণ নিতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমরা পারি না। এজন্য তিনি সরকারের দৃষ্টি কামনা করেন। 

নার্গিস আহমেদ এবিবিএ’র অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে বলেন, এমন অনুষ্ঠান দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যকার সম্পর্ককে আরো জোরদার করবে, সেতুবন্ধন তৈরী করবে। তবে এজন্য পারষ্পারিক সহযোগিতা আর সহমর্মিতা থাকতে হবে। প্রসংগত তিনি আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের লেবার ডে উকেন্ডে নিউইয়র্কের নাসাউ কলিসিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য ফোবানা সম্মেলন-২০১৯ এ সকল প্রবাসীর সহযোগিতা কামানা এবং সবাইকে থাকার আহ্বান জানান। 

নাসির আলী খান পল তার বক্তব্যে দীর্ঘ প্রবাস জীবনে দেশ ও প্রবাসের নানা অভিজ্ঞতার কথা সংক্ষেপে তুলে ধরে বলেন, প্রবাসীদের নানা অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত হয়ে বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু দেশে গিয়ে তারা সব ভুলে যান। তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশে যাওয়ার পর নানা সমস্যায় পড়েন। ঢাকা বিমানবন্দর থেকেই শুরু প্রবাসীদের নানা জুলুম-যন্ত্রনা। আর দূর্নীতির কারণে প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ করতে চান না। তিনি এসব সমস্যার সমাধান কামনা করে বলেন, প্রবাসীরা সম্মানের সাথে দেশে ফিরতে চান, দেশকে দিতে চান।

এন মজুমদার তার বক্তব্যে প্রবাসে বিনিয়োগের প্রথম বাধা হিসেবে দেশ থেকে সহজে অর্থ না আনার কথা উল্লেখ করে বলেন,  সুযোগ আর পরিবেশ পেলে আমরা প্রবাসীরা অর্থে বাংলাদেশ ছয়লাব করে দিতে পারি। ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বেশী বেশী শিক্ষামূলক সেমিনার আয়োজন দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন এবং নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশমুখী করার উদ্যোগ নেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

রেজাউল করিম চৌধুরী তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নানা প্রশংসা এবং তাকে সরকারের একজন দায়িত্ত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। 

জাকারিয়া মাসুদ জিকো  বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। গার্মেন্টস, ফার্মাসিউটিক্যাল প্রভৃতি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। যাতে দেশের চেয়ে বাংলাদেশেই অনেক ভালো করা যাবে।
তারেক হাসান খান বলেন, এবিবিএ প্রবাসের সকল ব্যবসায়ীদের প্লাটফর্ম। এবিবিএ সকল ব্যবসায়ীদের মধ্যে সেতু বন্ধুন তৈরী করবে। বিগত ৯ বছর ধরে এবিবিএ ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বিশেষ করে বাংলাদেশ ও সরকারের সাথে যোগাযোগ রেখে দেশে বিনিয়োগের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। যার ফলে অনেক ব্যবসায়ী এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছেন।

এটর্নী হাসানুজ্জামান মালিক বলেন, ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র আসার পর নানা বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে এগিয়ে চলছি। তিনি বলেন, এগিয়ে যেতে হলে বাধা আসবেই। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, পেশাগতভাবে আন্তরিকতার সাথেই সবাইকে সেবা দিতে চাই।  

কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এলিজাবেথ ক্রাউলী বলেন, নিউইয়র্ক সিটির মধ্যে কুইন্স অন্যতম। কুইন্সে বাংলাদেশীর সংখ্যা বাড়ছে আর সকল কমিউনিটির কারণে কুইন্স শক্তিশালী হচ্ছে। সবাই মিলে কুইন্স-কে আরো শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, সিটি প্রশাসন মাইনরিটি বিজনেসম্যানদের শক্তিশালী করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

এবিবিএ’র ১০তম ‘বিজনেস সামিট’ আয়োজক কমিটির কনভেনর মইনুল ইসলামের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সমাপ্ত হয়। এর আগে ‘বিজনেস সামিট’ এর প্রথম পর্বে ছিলো সেমিনার। এতে বক্তব্য রাখেন এটর্নী ব্রুশ ফিসার, ফামাক্যাশ-এর চেয়ারম্যান ড. সাইফুল খন্দকার, এন মজুমদারর, ইয়াকুব এ খান সিপিও প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে ছিলো সঙ্গীতানুষ্ঠান। এতে শিল্পী রানো নেওয়াজ সহ প্রবাসের শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সঙ্গীতানুষ্ঠানের মাঝেই অতিথিদের সাথে নিয়ে এবিবিএ’র নেতৃবৃন্দ কেক কাটেন।

উল্লেখ্য, সন্ধ্যা ৬টার অনুষ্ঠান শুরু হয় রাত সাড়ে ৮টার দিকে। শেষ হয় রাত ১১টার দিকে। সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যাক প্রবাসী বাংলাদেশী অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।



এলএবাংলাটাইমস/এনওয়াই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত